লোকমান আহমদ আমীমী
মাওলানা লোকমান আহমদ আমীমী একজন বাংলাদেশি আলেম, ভাষা সৈনিক, বহু ভাষাবিদ, অনুবাদক ও লেখক।[১][২] তিনি ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি মোহাম্মদপুর ঈদগাহ মাঠ জামে মসজিদের খতিব ছিলেন। এছাড়াও ঢাকা রেসিডেনসিয়েল মডেল কলেজের ধর্মীয় শিক্ষক ছিলেন। তিনি হাফিজ ইবনুল কাইয়িম কর্তৃক রচিত রূহ বিষয়ক গ্রন্থ ‘সিররূর রূহের’ বাংলায় অনুবাদ করেছিলেন, বাংলাদেশে ব্যাপক পাঠ্য, যা বিভিন্ন মাদ্রাসার সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।[৩]
লোকমান আহমদ আমীমী | |
---|---|
জন্ম | ১৯২৮ বোয়ালিয়া গ্রাম, বরুড়া থানা, কুমিল্লা জেলা |
মৃত্যু | ২৮ জানুয়ারি, ২০২০ পপুলার হাসপাতাল, ধানমন্ডি |
জাতীয়তা | বাংলাদেশি |
মাতৃশিক্ষায়তন | ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা |
পরিচিতির কারণ | ভাষা আন্দোলন কর্মী, খতিব, শিক্ষক |
উল্লেখযোগ্য কর্ম |
|
জীবনী
সম্পাদনাআমীমী ১৯২৮ সালে কুমিল্লা জেলার বরুড়া থানার বোয়ালিয়া গ্রামে এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।[৪]
তিনি ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছিলেন, ১৯৫২ সালে এই মাদ্রাসা পড়াকালীন ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তার ভাষা আন্দোলনের অবদানের কথা ১৯৯০ সালে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত অমর একুশে স্মারক গ্রন্থে উল্লেখ আছে। পরবর্তীতে আহমদ রফিক ও এম আর মাহবুব সম্পাদিত রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ইতিহাস ও অনুষঙ্গ গ্রন্থের দ্বিতীয় খন্ডে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে তার অবদানের কথা উল্লেখ আছে।[৫]
তিনি ১৯৬৩ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মোহাম্মদপুর ঈদগাহ মাঠ জামে মসজিদে ইমাম ও খতিব ছিলেন। এবং ঢাকা রেসিডেনসিয়েল মডেল কলেজে ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষক ছিলেন।
২০২০ সালের ২৮ জানুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
অবদান
সম্পাদনাআমীমী বাংলা, ইংরেজি, আরবি, ফারসি ও উর্দু ভাষায় পান্ডিত্য অর্জন করেছিলেন। আরবি ভাষার লেখক হাফিজ ইবনুল কাইয়িম কর্তৃক রচিত রূহ মূল্যবান গ্রন্থ ‘সিররূর রূহ’ তিনি বাংলায় অনুবাদ করেন। মুফতি আমিমুল ইহসানের লিখিত একাধিক গ্রন্থ উর্দু কিতাব বাংলায় অনুবাদ করেন এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হলো:
উল্লেখযোগ্য অনুবাদ কর্ম
- সিররূর রূহ (অনুবাদ নাম রুহের রহস্য)
- হাদিয়াতুল মুসাল্লিন (অনুবাদ নাম: মুসলমানদের জন্য উপহার)
- তারিখে ইলমে হাদিস (অনুবাদ নাম: হাদিস চর্চার ইতিহাস)[৬]
- তারিখে ইলমে ফিকহ (অনুবাদ নাম: ফিকহ চর্চার ইতিহাস)
- মি. হামফ্রের ডায়েরীটি[৭]
অনুবাদ কর্মের পাশাপাশি তিনি পত্রিকায় কলাম লিখতেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারনা শাকের হোসাইন শিবলি কর্তৃক সম্পাদিত ‘একাত্তরের চেপে রাখা ইতিহাস, আলেম মুক্তিযোদ্ধার খোঁজে’ গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে।[৮]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Hasan, Rakib (২০২২-০২-২১)। "ভাষা আন্দোলনের খণ্ডচিত্র : ইসলামপন্থীদের ভূমিকা"। Fateh24 (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-১৩।
- ↑ আব্দুর রহমান আনওয়ারী, ড. মুহাম্মদ (২০০৩)। মাতৃভাষা আন্দোলন ও ইসলাম। ঢাকা: মুহাম্মদ ব্রাদার্স। পৃষ্ঠা ৯০–৯২।
- ↑ "Lokman Ahmed Amimi Books - লোকমান আহমদ আমীমী এর বই | Rokomari.com"। www.rokomari.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-১৩।
- ↑ আইন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ব্যারিষ্টার আহমদ ইহসানুল কবীর। "স্মৃতির স্মরণে: ভাষা সৈনিক ও ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা লোকমান আহমদ আমীমী"। বাংলা (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-০৯-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-১৩।
- ↑ Notebook (২০২১-০৪-২০)। "বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস ১৮৩০ থেকে ১৯৭১ | ড. মোহাম্মদ হাননান"। সংগ্রামের নোটবুক (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-১৩।
- ↑ ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত বইয়ের তালিকা (পিডিএফ)। ঢাকা: ইসলামিক ফাউন্ডেশন। পৃষ্ঠা ০৪।
- ↑ admin। "ব্রিটিশ গোয়েন্দা অফিসার মি. হামফ্রের ডায়েরী হামফ্রেজ মেমোরিজ, মূল: মি. হামফ্রে"। Anjuman-E- Rahmania Ahmadia Sunnia Trust (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-০৯-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-১৩।
- ↑ "চোখ বুজলে ভেসে ওঠে মর্মান্তিক সব দৃশ্য | কালের কণ্ঠ"। Kalerkantho। ২০১৭-০২-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-১৩।