সূর্যশিশির (উদ্ভিদ)
সূর্যশিশির এক প্রকার মাংসাশী উদ্ভিদ। সূর্যশিশিরের পাতাগুলো ছোট আর গোলাকার। এ উদ্ভিদটি আঠালো ফাঁদওয়ালা মাংসাশী উদ্ভিদের উৎকৃষ্ট উদাহরণ। এর বৈজ্ঞানিক নাম হলো 'ডোসেরা রোটানডিফোলিয়া'।
সূর্যশিশির (উদ্ভিদ) | |
---|---|
সূর্যশিশির (উদ্ভিদ) | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Plantae |
শ্রেণীবিহীন: | Angiosperms |
শ্রেণীবিহীন: | Eudicots |
শ্রেণীবিহীন: | Core eudicots |
বর্গ: | Caryophyllales |
পরিবার: | Droseraceae |
গণ: | Drosera L. |
Species | |
See separate list. |
গঠন
সম্পাদনাছোট আকারের এ উদ্ভিদটি মাত্র ৩.৫ ইঞ্চি (৮ সে.মি.) চওড়া। এটি প্রায়ই বড় ধরনের আগাছা ও এর আশেপাশে জন্মানো গাছপালার নিচে লুকানো অবস্থায় থাকে। এর পাতাগুলো ছোট এবং গোলাকার। গ্রীষ্মকালে গোলাকার পাতাগুলোর উঁচু কান্ডগুলোতে সাদা সাদা ফুল ফোটে। সূর্যশিশিরের পাতাগুলোকে উজ্জ্বল লাল রঙের দেখায়। মনে হয় ওগুলোর উপর শিশির কণা চিকচিক করছে। লালচে শিশির বিন্দু দ্বারা আবৃত এ পাতাগুলো আসলে পোকামাকড় ধরার মরণ ফাঁদ। সূর্যশিশিরের পাতাগুলো বিভিন্ন উচ্চতার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অসংখ্য বোঁটা দিয়ে ঢাকা থাকে। প্রত্যেকটি বোঁটার ওপর থাকে অতি ক্ষুদ্র একটি গ্রন্থি বা অঙ্গ যা এক ধরনের স্বচ্ছ আঠালো তরল পদার্থ উৎপন্ন করে। এ তরল পদার্থটি বোঁটাগুলোর ওপর শিশির বিন্দুর মত জমা হয়। তরল নিঃসরণকারী গ্রন্থিটি দেখতে লাল বলে এর ওপরের তরল পদার্থটিও লালচে বলে মনে হয়। সূর্যশিশির এক ধরনের সুগন্ধও বাতাসে ছড়ায়।
শিকার পদ্ধতি
সম্পাদনামাছি ও অন্যান্য পোকামাকড় উজ্জ্বল লাল রঙ, শিশির বিন্দু আর সুগন্ধে আকৃষ্ট হয়ে উদ্ভিদের কাছে চলে আসে। কিন্তু পোকা গাছটির পাতার ওপর নামা মাত্রই পোকার পাগুলো পাতার উঁচু বোঁটায় থাকা তরল পদার্থে আটকে যায়।
পা ছাড়িয়ে নিতে ওরা যতই টানাটানি করে ততই পাতার গ্রন্থিগুলো থেকে আরো বেশি করে আঠালো রস বের হতে থাকে। এভাবে পোকামাকড়গুলো আরো শক্তভাবে পাতায় আটকে যায়। পোকার চারপাশে থাকা বোঁটাগুলো বেঁকে গিয়ে আরো বেশি পরিমাণে রস বের করতে থাকে। সম্পূর্ণ পাতাটি কুঁচকে গিয়ে পোকাটির চারপাশে একটি পেয়ালার মত আকার গঠন করে। পোকাটির দেহের নরম অংশগুলো গলে গিয়ে পাতায় মিশে না যাওয়া পর্যন্ত সূর্যশিশির উদ্ভিদের পরিপাকে সাহায্যকারী এনজাইমগুলো কাজ করে। ৪-৫ দিন পর সূর্যশিশিরের পাতা ও বোঁটাগুলো আবার আগের মত সোজা হয়ে যায়।
বাংলাদেশে অস্তিত্ব
সম্পাদনাবাংলাদেশের দিনাজপুরে সূর্যশিশির উদ্ভিদের সন্ধান পাওয়া গেছে। দিনাজপুর সরকারি কলেজের জীববিজ্ঞান ভবনের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে অবস্থিত পুকুরের পশ্চিম পাড়ে এর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। আবারো ২০২২ সালে দিসকে দেখা গেছে এ প্রাণি খেকো উদ্ভিৎ[১] এছাড়া রংপুর ও সিলেটেও এর দেখা পাওয়া যায়।[২]