স্কুইড
স্কুইড (ইংরেজি: Squid) টেউথিডা (Teuthida) গোত্রীয় একপ্রকার সামুদ্রিক প্রাণী। টেউথিডা বর্গে প্রায় ৩০০ প্রজাতির স্কুইড রয়েছে। স্কুইডের অন্যান্য সেফলাপোডার মতো স্বতন্ত্র মস্তক, বাহু, ও ছদ্মবেশি আবরণ রয়েছে। স্কুইড দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম। ক্যাটলফিসের মতো স্কুইডের আটটি বাহু, ও দুইটি লম্বা জোড়বদ্ধ শুড় রয়েছে। এ সম্পর্কে যতোদূর জানা যায়—একমাত্র ব্যতিক্রমী স্কুইডটি হচ্ছে বিগফিন স্কুইড; এদের দশটি বেশ লম্বা ও চিকন বাহু রয়েছে।
স্কুইড সময়গত পরিসীমা: (at least) Late Cretaceous–Recent[১] | |
---|---|
Mastigoteuthis flammea, হুইপ-ল্যাশ স্কুইডের একটি প্রজাতি। | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Animalia |
পর্ব: | Mollusca |
শ্রেণী: | Cephalopoda |
উপশ্রেণী: | Coleoidea |
মহাবর্গ: | Decapodiformes |
বর্গ: | Teuthida A. Naef, 1916b |
Suborders | |
পুর্বপুরুষ থেকে পরিবর্তন
সম্পাদনাকালের ধারায় প্রাচীন মলাস্কা থেকে স্কুইড আরো বিস্তৃত হয়েছে। তাদের শরীর অন্তপশ্চাৎ দিক সংকুচিত হয়ে উদরপৃষ্ঠীয় দিকে সম্প্রসারিত হয়েছে। মনে করা হয়, স্কুইডের পূর্বপুরুষে পদ বিদ্যমান ছিলো, কিন্তু ক্রমশ বিবর্তনের ধারায় তাদের পা জটিল গঠন বিশিষ্ট শুড়ে পরিণত হয়েছে। এই শুড় প্রকৃতপক্ষে একটি উচ্চসংবেদী অঙ্গ, এতে মেরুদণ্ডীদের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ অগ্রসরমান চোখ আছে।
পূর্বপুরুষের শরীর আবৃতকারী শক্ত খোলক হারিয়ে গেছে। শুধুমাত্র দেহের গ্লাডিয়াস ও পেনের ক্ষেত্রেই শক্ত খোলকের অস্তিত্ত্ব বজায় আছে। পেন হচ্ছে একটি পালকাকৃতি অর্ন্তগঠন, যা স্কুইডের আবরণকে ধরে রাখতে ও পেশি সংযোগে সাহায্য করে। এটি কাইটিন (একপ্রকার বায়ো পলিমার) ধরনের বস্তু দ্বারা তৈরি।
অঙ্গসংস্থান
সম্পাদনাস্কুইডের দেহের ভর তার ম্যান্টল বা আবরণসহ ধরা হয়। এর উভয়পাশে সাঁতরানোর জন্য পাখা রয়েছে। অন্যন্য সামুদ্রিক প্রাণীর মতো স্কুইডের বেশিরভাগ প্রজাতি সমুদ্রে চলাফেলা ও গতিশীলতার জন্য এই পাখনার ওপর নির্ভরশীল নয়।
স্নায়ু তন্ত্র
সম্পাদনাপ্রজনন তন্ত্র
সম্পাদনাবাণিজ্যিক মৎস শিকার
সম্পাদনাজাতিসঙ্ঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) অনুসারে, ২০০২ সালে সর্বমোট সেফলাপোডা ধরা হয়েছিলো ৩১,৭৩,২৭২ টন (৬.৯৯৫৮৬৭×১০৯ পাউন্ড)। এর ২১,৮৯,২০৬ টন বা ৭৫.৮% ছিলো স্কুইড।[২] মৎস শিকারীরা ২০০২ সালে ১০,০০০ টনের বেশি যেসকল স্কুইডের প্রজাতি শিকার করেছিলেন, তার তালিকা নিচের টেবিলে দেওয়া হলো।
২০০২ সালে বিশ্বে স্কুইড শিকার[২] | ||||
প্রজাতি | পরিবার | প্রচলিত নাম | ধৃত টন |
শতকরা |
---|---|---|---|---|
Loligo gahi | Loliginidae | প্যাটাগোনীয় স্কুইড | ২৪,৯৭৬ | ১.১ |
Loligo pealei | Loliginidae | লঙফিন স্কুইড | ১৬,৬৮৪ | ০.৮ |
সাধারণ স্কুইড[৩] | Loliginidae | ২,২৫,৯৫৮ | ১০.৩ | |
Ommastrephes bartrami | Ommastrephidae | নিওন ফ্লাইং স্কুইড | ২২,৪৮৩ | ১.০ |
Illex argentinus | Ommastrephidae | আর্জেন্টাইন শর্টফিন স্কুইড | ৫,১১,০৮৭ | ২৩.৩ |
Dosidicus gigas | Ommastrephidae | জাম্বো ফ্লাইং স্কুইড | ৪,০৬,৩৫৬ | ১৮.৬ |
Todarodes pacificus | Ommastrephidae | জাপানি ফ্লাইং স্কুইড | ৫,০৪,৪৩৮ | ২৩.০ |
Nototoda russloani | Ommastrephidae | ওয়েলিংটন ফ্লাইং স্কুইড | ৬২,২৩৪ | ২.৮ |
স্কুইড[৩] | অন্যান্য | ৪,১৪,৯৯০ | ১৮.৬ | |
সর্বমোট | ২১,৮৯,২০৬ | ১০০.০০ |
খাদ্য হিসেবে
সম্পাদনাস্কুইডের অনেকগুলো প্রজাতি গ্রীক, চীনা, জাপানি, ইতালীয়, শ্রীলঙ্কান, থাই, ভিয়েতনামী, কোরীয়, স্পেনীয়, পর্তুগিজ, এবং ফিলিপিনো রান্নায় খুবই জনপ্রিয়।
ইংরেজিভাষী দেশগুলোতে, খাদ্য হিসেবে স্কুইড ইতালীয় শব্দ ক্যালামারি নামে পরিচিত।
স্কুইডের আলাদা আলাদা প্রজাতি সুনির্দিষ্ট কতোগুলো স্থানে অল্প পরিমাণে দেখা যায়, যা মৎস শিকারীদের দ্বারা ব্যাপকভাবে ধৃত হয়।
স্কুইডের শরীরের অভ্যন্তরে মশলার পুর দিয়ে, অতঃপর লম্বা বা গোলাকৃতি টুকরা করা হয়। বাহু, আবরণী, শুড় এগুলোও খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। স্কুইডের শুধুমাত্র যে অংশগুলো খাবার উপযোগী নয় তা হলো, ঠোঁট ও গ্লাডিয়াস (পেন)।
খাবার হিসেবে স্কুইডে প্রচুর পরিমাণ সেলেনিয়াম, ভিটামিন বি১২, এবং রিবোফ্লাভিন রয়েছে।[৪]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Tanabe, K.; Hikida, Y.; Iba, Y. (২০০৬), "Two Coleoid Jaws from the Upper Cretaceous of Hokkaido, Japan", Journal of Paleontology, 80 (1): 138–145, ডিওআই:10.1666/0022-3360(2006)080[0138:TCJFTU]2.0.CO;2
- ↑ ক খ Rodhouse, Paul G.; Rodhouse, Kenneth F.; Hattersley-Smith, Geoffrey (১৯৯৯)। "Obituaries"। Polar Record। 35 (193): 166–167। আইএসএসএন 0032-2474। ডিওআই:10.1017/s0032247400026607।
- ↑ ক খ Nei, Masatoshi (১৯৮৭-১২-৩১)। "Molecular Evolutionary Genetics"। ডিওআই:10.7312/nei-92038।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৫ অক্টোবর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ সেপ্টেম্বর ২০০৯।