সুরসপ্তক আন্ডারপাস
সুরসপ্তক আন্ডারপাস বাংলাদেশে নির্মিত বৃহত্তম আন্ডারপাস। এই আন্ডারপাসটি ঢাকা শহরের শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজ সংলগ্ন বিমানবন্দর সড়কের এমইএস মোড়ে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও রেডিসন হোটেলের নিকটে অবস্থিত।[১][২][৩]
সংক্ষিপ্ত বিবরণ | |
---|---|
অবস্থান | এমইএস স্কয়ার, বিমানবন্দর, ঢাকা |
স্থানাঙ্ক | ২৩°৪৮′৫৮″ উত্তর ৯০°২৪′২০″ পূর্ব / ২৩.৮১৬১° উত্তর ৯০.৪০৫৬° পূর্ব |
অবস্থা | খোলা |
ক্রিয়াকলাপ | |
নির্মাণ শুরু | ১২ আগস্ট ২০১৮ |
চালু হয় | ১২ জানুয়ারি ২০২২২ |
মালিক | ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন |
ধরন | পথচারী সুড়ঙ্গ |
কারিগরি বৈশিষ্ট্য | |
নকশা প্রকৌশলী | ২৪ ইঞ্জিনিয়ার ব্রিগেড, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী |
দৈর্ঘ্য | ৪২ মিটার |
টানেল ক্লিয়ারেন্স | ৫ মিটার |
ইতিহাস
সম্পাদনাসুরসপ্তক আন্ডারপাস নির্মাণের পূর্বে এখানে কোন পথচারী সেতু ছিল না। পথচারী পারাপারের জন্য এখানে একটি জেব্রা ক্রসিং ছিল।[৪] ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের সামনে সংঘটিত দূর্ঘটনায় রাজীব ও দিয়া খানম মীম নামক দুজন শিক্ষার্থী মৃত্যুবরণ করে। দুজনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পরবর্তীতে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলনকারীদের দাবিগুলোর মাঝে একটি ছিল কলেজের সামনে একটি আন্ডারপাস নির্মাণ করা।[২]
একই বছরের ১২ আগস্ট তারিখে আন্ডারপাসটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। সুরসপ্তক নির্মাণের দায়িত্বে ছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার ব্রিগেড। এটি নির্মাণে ৫৭ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়। এই আন্ডারপাসের নাম সুরসপ্তক রাখা হয় ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সাত বীরশ্রেষ্ঠদের সম্মানে।[৫] রাস্তা না কেটে মাটির নিচ দিয়ে সুড়ঙ্গ করে তথা বক্স পুসিং প্রযুক্তিতে নির্মাণ করা হয় সুরসপ্তক আন্ডারপাস।[৬]
তবে তিন বছরে নির্মিত এই আন্ডারপাসের নাম সুরসপ্তকের বদলে নিহত দুই শিক্ষার্থী রাজীব-দিয়ার নামে নামকরণ করা সহ নির্মিত আন্ডারপাস দ্রুত উন্মুক্ত করে দেওয়ার দাবিতে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন সংগঠন প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি প্রেরণ করে।[৭]
করোনার প্রাদুর্ভাবের ফলে নির্মাণকাজে বিলম্ব হয়।[৬] অবশেষে ১২ জানুয়ারি ২০২২ সালে সুরসপ্তক আন্ডারপাসটি খুলে দেওয়া হয়।[৮]
বর্ণনা
সম্পাদনা১৫ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট এই আন্ডারপাসটি ৪২ মিটার দীর্ঘ চারটি সুড়ঙ্গ নিয়ে গঠিত। প্রবেশ ও প্রস্থানের জন্য দুই দিকে দুটি করে মোট চারটি পথ রয়েছে।[৫] এর দৈর্ঘ্য ১৩৫ মিটার ও প্রস্থ ৫ মিটার। এর র্যাম ৩২০ মিটার, রয়েছে ৬৭৮ মিটার ফুটপাত এবং ৭৬৩ মিটার বিশিষ্ট সীমান্ত প্রাচীর।[৯] এখানে রয়েছে একটি ত্রিভুজ আকৃতির জাদুঘর। জাদুঘরটিতে দেওয়ালের এক প্রান্তে বঙ্গবন্ধু সহ সাত বীর শ্রেষ্ঠের ম্যুরাল এবং অন্য প্রান্তে শহীদ মিনার ও জাতীয় স্মৃতিসৌধের ছবি রয়েছে। পথচারীদের সুবিধার জন্য মধ্যবর্তী দেয়ালে ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড লাগানো হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা আলোক প্রবেশের উপযোগী করে এই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আন্ডারপাস নির্মাণ করা হয়েছে। সড়কের পূর্বপাশে পথচারীদের বিশ্রামের জন্য জায়গা রাখা হয়েছে। হুইল চেয়ার ব্যবহার করে যাওয়ার জন্য সিসিটিভি ক্যামেরার আওতাভুক্ত সুরসপ্তকে রয়েছে পৃথক ঢালু পথ।[৬] বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য এখানে রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। এছাড়া সিঁড়ির পাশাপাশি এখানে রয়েছে লিফট ও এস্কেলেটর ব্যবস্থা।[৯]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Rajiv-Mim's death on the road; The Prime Minister kept his promise"। মিশন ৯০ (ইংরেজি ভাষায়)। ১২ জানুয়ারি ২০২২। ১৫ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২২।
- ↑ ক খ "'সুরসপ্তক' আন্ডারপাসে চাঁদের আলো"। ঢাকা পোস্ট। ১৩ জানুয়ারি ২০২২।
- ↑ "সুরসপ্তক"। কালের কণ্ঠ। ১৫ জানুয়ারি ২০২২।
- ↑ মিজান, মোরসালিন (১৪ জানুয়ারি ২০২২)। "বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি"। দৈনিক জনকণ্ঠ।
- ↑ ক খ "রাজধানীতে দৃষ্টিনন্দন আন্ডারপাস 'সুরসপ্তক'"। রাইজিংবিডি। ১৩ জানুয়ারি ২০২২।
- ↑ ক খ গ ভাদুড়ী, জয়শ্রী (২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০)। "প্রস্তুত আন্ডারপাস সুরসপ্তক"। বাংলাদেশ প্রতিদিন।
- ↑ "'সুর সপ্তক' আন্ডারপাসের নাম পরিবর্তন চায় শিক্ষার্থীরা"। দৈনিক আনন্দবাজার। ১১ মার্চ ২০২১। ১৫ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২২।
- ↑ "বিমান বন্দর সড়কে সুরসপ্তক আন্ডারপাস খুলে দেয়া হয়েছে"। চ্যানেল আই অনলাইন। ১২ জানুয়ারি ২০২২।
- ↑ ক খ "শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশেষ ট্রাফিকের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর"। সমকাল। ১২ জানুয়ারি ২০২২।