হরিসাধন দাশগুপ্ত

ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক

হরিসাধন দাশগুপ্ত (১৯২৩–১৯ আগস্ট ১৯৯৬) ছিলেন কলকাতার একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক যিনি বিংশ। শতকের পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে অত্যন্ত সফলতা লাভ করেন। সার্থক তথ্যচিত্র রচয়িতা হিসাবে তাঁর বিশেষ খ্যাতি। বাংলার  জনজীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির সার্থক রূপায়ণে অত্যন্ত পারদর্শী ছিলেন।

হরিসাধন দাশগুপ্ত
জন্ম১৯২৩
মৃত্যু১৯ আগস্ট ১৯৯৬ (বয়স ৭২-৭৩)
জাতীয়তাভারতীয়
পেশাচলচ্চিত্র পরিচালক
কর্মজীবন১৯৪৮ - ১৯৮৪
পরিচিতির কারণতথ্যচিত্র নির্মাণ

হরিসাধন দাশগুপ্তর জন্ম বৃটিশ ভারতের কলকাতায়। পিতা কলকাতা ট্রপিক্যাল স্কুলের ডিরেক্টর ডা বিরাজমোহন দাশগুপ্ত। [] হরিসাধন অ্যাকাউন্টেসি পড়তে প্রথমে ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া এবং পরে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলস - এ চলচ্চিত্র নির্মাণ নিয়ে পড়াশোনার করেন। [] একসময় তিনি হলিউডের প্রখ্যাত প্রযোজক আরভিং পিচেলের কাছে হাতে কলমে শিক্ষা নেন। শিক্ষানবিশী শেষ করার পর কলকাতায় ফিরে আসেন এবং তথ্যচিত্র তৈরিতে মনোনিবেশ করেন।

দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি অসংখ্য দীর্ঘ ও স্বল্পদৈর্ঘের তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য তথ্যচিত্রগুলি হল -  “পাঁচথুপি: এ ভিলেজ ইন ওয়েস্টবেঙ্গল” (১৯৫৫), “ প্যানোরামা অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল”(১৯৬১), "গ্লিম্পসেস অব ইন্ডিয়া"(১৯৬৫) "দ্য অটোমোবাইল ইন্ড্রাস্ট্রি ইন ইন্ডিয়া" (১৯৬৯) " দ্য মালাবার স্টোরি", "কোনারক" প্রভৃতি। [] তিনি ভারতের সবচেয়ে বড়ো বেসরকারি কোম্পানি  টাটা স্টিলের উপর নির্মিত তথ্যচিত্র- "দ্য স্টোরি অব টাটা স্টিল"-এর জন্য অতি পরিচিতি লাভ করেন।   [] তার বেশির ভাগ তথ্যচিত্রের সঙ্গে এটারও স্ক্রিপ্ট সত্যজিৎ রায় রচনা করেন। তিনি তাঁর দীর্ঘ কর্মজীবনে কলকাতার চলচ্চিত্র জগতে নবজাগরণে জড়িত  বহু প্রতিভাবান মানুষের সঙ্গে কাজ করেন। তাঁরা হলেন-  হৃষিকেশ মুখার্জি, ক্লদ রনোয়ার, জঁ রনোয়ার, রবিশঙ্কর, চিদানন্দ দাশগুপ্ত, এবং  অসিত সেন[]  ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি সত্যজিৎ রায়, চিদানন্দ দাশগুপ্ত, আর পি গুপ্ত, বংশী চন্দ্রগুপ্ত সহ অন্যান্যদের সাথে কলকাতা ফিল্ম সোসাইটির অন্যতম  সহ প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। [][]

তাঁর পরিচালিত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র দুটি হলো - "কমললতা" ও "একই অঙ্গে এত রূপ"।  []

হরিসাধন দাশগুপ্তর  স্ত্রী ছিলেন চিত্রনাট্যকার সোনালী  দাশগুপ্ত। তাঁদের সন্তান চলচ্চিত্র পরিচালক রাজা দাশগুপ্ত এবং অর্জুন। সোনালী দাশগুপ্ত ছয় বৎসরের পুত্র রাজা ও স্বামীকে ছেড়ে ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে ইটালিয়ান চলচ্চিত্র পরিচালক রোবার্তো রোসেলিনিকে বিবাহ করেন এবং এগারো মাসের শিশু অর্জুনকে  (পরবর্তীতে গিল, রোবার্তো রোসেলিনির দত্তক) নিয়ে ইটালি যান। [][][]

হরিসাধন দাশগুপ্ত ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দের ১৯শে আগস্ট শান্তি নিকেতনে পরলোক গমন করেন।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1.   অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, দ্বিতীয়  খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, জানুয়ারি   ২০১৯ পৃষ্ঠা ৪৭৫, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-২৯২-৬
  2. Harisadhan Dasgupta. ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১০ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে Bengali Vaidyas. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "vaid" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  3. Harisadhan Dasgupta. IMDB.
  4. Celluloid touch to centenary celebrations. The Telegraph.
  5. Suman Ghosh. Let’s talk about films – again! The Telegraph.
  6. Rinki Roy Bhattacharya. Remembering Sonali Dasgupta-Rossellini. Rediff.
  7. Suhrid Sankar Chattopadhyay. An Affair to Remember. Frontline.
  8. The scandal that rocked Calcutta. The Telegraph.