শাহজাদা মেহমেদ
শাহজাদা মেহমেদ (উসমানীয় তুর্কী: شهزاده محمد; ১৫২১ – ৬ নভেম্বর ১৫৪৩) হলেন সুলতান সুুুুলেমান ও হুররাম সুলতানের সন্তান।[১] আরবি শব্দ মুুুুহাম্মদ শব্দটি তুুর্কি উচ্চারণে মেহমেদ হয়েছে। তিনি ১৫২১ অব্দে কন্সট্যান্টটিনোপলে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হুররাম সুলতানের প্রথম সন্তান।
শাহজাদা মেহমেদ | |
---|---|
জন্ম | ৩১ অক্টোবর ১৫২২ তোপকাপি প্রাসাদ, ইস্তাম্বুল, উসমানীয় সাম্রাজ্য |
মৃত্যু | ৭ নভেম্বর ১৫৪৩ মানিসা প্রাসাদ, মানিসা, উসমানীয় সাম্রাজ্য | (বয়স ২১–২২)
সমাধি | শাহজাদা মসজিদ, ইস্তাম্বুল |
বংশধর | হুমাশাহ সুলতান |
রাজবংশ | উসমানীয় |
পিতা | প্রথম সুলাইমান |
মাতা | হুররাম সুলতান |
ধর্ম | ইসলাম |
জীবন
সম্পাদনাশাহজাদা মেহমেদ ১৫২২ সালে ইস্তাম্বুলের তোপকাপি প্রাসাদে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, এবং তখন তার বাবা রোডস অবরোধ (১৫২২) এর অভিযানে ছিলেন । তিনি তাঁর জন্ম শিবিরে উদযাপিত হয় এবং সদকা বিতরণ করেন[২]।
মেহমেদকে তার ভাই শাহজাদা মোস্তফা এবং শাহজাদা সেলিমের সাথে একত্রে ২ জুন ১৫৩০ সালে সুন্নত করা হয়েছিল [৩]।
১৫৩৭ সালে তিনি করফুর অবরোধে তাঁর বাবার সাথে যোগ দেন। এবং ১৫৪১ সালে তিনি এবং তাঁর ভাইয়েরা শাহজাদা সেলিম এবং শাহজাদা বায়েজিদ তার বাবার সাথে বুদা অবরোধ করেছিলেন। মেহমেদ ১৫৪৪ সালে বাবার পাশাপাশি সফল এস্জেটারগম অবরোধেও অংশ নিয়েছিলেন।
তার সৎ ভাই শাহজাদা মুস্তাফাকে সেখান থেকে আমাসিয়ায় প্রেরণ করার পরে ১৫৪১ সালে মানিসার সানজাক শাসন করার জন্য তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।নিয়োগের আগে, শাহাজাদা মোস্তফাকে ১৬ জুন, ১৫৪১ সালে আমাস্যায় প্রেরণ করা হয়েছিল। ১৫ ই নভেম্বর, ১৫৪২ খ্রিস্টাব্দে মানিসা পৌঁছানোর পরই মেহমাদকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজ্যপাল হিসাবে দায়িত্ব শুরু হয়[৪]। এ থেকে বোঝা যায় যে সুলাইমান মুস্তাফার চেয়ে মেহমেদের পক্ষে কতটা অনুগ্রহ করেছিলেন এবং মতনৈক্য আছে যে সুলতান মেহমদকে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হিসাবে দেখাতে চেয়েছিলেন।তাঁর মা অবশ্য তাঁর প্রাদেশিক পদে তাঁর সাথে যাননি। মেহমেদের একমাত্র সন্তান হুমাশাহ সুলতান মানিসায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন (১৫৪০ বা ১৫৪১)।
এভলিয়া চেলেবী মেহমেদকে "মোস্তফার চেয়েও আরও দুর্দান্ত গুণাবলীর রাজপুত্র হিসাবে বর্ণনা করেছেন। তাঁর অসাধারণ বুদ্ধি এবং সূক্ষ্ম বিচার বিবেচনা ছিল। সুলাইমান ইচ্ছা করেছিলেন যে তিনি তাঁর উত্তরসূরি হবেন, কিন্তু তাঁর সেই ইচ্ছে পূরণ হয়নি[৫]।
মৃত্যু
সম্পাদনাশাহজাদা মেহমেদ সম্ভবত ১৫৪৩ সালের ৬ নভেম্বর মানিসার মানিসা প্রাসাদে মারা যান, সম্ভবত গুটি বসন্তে। লক্ষণীয় যে, একই বছর মেহমেদ এস্পটারগমের অবরোধে তার বাবার সাথে যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন। তার মৃত্যুর পরে তার মরদেহ দাফনের জন্য ইস্তাম্বুলে নেওয়া হয়েছিল। পরে ১৫৫৪ সালে, তার ছোট ভাই সেলিম (ভবিষ্যতের দ্বিতীয় সেলিম) তার স্থলে মাनिসার গভর্নর পদে নিযুক্ত হন।
এরপরে, সুলাইমান তার মৃত্যুর স্মরণে ইস্তাম্বুলের বিখ্যাত রাজ-স্থপতি মিমার সিনানকে দিয়ে শাহজাদা মসজিদ নির্মাণ করিয়েছিলেন, মসজিদটি পরে মেহমেদের চূড়ান্ত বিশ্রামস্থল হয়। এছাড়াও, সুলাইমান তাঁর প্রিয় ছেলের জন্য এক অভিনব পদ্য রচনা করেছিলেন এবং তা "রাজপুত্রদের মধ্যে সর্বাধিক শ্রেষ্ঠ, আমার সুলতান মেহমেদ" এই পংক্তির মাধ্যমে কবিতাটি শেষ করেছিলেন যার মোট সংখ্যাগত মান তার ছেলের মৃত্যুর বয়স। [৬][৭] মেহেমেদের মৃত্যুর পর তার স্মরণে নির্মিত মসজিদ পৃষ্ঠপোষকতা করে যে, প্রথম সুলেমান তাকে বড় সুযোগ দেওয়ার কারণটি পরবর্তীকালে উসমানীয়দের এই বিশ্বাস করার কারণও হতে পারে যে, মেহমেদ সবথেকে প্রিয় ব্যক্তি ছিলেন। সুলাইমান কেবল মেহমেদের জন্য একটি মসজিদই চালু করেননি, বরং ইস্তাম্বুলেও তার সমাধি নির্মাণ করেছেন যা (প্রথা অনুসারে শাহজাদাদের বুরসায় দাফন করা হয়) প্রতিফলিত করে যে সুলতান তার পুত্রকে কতটা ভালোবাসতেন।
জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে
সম্পাদনাডাবিংকৃত তুর্কি টেলিভিশন ধারবাহিক সুলতান সুলেমানে, মেহমেদ চরিত্রে অভিনয় করেছেন তুর্কি অভিনেতা Gürbey İleri.
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Peirce, Leslie P. (১৯৯৩)। The Imperial Harem: Women and Sovereignty in the Ottoman Empire । New York: Oxford University Press। আইএসবিএন 0-19-508677-5।
- ↑ "Yelçe, Nevin Zeynep (2009). The Making of Sultan Süleyman: A Study of Process/es of Image-Making and Reputation Management. p. 256."।
- ↑ "Akbar, M.J (May 3, 2002). The Shade of Swords: Jihad and the Conflict between Islam and Christianity. Routledge. pp. 88. ISBN 978-1-134-45258-3."।
- ↑ "Sağır 2016, p. 922."।
- ↑ "Fisher. Suleyman and His Sons". Coursesa.matrix.msu.edu. Archived from the original on 2016-03-09. Retrieved 2017-02-26."।
- ↑ "SULEYMAN THE MAGNIFICENT - POET"। Web.archive.org। ২০০৬-০৩-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-২৬।
- ↑ "Archived copy"। ২০১৬-০৪-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-১৬।