শূন্য দ্বারা ভাগ

কোন বাস্তব সংখ্যাকে শূন্য দ্বারা ভাগ করলে যে মান পাওয়া যায়

গাণিতিক ভাগ প্রক্রিয়ায় ভাজক বা হর হিসেবে শুন্যের ব্যবহারই শূন্য দ্বারা ভাগ। গাণিতিকভাবে এ ধরনের ভাগকে +a/ রাশিমালার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় যেখানে a হল ভাজ্য (লব)। ধরা যাক, a ≠ 0। এখন এমন কোন সংখ্যা পাওয়া সম্ভব নয় যাকে 0 দ্বারা গুণ করলে a (অর্থাৎ অশূন্য সংখ্যা) পাওয়া যাবে। একারণে সাধারণ পাটিগণিতে উক্ত রাশিমালাটি অর্থহীন এবং তাই কোন সংখ্যাকে শূন্য দ্বারা বিভাজন অসংজ্ঞায়িত। এছাড়াও কোন সংখ্যাকে শূন্য দ্বারা গুণ করলে গুণফল শূন্য হওয়ায় +/ রাশিমালাটিও অসংজ্ঞায়িত হবে; এবং একে সীমা আকারে প্রকাশ করলে এটি হবে অনির্ধার্য গঠন। ঐতিহাসিকভাবে, প্রাচীন লেখালেখিসমূহের মধ্যে ১৭৩৪ সালে প্রকাশিত জর্জ বার্কলির দ্য অ্যানালিস্ট (গোস্টস অব ডিপার্টেট কোয়ান্টিটিস) গ্রন্থে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র পরিমাপ নির্ণয় সম্পর্কিত এক আলোচনায় অর্থাৎ ক্যালকুলাসে গাণিতিকভাবে +a/ এর মান নির্ধারণে অসম্ভাবনার কথা উল্লেখ করা হয়।[] সুতরাং, লেখা যায়,
+a/ = অসংজ্ঞায়িত

Graph showing the diagrammatic representation of limits approaching infinity
লেখচিত্রটি y = 1/x ফাংশনকে নির্দেশ করছে। যখন x ডান দিক থেকে 0 এর নিকটবর্তী হয় তখন y অসীম হয়। আবার যখন x বাম দিক থেকে 0 এর নিকটবর্তী হয় তখন y ঋণাত্মক অসীম হয়।

রেইম্যানীয় গোলক এবং প্রক্ষিপ্তভাবে সম্প্রসারিত বাস্তব রেখা র ন্যায় কিছু কিছু গাণিতিক ব্যবস্থাপনার ( structure) ক্ষেত্রে +a/ সংজ্ঞায়িত। তা সত্ত্বেও, এধরনের গাণিতিক পরিকাঠামো পাটিগণিতের প্রতিটি সাধারণ সূত্রের (গাণিতিক ক্ষেত্রের স্বীকার্য) সাথে সন্তোষজনক নয়।

কম্পিউটিংয়ের ক্ষেত্রে শূন্য দ্বারা ভাগ করার চেষ্টার ফলে প্রোগ্রামে ভুল ঘটতে পারে। প্রোগ্রামিংয়ের পরিবেশ ও শূন্য দ্বারা বিভাজিত সংখ্যার ধরনের উপর নির্ভর করে IEEE_754 ফ্লোটিং পয়েন্ট স্টান্ডার্ডের আলোকে ধনাত্মক বা ঋণাত্মক অসীমতা তৈরি হতে পারে। এটি এক্সেপশনএরর মেসেজ তৈরি করে এবং প্রোগ্রামকে ধ্বংস (terminate) করা সহ বিশেষ এক প্রকার NaN মানের আবির্ভাব ঘটায় তথা অসীম সংখ্যক লুপ বা কোন ক্রাশের মাধ্যমে কম্পিউটারকে হ্যাং করে ফেলে।

মৌলিক পাটিগণিত

সম্পাদনা

মৌলিক পাটিগণিত স্তরের আলোকে ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে ভাগ বলতে মূলত কোন বস্তু সামগ্রীর একটি সেটকে সমান সমান অংশে আলাদা বা বিভাজিত করাকেই বোঝানো হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, দশটি আতার কথা বিবেচনা করা যাক যেগুলো পাঁচটি শিশুর মাঝে সমানভাবে বিতরণ করতে হবে। এতে প্রতিটি শিশু পাবে +১০/ = ২ টি আতা। একইভাবে এই দশটি আতা কেবলমাত্র একটি শিশুকে বণ্টন করে দেওয়া হলে শিশুটি পাবে +১০/ = ১০ টি আতা।

তাহলে, বরাবরের মত দশটি আতা শূন্য সংখ্যক শিশুর মধ্যে বণ্টন করা হলে প্রত্যেক শিশু কয়টি আতা পাবে? অর্থাৎ শূন্য দ্বারা ভাগের ক্ষেত্রে ভাগফল কী হবে? সমস্যাটি জোড়ালো করার জন্য প্রশ্নটির নির্দিষ্ট কিছু শব্দকে পিনপয়েন্ট করে দেওয়া যেতে পারে। এই প্রশ্ন সংশ্লিষ্ট সমস্যাটি হল “কখন”। কোন ক্রমেই ১০ টি আতাকে “কেউ না” এর মাঝে বিতরণ করা সম্ভব নয়। অর্থাৎ যাদের মধ্যে বিতরণ করতে হবে তারাই যদি না থাকে তবে বিতরণ করা অবান্তর বা অসম্ভব ব্যাপার ছাড়া কিছুই নয়। একারণে অন্ততপক্ষে মৌলিক পাটিগণিতে +১০/ কে হয় অর্থহীন, অন্যথায় অসংজ্ঞায়িত বলা হয়।

যদি, ৫ টি আতা এবং ২ টি শিশুর কথা বলা হয় তবে সমস্যাটি "সমানভাবে বণ্টিত" হবে। ৫টি বস্তুকে ২ টি অংশে পূর্ণসংখ্যায় বণ্টনের ক্ষেত্রে, হয় একটি অংশের বস্তু সংখ্যা অপর অংশের থেকে বেশি হবে, অথবা এই বণ্টনে ভাগশেষ একটি বস্তু অবশিষ্ট থাকবে যাকে লেখা হয় +/ = ২ অবশেষ ১। অথবা, একটি আতা কেটে অর্ধেক করার মাধ্যমে এই ৫ টি আতা এবং ২ টি শিশুর সমস্যাটি সমাধান করা যেতে পারে যা আমাদেরকে ভগ্নাংশের (+/ = ২+/) ধারণার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। অন্যদিকে ৫ টি আতা এবং ০ শিশুর সমস্যাটিকে "ভাগ" এর অর্থ বা শর্তকে সমর্থন (সংরক্ষণ) করে এমন কোন পদ্ধতিতে সমাধান করা সম্ভব নয়।

মৌলিক বীজগণিতের আলোকে শূন্য দ্বারা ভাগকে ভিন্ন দৃষ্টিকোণে ব্যাখ্যা করা যায়। এক্ষেত্রে শূন্য দ্বারা ভাগকে গুণন প্রক্রিয়া ব্যবহার করে পরীক্ষণ বা চিহ্নিত করা যেতে পারে। উপরের +১০/ উদাহরণটির ক্ষেত্রে = +১০/ ধরা যাক, যেখানে একটি অশূন্য সংখ্যা। এখানে , দশ ভাগ শূন্য এর সমান হওয়ায় দেখা যাচ্ছে এবং শূন্য এর গুণফল হবে দশ। কিন্তু এমন কোন এর অস্তিত্ব নেই যাকে শূন্য দ্বারা গুণ করলে দশ (অথবা অন্য কোন অশূন্য সংখ্যা) পাওয়া যাবে। যদি = +১০/ এর পরিবর্তে = +/ হয়, তাহলে “ এমন কোন সংখ্যা যাকে শূন্য দ্বারা গুণ করলে শূন্য পাওয়া যায়?” এই প্রশ্নটির জন্য প্রতিটি সন্তোষজনক হবে।

প্রাচীন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও প্রচেষ্টা

সম্পাদনা

ব্রহ্মগুপ্ত (৫৯৮ - ৬৬৮ খ্রিস্টাব্দ) আনুমানিক ৬২৮ খ্রিস্টাব্দে ব্রাহ্মস্ফুটসিদ্ধান্ত রচনা করেন। ব্রাহ্মস্ফুটসিদ্ধান্ত প্রাচীনতম লিখিত পুস্তক যেখানে শূন্যকে তার মর্যাদা প্রদানপূর্বক একটি সংখ্যা হিসেবে আলোচনা করা হয়েছে; এখানে শূন্যের সাথে সম্পর্কযুক গাণিতিক ক্রিয়াদির সংজ্ঞাও আলোচনা করা হয়েছে।[] তবে লেখক তার এ গ্রন্থে শূন্য দ্বারা ভাগকে সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করতে পারেননি, তার দেওয়া সংজ্ঞাকে সহজেই বীজগাণিতিক অর্থহীনতার নজির হিসেবে প্রমাণ করা যায়। ব্রহ্মগুপ্তের মতে,

একটি ধনাত্মক বা ঋণাত্মক সংখ্যাকে শূন্য দ্বারা ভাগের ফল একটি ভগ্নাংশ যার হর হবে শূন্য। শূন্যকে ধনাত্মক বা ঋণাত্মক যেকোন সংখ্যা দ্বারা ভাগ করলে ভাগফল হয় শূন্য হবে নতুবা শূন্য লব এবং সসীম সংখ্যার হরযুক্ত একটি ভগ্নাংশ হবে। শূন্যকে শূন্য দ্বারা ভাগের ফল শূন্য।

৮৩০ খ্রীস্টাব্দে মহাবীর তার গণিত সার সংহিতা গ্রন্থে ব্রহ্মগুপ্তের ত্রুটি সংশোধনের ব্যর্থ প্রচেষ্টা করেন। এখানে তিনি লিখেন: কোন সংখ্যাকে শূন্য দ্বারা ভাগ করলে তা অপরিবর্তিত থাকে। []

বীজগণিত

সম্পাদনা

কিছু সীমাবদ্ধতা থাকলেও মৌলিক পাটিগণিতে পূর্ণাঙ্গ সংখ্যার (ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যা) যোগ, বিয়োগ, গুণ ও ভাগের বেলায় এ চারটি মৌলিক গাণিতিক প্রক্রিয়া, যে সব সংখ্যার উপর এই প্রক্রিয়াদি প্রয়োগ করা হয় সেই সব সংখ্যা নিয়ে গঠিত ক্ষেত্রের সম্প্রসারণে একটি সহায়ক কাঠামো হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই ক্ষেত্রে, কোন পূর্ণাঙ্গ সংখ্যা হতে অপর একটি পূর্ণাঙ্গ সংখ্যা বিয়োগ করা সম্ভবপর হলে সংখ্যাগুলোর ক্ষেত্রটি অবশ্যই পূর্ণ সংখ্যার সমগ্র সেটে সম্প্রসারিত হবে যাতে ঋণাত্মক পূর্ণ সংখ্যাসমূহ এতে অঙ্গীভূত (incorporate) হয়। একইভাবে, একটি পূর্ণ সংখ্যাকে আরেকটি পূর্ণ সংখ্যা দ্বারা ভাগ করা সম্ভবপর হলে সংখ্যাগুলোর ক্ষেত্রটি অবশ্যই মূলদ সংখ্যায় সম্প্রসারিত হবে। সংখ্যা ব্যবস্থার এই ক্রমবর্ধমান সম্প্রসারণ কালে, পুরাতন সংখ্যার উপর "বর্ধিত প্রক্রিয়াসমূহ" (extended operations) প্রয়োগের বেলায় সতর্কতা অবলম্বন করা হয় যাতে এই "বর্ধিত প্রক্রিয়াসমূহ" ভিন্ন কোন ফল উৎপাদন না করে। ঢিলেঢালাভাবে বলা যায়, পূর্ণাঙ্গ সংখ্যার বিন্যাসে শূন্য দ্বারা ভাগের কোন অর্থ না থাকায় এবং এটি অসংজ্ঞায়িত হওয়ায় এই বিন্যাসটি যে বাস্তব সংখ্যা এমনকি জটিল সংখ্যায় সম্প্রসারিত হয় তার সত্যতা বের হয়ে আসে।

এই গাণিতিক প্রক্রিয়াগুলো প্রয়োগ করা যেতে পারে এমন সংখ্যা রাজ্য বা ক্ষেত্রটির সম্প্রসারণ ঘটায় এই গাণিতিক প্রক্রিয়াগুলোকে কীভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয় সেক্ষেত্রেও পরিবর্তন ঘটে। যেমন— পূর্ণ সংখ্যার রাজ্যে বিয়োগ প্রক্রিয়াটিকে কোন মৌলিক প্রক্রিয়া হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। কারণ বিয়োগকে ঋণাত্মক (চিহ্ন যুক্ত) সংখ্যার যোগ দ্বারা প্রতিস্থাপন করা যায়।[] একইভাবে, মূলদ সংখ্যা অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে যখন সংখ্যা রাজ্যের সম্প্রসারণ ঘটানো হয় তখন একটি সংখ্যার ভাগ অপর একটি নির্দিষ্ট মূলদ সংখ্যার গুণ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। পর্যবেক্ষণ বা দৃষ্টিভঙ্গির এই পরিবর্তন অব্যাহত রাখলে, “কেন আমরা শূন্য দ্বারা ভাগ করতে পারি না?” প্রশ্নটি “একটি মূলদ সংখ্যার হর কেন শূন্য হতে পারে না বা মূলদ সংখ্যা কেন শূন্য হর রাখতে পারে না?” এই প্রশ্নে রূপান্তরিত হয়। পুনঃনিরীক্ষিত এই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে আমাদের যথাযথভাবে মূলদ সংখ্যার সংজ্ঞার ঘনিষ্ঠ পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন।

বাস্তব সংখ্যার ক্ষেত্র গঠনের আধুনিক পদ্ধতি বা ব্যবস্থায় মূলদ সংখ্যা, সংখ্যার ক্রমবিকাশ ধারার একটি মধ্যবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে প্রতীয়মান হয় যা সেট তত্ত্বে পাওয়া যায়। স্বাভাবিক সংখ্যা (শূন্য সহ সকল ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যা) প্রথমত একটি স্বতঃসিদ্ধ মূল নীতি যেমন— পীনোর স্বতঃসিদ্ধ ব্যবস্থা উপর প্রতিষ্ঠিত, পরে এটি পূর্ণ সংখ্যার বলয়ে সম্প্রসারিত। পরবর্তী পদক্ষেপে, মূলদ সংখ্যাকে পূর্বেই প্রতিষ্ঠিত বা সিদ্ধ হয়েছে কেবল মাত্র এমন সেট ও গাণিতিক প্রক্রিয়ার (যথাঃ যোগ, গুণ) মাধ্যমে এবং পূর্ণ সংখ্যার মাধ্যমে সংজ্ঞায়িত করা। পূর্ণ সংখ্যার ক্রম যুগল (ordered pair) {(a, b)} (যেখানে b ≠ 0) এর সেট এই সেটে (a, b) ≃ (c, d) এর মাধ্যমে একটি দ্বিমিক সম্পর্ককে সংজ্ঞায়িত করে যখন কেবলমাত্র ad = bc হয় (?? আরও ব্যাখ্যা প্রয়োজন)। এই সম্পর্ককে একটি সমতুল্যতার অন্বয় হিসেবে দেখা হয় এবং পরে এর সমতুল্যতার শ্রেণিসমূহকে মূলদ সংখ্যা রূপে সংজ্ঞায়িত করা হয়। আনুষ্ঠানিক প্রমাণে আছে যে এই সম্পর্কটি একটি সমতুল্য সম্পর্ক যার দ্বিতীয় স্থানাঙ্কটি শূন্য নয় এমন শর্ত আবশ্যক। (ট্রানজিটিভিটি যাচাইয়ের জন্য).[বঙ্গানুবাদ প্রয়োজন][][][]

উপরের ব্যাখ্যাটি অনেক কারণেই খুবই বিমূর্ত এবং প্রায়োগিক হতে পারে, কিন্তু যদি মূলদ সংখ্যার অস্তিত্ব এবং বৈশিষ্ট্যকে মৌলিক পাটিগণিতের মতই সাধারণভাবে ধরে নেওয়া হয়, তবে শূন্য দ্বারা ভাগ যে “কারণ”টির দরুন অনুমোদিত হয় না সেই “কারণ”টি দৃষ্টির অন্তরালে চলে যায়। তা সত্ত্বেও, এ ব্যবস্থাটিকে একটি অ-কঠোর ন্যায্যতা দেওয়া যেতে পারে।

আমরা যে সংখ্যা ব্যবস্থাগুলো ব্যবহার করি (যেমন— পূর্ণ, মূলদ, বাস্তব ইত্যাদি) সেসবের উপর এই বৈশিষ্ট্যগুলি নির্ভর করে। যদি b ≠ 0 হয় তবে +a/b = c সমীকরণটি a = b × c এর সমতুল্য হবে। +a/ কে একটি সংখ্যা যেমন— c ধরা হলে এখানে অবশ্যই a = 0 × c = 0 হবে। সে যাই হোক না কেন, এক্ষেত্রে c একক সংখ্যাটিকে অবশ্যই 0 = 0 × c সমীকরণ দ্বারা নির্ধারণ করতে হবে, কিন্তু প্রত্যেক সংখ্যা এই সমীকরণকে চরিতার্থ করে। ফলে আমরা +/ এর সাংখ্যিক মান নির্ধারণ করতে পারি না।[]

গুণনের বিপরীত হিসেবে ভাগ

সম্পাদনা

বীজগণিতে ধারণা অনুসারে ভাগ প্রক্রিয়াটি ব্যাখ্যা করতে গেলে বলতে হয়, ভাগ হল গুণের বিপরীত। উদাহরণ স্বরূপ[]

 

যেহেতু 2 হল নির্দিষ্ট মান তাই নিচের সমীকরণের অজানা রাশিটি সত্য:

 

এবার এই গাণিতিক রাশিমালাটি দেখা যাক —  

এখন একে সত্য হতে হলে এর জন্য নিচের সমীকরণের অজানা রাশিটির মান খুঁজে বের করা প্রয়োজন:  

কিন্ত এমন কোন সংখ্যা নেই যাকে 0 গুণ করলে 0 হবে না। অর্থাৎ যেকোন সংখ্যাকে শূন্য দ্বারা গুণের ফল শূন্য। যার ফল স্বরূপ সমীকরণটির সমাধান দেয় এরূপ কোন সংখ্যা নেই।

পুনরায় এই রাশিমালাটি বিবেচনা করা যাক—  

একইভাবে একে সত্য হতে হলে নিচের সমীকরণের অজানা রাশিটির মান খুঁজে বের করা প্রয়োজন:  

যেহেতু যেকোন সংখ্যাকে 0 গুণ করলে 0 হবে তাই একটি একক সংখ্যা যাকে +/ এর মান রূপে গ্রহণ যায় তা ব্যতিত যেকোন সংখ্যার জন্য এই সমীকরণের সমাধান পাওয়া যাবে।

সাধারণত একটি একক মানকে এমন কোন ভগ্নাংশে বরাদ্দ করা যায় না যেখানে ভগ্নাংশটির হর 0 । সুতরাং মানটি সংজ্ঞায়িত থেকে যায়।

ফ্যালাসিসমূহ

সম্পাদনা

শূন্য দ্বারা ভাগের ব্যাপারটি বাধ্যতামূলকভাবে একটি অননুমোদিত বা অ-স্বীকৃত কারণ হওয়ায়, কখনো এটি ঘটে গেলে অনেক অযৌক্তিক ফলাফল হাজির হয় (যেমন: গাণিতিক ফ্যালাসি)। সাংখ্যিক রাশি নিয়ে গণনা করার সময় শূন্য দিয়ে ভাগ করার কোন অবৈধ প্রচেষ্টা হচ্ছে কিনা তা সহজে সনাক্ত করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, নিম্নের গণনাটি বিবেচনা করা যাক।

প্রথমেই নিচের পূর্বানুমান দুটি বিবেচনা করা যাক —   এই পূর্বানুমান দুটির ভিত্তিতে নিচের গাণিতিক প্রকাশটি সত্য:  

উভয়পক্ষকে শূন্য দ্বারা ভাগ করে পাই —  

এই ক্ষেত্রটির সরল রূপ নিয়ে পাই —  

শূন্য ব্যতিত ভিন্ন কোন সংখ্যা দ্বারা ভাগ করার ব্যাপারটির যে বৈশিষ্ট্য ‘0 কে 0 দ্বারা ভাগের’ ক্ষেত্রেও তা একই ধরে নেওয়ার মাধ্যমে এখানে ভেলকিটি ঘটেছে।

তদুপরি, বীজগাণিতিক যুক্তির[] ক্ষেত্রে শূন্য দ্বারা ভাগের বিষয়টি প্রচ্ছন্ন রেখেও অসঙ্গতিপূর্ণ প্রমাণের মাধ্যমে ফ্যালাসি ঘটানো যায়। যেমন: নিচের 1 = 2 ভেলকিবাজিটি:[১০]

ধরি, 1 = x

উভয় পক্ষে x দ্বারা গুণ করে পাই —   উভয় পক্ষ থেকে 1 বিয়োগ করে পাই —   পুনরায় উভয় পক্ষকে x − 1 দ্বারা ভাগ করে পাই —   যার সাধারণ রূপ হবে —   কিন্তু x = 1 হওয়ায় ফলে আমরা পাব—

 

এই গণনাতে x − 1 = 0 হওয়ায় শূন্য দ্বারা ভাগের ব্যাপারটি প্রচ্ছন্নভাবে বা ছদ্মাবরণে ঘটেছে যেহেতু x = 1

বিশ্লেষণ

সম্পাদনা

বাস্তব রেখায় সম্প্রসারণ

সম্পাদনা

a/b সীমার b শূন্যের (0) নিকটবর্তী হয় বিবেচনায় নিলে প্রাথমিকভাবে a/0 কে সংজ্ঞায়িত করা সম্ভবপর বল মনে হয়।

যে কোন ধনাত্মক a এর জন্য সীমার ডান পক্ষ হবে:   এবং সীমার বাম পক্ষ হবে:  

সুতরাং,   অসংজ্ঞায়িত এবং ঋণাত্মক a এর জন্যও সীমাটি অসংজ্ঞায়িত।

উপরন্তু, সীমাকে অনুপাত আকারে বিবেচনা করে সেটা থেকে 0/0 এর জন্য প্রতিপাদন করা যেতে পারে এরূপ সুস্পষ্ট কোন সংজ্ঞা নেই। নিচের সীমাটির তাই অস্তিত্ব নেই:  

নিম্নোক্ত আকারের ফাংশনটির ক্ষেত্রে x যখন 0 এর নিকটবর্তী হয় তখন f(x) এবং g(x) উভয় ফাংশনই 0 এর নিকটবর্তী হয়। f এবং gএদুটি নির্দিষ্ট ফাংশনের উপর নির্ভরশীল এই ফাংশনের সীমাগুলো যেকোন বাস্তব অথবা অসীম মানের সমান হতে পারে অথবা সীমার অস্তিত্ব আদৌ নাও থাকতে পারে।  

উদাহরণস্বরূপ নিচের ফাংশনটি বিবেচনা করা যাক:  

প্রাথমিকভাবে এটি অনির্ধারিত হবে মনে হলেও এর সীমা বিদ্যমান। কারণ ফাংশনটি থেকে আমরা পাই —  

সুতরাং এর সীমার অস্তিত্ব রয়েছে এবং তা   এর সমান।

উল্লেখিত ঘটনগুলো এবং এদের অনুরূপ অন্যান্য ঘটনাগুলো থেকে দেখা যায় যে,   রাশিমালাটি লিমিট হিসেবে সুসংজ্ঞায়িত হতে পারে না।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Cajori, Florian (১৯২৯), "Absurdities due to division by zero: An historical note", The Mathematics Teacher, 22 (6): 366–368, জেস্টোর 27951153 .
  2. Kaplan, Robert (১৯৯৯)। The Nothing That Is: A Natural History of Zero । New York: Oxford University Press। পৃষ্ঠা 68–75আইএসবিএন 978-0-19-514237-2 
  3. The Nothing That Is: A Natural History of Zero,pp. 68–75; Robert Kaplan (1999), Oxford University Press, New York; ISBN 9780195142372
  4. Klein 1925, পৃ. 24
  5. Schumacher 1996, পৃ. 149
  6. Hamilton 1982, পৃ. 19
  7. Henkin এবং অন্যান্য 2012, পৃ. 292
  8. Bunch 1997, পৃ. 14
  9. Prindle, Anthony; Prindle, Katie (২০০৯)। E-Z Math  (revised সংস্করণ)। Barron's Educational Series। পৃষ্ঠা 35আইএসবিএন 978-0-7641-4132-4  Extract of page 35
  10. Bunch 1997, পৃ. 15
  • Bunch, Bryan (১৯৯৭) [1982], Mathematical Fallacies and Paradoxes, Dover, আইএসবিএন 978-0-486-29664-7 
  • Klein, Felix (১৯২৫), Elementary Mathematics from an Advanced Standpoint / Arithmetic, Algebra, Analysis, Hedrick, E. R.; Noble, C. A. কর্তৃক অনূদিত (3rd সংস্করণ), Dover 
  • Hamilton, A. G. (১৯৮২), Numbers, Sets, and Axioms, Cambridge University Press, আইএসবিএন 978-0521287616 
  • Henkin, Leon; Smith, Norman; Varineau, Verne J.; Walsh, Michael J. (২০১২), Retracing Elementary Mathematics, Literary Licensing LLC, আইএসবিএন 978-1258291488 
  • Patrick Suppes 1957 (1999 Dover edition), Introduction to Logic, Dover Publications, Inc., Mineola, New York. আইএসবিএন ০-৪৮৬-৪০৬৮৭-৩ (pbk.). This book is in print and readily available. Suppes's §8.5 The Problem of Division by Zero begins this way: "That everything is not for the best in this best of all possible worlds, even in mathematics, is well illustrated by the vexing problem of defining the operation of division in the elementary theory of arithmetic" (p. 163). In his §8.7 Five Approaches to Division by Zero he remarks that "...there is no uniformly satisfactory solution" (p. 166)
  • Schumacher, Carol (১৯৯৬), Chapter Zero : Fundamental Notions of Abstract Mathematics, Addison-Wesley, আইএসবিএন 978-0-201-82653-1 
  • Charles Seife 2000, Zero: The Biography of a Dangerous Idea, Penguin Books, NY, আইএসবিএন ০-১৪-০২৯৬৪৭-৬ (pbk.). This award-winning book is very accessible. Along with the fascinating history of (for some) an abhorrent notion and others a cultural asset, describes how zero is misapplied with respect to multiplication and division.
  • Alfred Tarski 1941 (1995 Dover edition), Introduction to Logic and to the Methodology of Deductive Sciences, Dover Publications, Inc., Mineola, New York. আইএসবিএন ০-৪৮৬-২৮৪৬২-X (pbk.). Tarski's §53 Definitions whose definiendum contains the identity sign discusses how mistakes are made (at least with respect to zero). He ends his chapter "(A discussion of this rather difficult problem [exactly one number satisfying a definiens] will be omitted here.*)" (p. 183). The * points to Exercise #24 (p. 189) wherein he asks for a proof of the following: "In section 53, the definition of the number '0' was stated by way of an example. To be certain this definition does not lead to a contradiction, it should be preceded by the following theorem: There exists exactly one number x such that, for any number y, one has: y + x = y"