সোনম শেরিং লেপচা
সোনম শেরিং লেপচা (৩ জানুয়ারি ১৯২৮ – ৩০ জুলাই ২০২০) ভারতীয় লোক সংগীত শিল্পী, গীতিকার ও সুরকার। তিনি একাধারে যেমন খ্যাতিমান সংগীতশিল্পী ছিলেন তেমনই বিশ্ববন্দিত লেপচা সংস্কৃতির ধারক, বাহক ও সংরক্ষক ছিলেন।[১]
সোনম শেরিং লেপচা | |
---|---|
জন্ম | ৩ জানুয়ারি ১৯২৮ |
মৃত্যু | ৩০ জুলাই ২০২০ (বয়স ৯২) |
পেশা | লোকসংগীত শিল্পী গীতিকার |
পরিচিতির কারণ | লেপচা লোক সংগীত |
সন্তান | এন টি লেপচা |
পিতা-মাতা | নিমগে তামসাং( পিতা) |
পুরস্কার | পদ্মশ্রী সংগীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার টেগোর অকাদেমি রত্ন পুরস্কার বঙ্গবিভূষণ |
সংক্ষিপ্ত জীবনী
সম্পাদনারেন সোনম শেরিং লেপচার জন্ম ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দের ৩রা জানুয়ারি বৃটিশ ভারতের অধুনা পশ্চিমবঙ্গের কালিম্পঙের বংবস্তিতে। পিতা নিমগে তামসাং। জীবনের বেশিরভাগ তিনি সময়ই কাটিয়েছেন সিকিমে। অতি অল্প বয়সেই তিনি সংগীত ও নৃত্যের চর্চা শুরু করেন। তবে প্রথম দিকে সৈনিকের কর্মজীবন শুরু করেন।
বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন রেন সোনম শেরিং লেপচা। লেপচা সম্প্রদায়ের মধ্যে তিনিই প্রথম ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে ১৪ ই অক্টোবর আকাশবাণী কলকাতার সম্প্রচারে কণ্ঠদান করেন। একাধিক বাদ্যযন্ত্র বাদনে দক্ষ ছিলেন তিনি। তিনি ছিলেন সুরকার ও গীতকার। এ ছাড়া দার্জিলিং ও সিকিমে লেপচা সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক প্রচারও তিনি করে গিয়েছেন আজীবন। লেপচা জনজাতির মহান সংস্কৃতির বহু হারিয়ে যাওয়া উপাদান তিনি পুনরুদ্ধার করে জনপ্রিয় করে তুলেছেন বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের কাছে। চারশোর বেশি লোকগীতি, ১০২টি লোকনৃত্য এবং দশটি নৃত্যনাট্যের রচয়িতা তিনি। এ ছাড়াও কালিম্পং সংগ্রহশালার সংরক্ষক ছিলেন তিনি। সেই সংগ্রহশালায় লেপচা জনজাতির অমূল্য সম্পদ যেমন পুঁথি পোশাক, শিকারের হাতিয়ার, বাদ্যযন্ত্র, তৈজসপত্র, ঐতিহ্যবাহী কুটিরের মডেল ইত্যাদি নিরন্তর সংগ্রহ ও সেগুলির সংরক্ষণ ছিল চিরকালের অভ্যাস।[২] ২০১১ খ্রিস্টাব্দে তার লোক সংগীত সংগ্রহ নিয়ে একটি গ্রন্থ- "ভম জাত লিঙ ছো" (Vom Jat Ling Chhyo) প্রকাশিত হয়। সোনমের বৃহত্তর পারিবারিক চৌহদ্দিও লেপচা সংস্কৃতির উজ্জীবনে সক্রিয়। সোনমের সম্পর্কে ভাই লিয়াঙসং তামসাং লেপচা ভাষায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতাঞ্জলিরও অনুবাদক। তিনি নিয়মিত লেপচা সংস্কৃতির মুখপত্র প্রকাশ করেন। সোনমের জ্যেষ্ঠপুত্র এন টি লেপচাও সক্রিয় সংস্কৃতি-সংগঠক।
সম্মাননা
সম্পাদনালেপচা সম্প্রদায়ের প্রাচীন ও মহান লোক সংস্কৃতিকে আরো উজ্জীবিত করে আজীবন প্রচারের ও প্রসারের ফলস্বরূপ বহু সম্মান ও পুরস্কার লাভ করেছেন রেন সোনম শেরিং লেপচা। ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকারের "সংগীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার", ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে ভারতে সরকারের বেসামরিক পুরস্কার "পদ্মশ্রী" লাভ করেন তিনি। ২০১১ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধশত জন্মবার্ষিকীতে সংগীত নাটক আকাদেমির টেগোর রত্ন পুরস্কার, ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের "বঙ্গবিভূষণ পুরস্কারে" ও ভূষিত হন। তিনি কলকাতার লোকসংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি কেন্দ্রের উৎসবে সংবর্ধিত হয়েছেন।
জীবনাবসান
সম্পাদনামহান লেপচা সংস্কৃতির ধারক ও বাহক সোনম শেরিং লেপচা ২০২০ খ্রিস্টাব্দের ৩০ শে জুলাই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পরলোক গমন করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ শোক ব্যক্ত করেন। [৩][৪]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Sonam Tshering Lepcha on India Online"। India Online। ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১৯ আগস্ট ২০২০।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ কলকাতা র কড়চা-সংরক্ষক,আনন্দবাজার পত্রিকা,১৮ই আগস্ট,২০২০ কলকাতা হতে প্রকাশিত
- ↑ DelhiJuly 30, Press Trust of India New; July 30, 2020UPDATED:; Ist, 2020 18:53। "PM Modi condoles folk musician Sonam Tshering Lepcha's death: Anguished by his demise"। India Today। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২১।
- ↑ "Padma Shri awardee Sonam Tshering Lepcha dies at 92; PM Modi, Mamata Banerjee condole demise"। The New Indian Express। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২১।