সুন্দরপুর ইউনিয়ন, কাহারোল
সুন্দরপুর ইউনিয়ন বাংলাদেশের রংপুর বিভাগের দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার অন্তর্গত একটি ইউনিয়ন পরিষদ।[১][২] এটি ১২.৯[৩] কিমি (সরকারী হিসাব মতে) অথবা ৩৩.৪১ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে অবস্থিত ।
সুন্দরপুর ইউনিয়ন | |
---|---|
ইউনিয়ন | |
৫নং সুন্দরপুর ইউনিয়ন পরিষদ | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | রংপুর বিভাগ |
জেলা | দিনাজপুর জেলা |
উপজেলা | কাহারোল উপজেলা |
ইউনিয়ন পরিষদ | সুন্দরপুর |
সরকার | |
• চেয়ারম্যান | আনোয়ার হোসেন মানিক (স্বতন্ত্র) |
আয়তন | |
• মোট | ৩৩.৪১ বর্গকিমি (১২.৯০ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ২৭,৪১৪ |
• জনঘনত্ব | ৮২০/বর্গকিমি (২,১০০/বর্গমাইল) |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
২০১১ সালের আদমশুমারীর হিসাব অনুযায়ী এখানকার জনসংখ্যা ছিল প্রায় ২৭,৪১৪ জন। ইউনিয়নটিতে গ্রামের সংখ্যা ২২টি ও মৌজার সংখ্যা ২২টি।
বানিজ্যিক গুরুত্বঃ
কাহারোল উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বানিজ্যিক এলাকা এই সুন্দরপুর ইউনিয়ন। পুরো উপজেলার মধ্যে কেবলমাত্র এই ইউনিয়নের উপর দিয়ে জাতীয় মহাসড়ক থাকায় যোগাযোগ খাতে আমুল পরিবর্তন এসেছে । দশমাইল (বেলডাঙ্গা )
এবং ১৩ মাইল গড়েয়া (আফিলডাঙ্গা) নামক দুটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার রয়েছে এই ইউনিয়নে। এই বাজার দুটি কাহারোল উপজেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বানিজ্যিক এলাকা। ছোট বড় প্রায় ৫০০ চাতাল রয়েছে এই ইউনিয়নে। এসব চাতালে প্রতি বছর কয়েক লক্ষ মেট্রিক টন ভূট্টা প্রস্তুত হয়ে দেশের বিভিন্ন পশু খাদ্য উৎপাদক কারখানায় যায়। ভূট্টার বানিজ্য বেশি হবার কারণে এই ইউনিয়নের 'ভাতগাঁও' গ্রামে থাইল্যান্ড ভিত্তিক পোল্ট্রি শিল্প কোম্পানি 'সিপি বাংলাদেশ' এর একটি বিশাল ফিড মিল স্থাপিত হয়েছে।
এছাড়াও সুন্দরপুর ইউনিয়নে প্রচুর পরিমাণে ধান, ভূট্টা, আলু, আখ, সরিষা ও পাট চাষ হয়। ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে দুটি নদী প্রবাহিত হওয়ায় সেচ সমস্যা নেই। এর ফলে প্রচুর পরিমাণে ফসল উৎপাদন হয় ।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
সুন্দরপুর ইউনিয়নে অবস্থিত রয়েছে বিখ্যাত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন কান্তনগর মন্দির। এছাড়াও রয়েছে তেভাগা আন্দোলন এর স্মরণে 'তেভাগা' চত্বর [৪] , সাওতাল বিদ্রোহের অন্যতম দুই নায়ক সিধু ও কানুর ভাষ্কর্য যা কান্তনগর বাজারে অবস্থিত।
৫ আগস্ট ২০২৪ কতিপয় দুস্কৃতিকারী তেভাগা চত্তরে অবস্থিত সিধু-কানুর বিখ্যাত ভাষ্কর্য ভেঙে ফেলে। ২৮ আগস্ট এর প্রতিবাদে ও সিধু-কানুর ভাস্কর্য পুনর্নির্মাণের দাবিতে আদিবাসী ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ করে। [৫]
প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব:
এই ইউনিয়নের অন্যতম প্রখ্যাত সমাজসেবক ব্যক্তি ছিলেন 'মরহুম আব্দুস সামাদ স্যার। তিনি নিজ জমি এবং অর্থ ব্যয়ে স্থাপন করেছিলেন 'পূর্ব্ব মল্লিকপুর শিক্ষা নগরী'। এই শিক্ষা নগরীতে রয়েছে ১ টি মহিলা ডিগ্রি কলেজ, ১ টি হায়ার সেকেন্ডারী কলেজ, ২ টি হাই স্কুল, ১ টি প্রাইমারী স্কুল।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
এই ইউনিয়নে মোট ৩১টির বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে। তার মধ্যে কলেজ ২ টি ,হাইস্কুল ৬ টি, দাখিল মাদ্রাসা ২ টি, এবং প্রাইমারী স্কুল১৯টি, ইসলামী কিন্ডারগার্টেন ১ টি উল্লেখযোগ্য।
নদী , বিল ও দীঘি
এই ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে ২ টি নদী বয়ে গেছে। পূর্ব দিক দিয়ে আত্রাই নদী এবং পশ্চিম দিক দিয়ে ঢেপা নদী বয়ে গেছে। ঢেপা নদীটি দিনাজপুর শহরে গিয়ে পুনর্ভবা নাম ধারণ করেছে।
এক সময়ে হোসেনপুর গ্রামের কোল ঘেঁষে পূর্ব দিক হয়ে পশ্চিম দিকে বয়ে যাওয়া বাঁশদহ নদী প্রবাহমান ছিল। নদীটি পূর্বমল্লিকপুর গ্রাম হয়ে ঢেপা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। যা কালের বির্বতনে বিলীন হয়ে এখন খালে পরিনত হয়েছে।
এছাড়াও বেশ কয়েকটি ছোট বড় বিল ও বড় দীঘি রয়েছে। দিঘী গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ছোট ভাতগাঁও গ্রামের বিখ্যাত 'শুকান পখর' এবং দ্বীপ নগর গ্রামের 'বুড়ি পখর' দীঘি। দীঘি দুটির বয়স আনুমানিক ২০০ বছরের বেশি। ছোট ভাতগাঁও গ্রামের শুখান পখর দীঘির পূর্ব পাড়ে 'শাহ মখদুম' পীরের দরগাহের ধ্বংসাবশেষ এবং দরগাহের খাদেম 'বুধারু মোহাম্মদ' এর পারিবারিক কবরস্থান রয়েছে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "সুন্দরপুর ইউনিয়ন"। জাতীয় তথ্য বাতায়ন। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-১৬।
- ↑ "Union Parishad List"। Local Government Engineering Department (LGED)। ৫ আগস্ট ২০১২। ৫ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুলাই ২০১৯।
- ↑ sundarpurup.dinajpur.gov.bd https://sundarpurup.dinajpur.gov.bd/bn/site/page/50ZZ-%E0%A6%8F%E0%A6%95-%E0%A6%A8%E0%A6%9C%E0%A6%B0%E0%A7%87-%E0%A6%87%E0%A6%89%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%A8। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-০৮।
|শিরোনাম=
অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য) - ↑ "বিপ্লবীদের স্মরণে নির্মিত স্মারক ভাস্কর্যের উদ্বোধন আজ"। www.kalerkantho.com। 2018-09। সংগ্রহের তারিখ 2024-01-08। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ "সিধু-কানুর ভাস্কর্য পুনর্নির্মাণের দাবিতে আদিবাসী ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ"। দৈনিক কালের কণ্ঠ।