সুশীলাসুন্দরী

সার্কাসে অভিনয়কারী প্রথম ভারতীয় মহিলা

সুশীলাসুন্দরী (১৮৭৯-১৯২৪) একজন ভারতীয় জিমন্যাস্ট, ট্রাপিজ খেলোয়াড় এবং সার্কাসের দলে খেলা দেখানো প্রথম ভারতীয় মহিলা। তিনি প্রিয়নাথ বসুর গ্রেট বেঙ্গল সার্কাসে বাঘের খেলা দেখাতেন। ইংলিশম্যান পত্রিকাতে তার খেলার প্রশংসা ছাপানো হয়েছিল।[]

সুশীলাসুন্দরী
জন্ম১৮৭৯
মৃত্যু১৯২৪ কলকাতা,বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি,ব্রিটিশ ভারত
নাগরিকত্বব্রিটিশ ভারতীয়
পরিচিতির কারণপ্রথম ভারতীয় মহিলা সার্কাসকর্মী

প্রথম জীবন

সম্পাদনা

সুশীলাসুন্দরী ১৮৭৯ সালে এক বাঙালি হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবার পরিজন সম্পর্কে খুব একটা বেশি তথ্য পাওয়া যায়না। তবে কুমুদিনী নামে তার এক বোন ছিলেন। তিনিও সুশীলাসুন্দরীর মত সার্কাসে খেলা দেখাতেন।[]

কর্মজীবন

সম্পাদনা

সুশীলাসুন্দরী ছিলেন প্রিয়নাথ বসুর ‘গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস’ এর একজন উল্লেখযোগ্য খেলোয়াড়। তিনি একাধারে একজন জিমন্যাস্ট ও ট্রাপিজ খেলোয়াড়ও ছিলেন। সাধারণতঃ সার্কাসে প্রদর্শনীর শুরুতেই তিনি এবং তার বোন কুমুদিনী ঘোড়ায় চড়ে মঞ্চে উপস্থিত হতেন। পশ্চিম ভারতে সফর কালে ১৮৯৬ সালের নভেম্বর মাস নাগাদ রেওয়া নামক একটি দেশীয় রাজ্যের রাজদরবারে ‘গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস’ তাদের কলাকৌশল প্রদর্শন করে। সার্কাসের প্রদর্শনীতে রেওয়ার রাজা এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে তিনি দলটিকে একজোড়া বাঘ উপহার দেন। বেঙ্গল সার্কাস দলটির মধ্যে এই বাঘজোড়াটিকে নিয়ে একটা সংস্কার প্রচলিত ছিল। তারা মনে করতেন এই বাঘদু’টি তাদের দলের পক্ষে সৌভাগ্য বয়ে এনেছে। তাই তারা এই বাঘ দু’টিকে হিন্দু দেব-দেবী লক্ষ্মী ও নারায়ণের নামে নামকরণ করেন। সুশীলাসুন্দরী পরবর্তীকালে বাঘ পোষ মানানের কৌশলও শিখেছিলেন। ১৯০১ সাল নাগাদ সুশীলাসুন্দরী বাঘ দু’টিকে নিয়ে সার্কাসে খেলা দেখাতে শুরু করেন। তিনি অবলীলায় বাঘের খাঁচায় ঢুকে তাদের নিজের কথামত দাঁড় করাতেন, বসাতেন, গর্জন করাতেন। এমনকি তিনি তাদের সাথে বাহুযুদ্ধও করতেন[], তাদের বিস্তৃত চোয়াল জনসমক্ষে দেখাতেন। এরপর এসব খেলা দেখানোর পর তিনি তাদের উপর হেলান দিয়ে দাঁড়াতেন ছবি তোলার উদ্দেশ্যে। যখন এই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাঘ দু’টির মধ্যে একটির মৃত্যু ঘটে তখন সুশীলাসুন্দরী ফরচুন নামক অন্য একটি অপ্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাঘকে নিয়ে খেলা দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমেখেলা দেখানোর সময় বাঘটি সুশীলাসুন্দরীকে মারাত্মকভাবে জখম করে। যার ফলে তিনি বাকি জীবনটা পঙ্গু হয়ে কাটাতে বাধ্য হন।[] অবশেষে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকলে মাত্র ৪৫ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. সেনগুপ্ত, সুবোধচন্দ্র; বসু, অঞ্জলি, সম্পাদকগণ (জানুয়ারি ২০০২)। "সুশীলাসুন্দরী"। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। প্রথম খণ্ড (চতুর্থ সংস্করণ সংস্করণ)। কলকাতা: শিশু সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা 601। আইএসবিএন 81-85626-65-0 
  2. Sengupta, Nandini (১৬ নভেম্বর ২০১৪)। "Swadeshi girls in the ring"The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ৫ মার্চ ২০১৫