সঞ্জয় বেলট্ঠিপুত্ত
সঞ্জয় বেলট্ঠিপুত্ত (পালি: सन्जय बेलट्ठिपुत्त) বা সঞ্জয় বৈরতীপুত্র (সংস্কৃত: सन्जय बैरतिपुत्र) গৌতম বুদ্ধের সমসাময়িক একজন ভারতীয় অনেকান্তবাদী বা অজ্ঞানবাদী দার্শনিক ছিলেন।
পরিচিতি
সম্পাদনাবিভিন্ন পালি সাহিত্যে সঞ্জয় বেলট্ঠিপুত্তকে পরিব্রাজক হিসেবে বর্ণনা করা হ্যেছে। সারিপুত্ত ও মহামোগ্গলন নামক তার দুইজন প্রধান শিষ্য পরবর্তীকালে অস্সজির নিকট গৌতম বুদ্ধের দর্শন সম্বন্ধে জানতে পেরে সঞ্জয় বেলট্ঠিপুত্তকে ত্যাগ করে গৌতম বুদ্ধের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। এইসময় সঞ্জয় বেলট্ঠিপুত্তের আড়াইশো শিষ্য তাকে ত্যাগ করে গৌতম বুদ্ধের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। শেষ জীবনে রক্তবমনের কারণে সঞ্জয়ের মৃত্যু ঘটে। [১]
দর্শন
সম্পাদনাসুত্তপিটকের দীঘনিকায়ের সামঞ্ঞফলসুত্ত অনুসারে, সঞ্জয় বেলট্ঠিপুত্ত কোন দার্শনিক প্রশ্নের উত্তর এড়ানোর উদ্দেশ্যে সর্বদা দ্ব্যর্থবোধক বাক্য প্রয়োগ করে সেইসকল প্রশ্নের উত্তর দিতেন। তিনি পরলোক, দেবতা, কর্মফল, মুক্তপুরুষ প্রভৃতি অধিবিদ্যা সংক্রান্ত সকল প্রশ্ন এড়িয়ে যেতেন। পরলোক বা দেবতা বা কর্মফল বা মুক্তপুরুষের অস্তিত্ব আছে না নেই তা তিনি বলেননা বা জোর দিয়েও বলেননা যে আছে।[২] যদিও রাহুল সাংকৃত্যায়নের মতে, মানুষের সহজ বুদ্ধিকে ভ্রমে নিক্ষেপ করা সঞ্জয়ের অভিপ্রায় ছিল,[৩]:৭৮, ৭৯ তবুও এই কথা অনুমেয় যে সঞ্জয় সেই সমস্ত প্রশ্ন এড়িয়ে যেতেন, যাদের সম্বন্ধে সঠিক উত্তর পাওয়া সম্ভব হয় না, তাই এই সকল অপ্রয়োজনীয় প্রশ্নের উত্তর না সন্ধান করে মানসিক স্থিতি বজায় রাখার পক্ষপাতী ছিলেন। দীঘনিকায়ের ব্রহ্মজালসুত্ত অনুসারে অমরবিক্খেপিক মতবাদ সঞ্জয় বেলট্ঠিপুত্তের দর্শন হিসেবে পরিচিত। সাধারণতঃ অমরবিক্খেপিক মতবাদীরা কোন প্রশ্নের উত্তর সঠিক ভাবে না দিয়ে পাঁকাল মাছের মতো পিচ্ছিল ভাবে এড়িয়ে যেতে থাকেন। গৌতম বুদ্ধ এই মতবাদ সম্বন্ধে তার শিষ্যদের আলোচনা করতেই নিষেধ করেছিলেন।[১]:১৩,১৪
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ হালদার, মণিকুন্তলা (১৯৯৬) বৌদ্ধধর্মের ইতিহাস, প্রকাশক মহাবোধি বুক এজেন্সী, ৪এ, বঙ্কিম চ্যাটার্জী ষ্ট্রীট, কলিকাতা-৭৩, ISBN ৯৭৮-৯৩-৮০৩৩৬-৩৩-৬
- ↑ Thanissaro Bhikkhu (trans.) Samaññaphala Sutta: The Fruits of the Contemplative Life (1997)
- ↑ রাহুল সাংকৃত্যায়ন (১৯৮৮) দর্শন দিগদর্শন, দ্বিতীয় খণ্ড অনুবাদক- ছন্দা চট্টোপাধ্যায়, প্রকাশক- চিরায়ত প্রকাশন প্রাইভেট লিমিটেড, ১২ বঙ্কিম চ্যাটার্জী ষ্ট্রীট, কলিকাতা-৭৩
আরো পড়ুন
সম্পাদনা- Bhaskar, Bhagchandra Jain (1972). Jainism in Buddhist Literature. Alok Prakashan: Nagpur. Available on-line at http://jainfriends.tripod.com/books/jiblcontents.html.
- Ñāṇamoli, Bhikkhu (trans.) and Bhikkhu Bodhi (ed.) (2001). The Middle-Length Discourses of the Buddha: A Translation of the Majjhima Nikāya. Boston: Wisdom Publications. আইএসবিএন ০-৮৬১৭১-০৭২-X.
- Rhys Davids, T.W. & William Stede (eds.) (1921-5). The Pali Text Society’s Pali–English Dictionary. Chipstead: Pali Text Society.
- Walshe, Maurice O'Connell (trans.) (1995). The Long Discourses of the Buddha: A Translation of the Dīgha Nikāya. Somerville: Wisdom Publications. আইএসবিএন ০-৮৬১৭১-১০৩-৩.