সেলিম খান
সেলিম খান (জন্মঃ ২৪ নভেম্বর, ১৯৩৫) হলেন একজন ভারতীয় অভিনেতা এবং চিত্রনাট্যকার। হিন্দি চলচ্চিত্রে সেলিম-জাভেদ জুটির সাথে উন্নতমানের মানিকজোড় চিত্র্যনাট্যর হিসেবে পরিচিত। তিনি হলেন বলিউডের দাপুটে চিত্রনায়ক সালমান খান, সোহেল খান, এবং আরবাজ খান এর পিতা। তার দ্বিতীয় স্ত্রী হলেন অভিনেত্রী হেলেন।
সেলিম খান | |
---|---|
জন্ম | |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
পেশা | অভিনেতা, চিত্রনাট্যকার |
কর্মজীবন | ১৯৫৯−১৯৯৬ (অবসরপ্রাপ্ত), ২০১৩ |
দাম্পত্য সঙ্গী |
|
সন্তান | সালমান খান আরবাজ খান সোহেল খান আলভিরা খান অর্পিতা খান |
আত্মীয় | ঠাকুর বলদেভ সিং (শ্বশুর) সীমা খান (পুত্রবধূ ) অতুল অগ্নিহোত্রী (জামাই) |
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনাখান ব্রিটিশ শাসন আমলে কেন্দ্রীয় প্রদেশ ও বেরার (এখন মধ্য প্রদেশ) এর মধ্যে ইন্দোর শহরে জন্মগ্রহণ করেন। খানের পিতা একজন পুলিশ অফিসার ছিলেন এবং যখন তার মাতা মারা গিয়েছিলেন তখন তিনি খুব ছোট ছিলেন। ১৯৬৪ সালে তিনি মহরাষ্ট্রীয় মেয়ে সুশিলা চরকে বিয়ে করেন। সেলিম এবং সুশিলা দম্পত্তির চারটি সন্তান রয়েছে: সালমান খান, আরবাজ খান, সোহেল খান এবং আলভিরা খান।
১৯৮১ সালে তিনি বলিউডের বিনোদনকারী চিত্রনায়িকা হেলেনকে বিয়ে করেন। তাদের অর্পিতা খান নামে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। অর্পিতা খান একটি গৃহহীন মহিলার জৈবিক কন্যা যিনি মুম্বই ফুটপাথ মারা যান।[১]
কর্মজীবন
সম্পাদনাপরিচালক কে অমরনাথ একটি বিবাহের অনুষ্ঠানে সেলিম খানের সৌন্দর্য দ্বারা প্রভাবিত হন এবং পরবর্তীতে তিনি চলচ্চিত্রে অভিষিক্ত হন। তিনি তাকে মুম্বই আসতে বলেন এবং খানকে ভারতীয় রুপি ৪০০ এর বিনিময়ে ১ মাসের জন্য একজন অভিনেতা হিসাবে তাকে ভাড়া করেন। খান সাত বছর ধরে ছোট ছোট চরিত্রে বিভিন্ন চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তিনি জনগনেরে আগ্রহের বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্য রাখতে সক্ষম হননি, যার ফলে তিনি অভিনয় থেকে দুরে সরে আসেন। খান অভিনীত বিভিন্ন চলচ্চিত্রের মধে রয়েছে: যেমন- তিসরি মঞ্জিল (১৯৬৬), সরহাদি লুটেরা (১৯৬৬) এবং দিওয়ানা (১৯৬৭)। ১৯৭০ দশক পর্যন্ত তিনি মোট ১৪টি চলচ্চিত্রে ছোট চরিত্রে সহ-তারকা হিসেবে অভিনয় করেন এবং আরও একটি চলচ্চিত্র বফাদার (১৯৭৭) অভিনয় করেন। কিন্তু তিনি ১৯৭১ সালের আগ পর্যন্ত চলচ্চিত্রে তেমন সাফল্য অর্জন করতে পারেননি।
সেলিম-জাভেদ (১৯৭১-১৯৮২)
সম্পাদনাসেলিম খান "সরহদি লুটেরা" চলচ্চিত্রটি নির্মাণের সময় প্রথমবারের মত জাভেদ আখতারের সাথে কথা হয়। সেলিম ছোট চরিত্রে অভিনয় করা একজন অভিনেতা ছিলেন এবং সরহদি লুটেরা চলচ্চিত্রটি ছিল তার সর্বশেষ অভিনীতি চলচ্চিত্রে। প্রাথমিকভাবে ১৯৭০ দশকের সময়ে মানুষের চিত্রনাট্য, গল্প এবং সংলাপে কৃতিত্ব দেখানোর মত কোন ধারণা ছিলনা। রাজেশ খান্না সর্বপ্রথম সেলিম খান এবং জাভেদ আখতারকে "হাতি মেরে সাথি" নামক চলচ্চিত্রে চিত্রনাট্য লেখক হিসেবে সুযোগ দেন।[২] এছাড়াও তাদের ব্যবসাসফল জনপ্রিয় চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে রয়েছে: ইয়াদো কি বারাত (১৯৭৩), জাঞ্জির (১৯৭৩), হাত কি সাফাই (১৯৭৪), দিওয়ার (১৯৭৫), শোলে (১৯৭৫), প্রেমাদা কান্নিকি, চাচা ভাতিজা (১৯৭৭), ডন (১৯৭৮), ত্রিশূল (১৯৭৮), মনুশুলু চেছিনা দঙ্গালু, যুগনধার, দোস্তানা (১৯৮০), ক্রান্তি (১৯৮১), জামানা (১৯৮৫) এবং মি. ইন্ডিয়া (১৯৮৭)।তারা একত্রে প্রায় ২৪টির মত চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন; যেমন: ২টি তেলুগু চলচ্চিত্র, মনুশুলু চেছিনা দঙ্গালু, যুগনধার এবং একটি কন্নাটা চলচ্চিত্র প্রেমাদা কান্নিকি। তাদের লেখা ২৪টি চলচ্চিত্রের মধ্যে ২০টি ব্যবসাফল হিট চলচ্চিত্র। তাদের লেখা স্ক্রিপ্ট বক্স অফিসে তেমন সাফল্য দেখাতে না পারা চলচ্চিত্র গুলি হল; আখিরী দাও (১৯৭৫), ইমান ধর্ম (১৯৭৭), কালা পাত্থার (১৯৭৯), এবং শান (১৯৮০)।যদিও তারা ১৯৮২ সালের ব্যক্তিগত বিষয়ের কারণে আলাদা হয়ে যান। তাদের কিছু স্ক্রিপ্ট পরবর্তীকালে জামানা এবং মিষ্টার ইন্ডিয়া চলচ্চিত্রে লিখেছিলেন। সেলিম-জাভেদ জুটিকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সফল চিত্রনাট্যাকার হিসাবে বর্ণনা করা হয়।[৩] এছাড়াও তারকাদের অবস্থান অর্জনে ভারতীয় চলচ্চিত্রের মধ্য প্রথম চিত্রনাট্যাকার হিসেবে উল্লিখ করা হয়।[৪]
সেলিম খান (১৯৮৩-১৯৯৬)
সম্পাদনাসেলিম খান জাভেদ আক্তারের সাথে আলাদা হওয়ার পরে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত কোন চলচ্চিত্রের সাথে সক্রিয় ছিলেন না। তিনি ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত মাত্র ১০টি চলচ্চিত্রের জন্য স্ক্রিপ্ট লিখেছিলেন। জাভেদ আক্তারের সাথে বিভক্তির পর তার লেখা স্ক্রিপ্টগুলি হল নাম, কবজা, তুফান, জুর্ম, আকায়লা, পাথ্তার কি ফুল, মাস্ত কালেন্দার, আ গালে লাগ জা, মাজদাহার, দিল তেরা দিওয়ানা (১৯৯৬)। সালমান খান পাত্থার কি ফুল এবং মাঝদার চলচ্চিত্রে তার পিতা সাথে কাজ করেন।
পুরস্কার
সম্পাদনালাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট অনার - অপ্সরা চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন প্রযোজক গিল্ড পুরস্কার - ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Bollywood celebrities and their adopted children"। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মে ২০১৪।
- ↑ The author has posted comments on this article (২০১২-০৭-১৯)। "More facts about Rajesh Khanna - The Times of India"। Articles.timesofindia.indiatimes.com। ২০১৩-১২-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৫-২৫।
- ↑ Sholay, through the eyes of Salim Khan, [১],Rediff.com
- ↑ Ramesh Dawar (2003), Encyclopaedia of Hindi cinema, Encyclopaedia Britannica (India) Pvt. Ltd.
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে Salim Khan (ইংরেজি)
- Salim-Javed ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৩ সেপ্টেম্বর ২০০৫ তারিখে
- An interview with Salim Khan