শেখ রেয়াজউদ্দীন আহমদ

কাজী শেখ রেয়াজউদ্দীন আহমদ (১৮৮২ - ১৯৭২)[] হলেন বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও সমাজ সেবক। তিনি বাংলা একাডেমির একজন “সন্মানিত ফেলো” ছিলেন।[]

কাজী শেখ রেয়াজউদ্দীন আহমদ
জন্ম১৮৮২
মৃত্যু১৯৭২
নাগরিকত্ব বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণসমাজ সেবা ও লেখক
উল্লেখযোগ্য কর্ম
আরব জাতির ইতিহাস

জন্ম ও পারিবারিক পরিচিতি

সম্পাদনা

শেখ রেয়াজউদ্দীন আহমদ ১৮৮২ সালে লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার দলগ্রাম ইউনিয়নের শ্রীখাতা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[] তার পিতার নাম হাজী শেখ মুহম্মদ জয়েন উল্লাহ এবং মাতার নাম ফুল বিবি এবং পিতামহ শেখ আলী মামুদ পাটোয়ারী।। তাঁর পূর্বপুরুষ ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যেআরব থেকে এসে দলগ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।

শিক্ষাজীবন

সম্পাদনা

শেখ রেয়াজ উদ্দিনের বাল্য শিক্ষা শুরু হয় কাকিনায়, কবি শেখ ফজলল করিমের বাড়ীতে পাঞ্জাবী মাওলানা আব্দুল লতিফের কাছে। এখানে তিনি আরবী ও ফারসী শিক্ষা লাভ করেন এবং কাকিনার মহিমারঞ্জন মাইনর স্কুলে ভর্তি হন। এখান থেকেই তিনি প্রাথমিক ও মাইনর পরীক্ষা পাস করেন। অত্যন্ত মেধাবী শেখ রেয়াজ উদ্দিন মাইনর পরীক্ষায় রাজশাহী বিভাগ থেকে সে আমলে প্রথম স্থান অধিকার করেন। মাইনর পরীক্ষায় এরুপ বিরল কৃতিত্বের পর সপ্তম শ্রেণীতে তাকেঁ রংপুর জিলা স্কুলে ভর্তি করানো হয়। এখানে দশম শ্রেণী পর্যন্ত অধ্যয়নের পর এন্ট্রান্স পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য কোলকাতা গমন করেন। ১৯০৩ সালে কোলকাতার হেয়ার স্কুল কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সময় হঠাত অসুস্থ হয়ে পড়লে পরীক্ষা অসমাপ্ত রেখেই বাড়ী ফিরতে বাধ্য হন।

কর্মজীবন

সম্পাদনা

তিনি তুষভান্ডার এম-ই স্কুলে শিক্ষকতা করতেন।[] পরবর্তীতে তিনি দলগ্রাম দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে সেখানেও শিক্ষকতা করেন।[]১৯১০ সালে রেয়াজউদ্দীন তুষভান্ডার এম ই স্কুলে সেকেন্ড মাস্টার হিসেবে যোগদান করেন। আট বছর পরে এ চাকরি ছেড়ে তিনি ম্যারেজ রেজিস্ট্রারের চাকরি নেন এবং একই সঙ্গে সমাজসেবায় আত্মনিয়োগ করেন।

তিনি এক নাগাড়ে বারো বছর ইউনিয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং ছয় বছর লোকাল বোর্ডের সদস্য ছিলেন। সমাজের উন্নয়নের জন্য তিনি একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও দাতব্য চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা করেন।

মৃত্যু

সম্পাদনা

শেখ রেয়াজউদ্দিন আহমেদ ১৯৭২ সালের ২৫ জুন মৃত্যুবরণ করেন।[]

সাহিত্য-কর্ম

সম্পাদনা

তার বিখ্যাত সাহিত্য-কর্ম হলো “আরব জাতির ইতিহাস”, যা মূলতঃ 'হিস্ট্রি অব সারাসিনস'-এর বঙ্গানুবাদ।[] তাঁর রচিত গ্ৰন্থ: ‘সচিত্র আরবজাতির ইতিহাস’ (৩ খণ্ড), ‘ইসলাম প্রচারের ইতিহাস’ (অনুবাদ), ‘জীবহত্যা ও গো-কোর্বানী’ ,‘মালেকা’ (উপন্যাস ) প্রভৃতি। তিনি স্যার সৈয়দের সুবৃহৎ জীবনীও রচনা করেছিলেন।

পুরস্কার ও সম্মাননা

সম্পাদনা

সাহিত্যক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ তাকে “সম্মানসূচক ফেলোশিপ” প্রদান করে।[]

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. বদিউজ্জামান (জানুয়ারি ২০০৩)। "আহমদ, শেখ রেয়াজউদ্দীন"। সিরাজুল ইসলাম[[বাংলাপিডিয়া]]ঢাকা: এশিয়াটিক সোসাইটি বাংলাদেশআইএসবিএন 984-32-0576-6। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭  ইউআরএল–উইকিসংযোগ দ্বন্দ্ব (সাহায্য)
  2. "বাংলা একাডেমি সম্মানসূচক ফেলোশিপ"। বাংলা একাডেমি। ৬ জুন ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  3. "দলগ্রাম দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস"। শিক্ষক বাতায়ন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা