লাটাগুড়ি
লাটাগুড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তরাঞ্চলের জলপাইগুড়ি জেলায় নেওড়া নদীর তীরে অবস্থিত একটি ছোট শহর। ৩১ নং জাতীয় সড়কের উপরে অবস্থিত গরুমারা জাতীয় উদ্যানের খুব কাছে এই শহরের অবস্থিতি। শিলিগুড়ি থেকে সড়কপথে এর দূরত্ব ৮০ কিলোমিটার।[১] তাছাড়া রেলপথে নিউ মাল জংশনে নেমেও সড়কপথে ৩০ কিলোমিটার দূরে লাটাগুড়ি পৌঁছানো যায়।
লাটাগুড়ি লাটাগুড়ি | |
---|---|
Location in West Bengal, India | |
স্থানাঙ্ক: ২৬°৪২′২৩″ উত্তর ৮৮°৪৫′৫৮″ পূর্ব / ২৬.৭০৬২৮৩° উত্তর ৮৮.৭৬৬০৮৫° পূর্ব | |
দেশ | India |
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
জেলা | জলপাইগুড়ি |
ভাষা | |
• সরকারি | বাংলা ভাষা, ইংরেজি ভাষা |
সময় অঞ্চল | IST (ইউটিসি+5:30) |
PIN | ৭৩৫২১৯ |
টেলিফোন কোড | +৯১-৩৫৬১- |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | IN-WB |
যানবাহন নিবন্ধন | WB |
কাছাকাছি শহর | দক্ষিণে ময়নাগুড়ি / উত্তরে চালসা |
লোকসভা আসন | জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্র |
বিধানসভা আসন | মাল |
ওয়েবসাইট | jalpaiguri |
পর্যটন
সম্পাদনাপ্রকৃতি পর্যটনকে ভিত্তি করে উত্তরবঙ্গের পর্যটন মানচিত্রে বর্তমানে অন্যতম গন্তব্যস্থান হিসেবে লাটাগুড়ির নাম বিবেচিত হয়ে থাকে। গরুমারা ও চাপরামারি বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্যে প্রবেশ করার জন্য অনুমতিপত্র এই লাটাগুড়িতে অবস্থিত বন বিভাগের অফিস থেকেই সংগ্রহ করতে হয়।[২] চাপরামারি বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্যটি লাটাগুড়ি থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এছাড়া এই শহরে একটি "প্রকৃতি তথ্যকেন্দ্র" (Nature Interpretation Center) রয়েছে, যেখানে স্থানীয় বিভিন্ন প্রাণী ও উদ্ভিদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংরক্ষিত আছে। এখানে একটি ডিয়ার পার্ক ও ছোটখাটো কিছু প্রদর্শনীও আছে। পর্যটকদের সুবিধার্থে লাটাগুড়িতে বেশ কিছু ছোট ছোট রেস্তোরাঁ, ধাবা ও কিছু থাকার হোটেল, রিসর্ট ও পর্যটন আবাসও গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে অরণ্য হোটেলটির বুকিং পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন বিভাগ থেকে করা যায়।[২] লাটাগুড়ি থেকে সড়কপথে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে মূর্তি নদীও তার নির্জন সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত।
লাটাগুড়িকে কেন্দ্র করে পর্যটন আকর্ষণ বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে এবং ডুয়ার্সের লোক সংস্কৃতিকে জনপ্রিয় করে তুলতে গত কয়েক বছর ধরে লাটাগুড়িতে শুরু হয়েছে উত্তরবঙ্গ লোকসংস্কৃতি উৎসব ও ডুয়ার্স প্রকৃতি পর্যটন মেলা। একই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে লাটাগুড়ির প্রাকৃতিক শোভা বিশ্বের মানুষের কাছে তুলে ধরে আরও বেশি সংখ্যক পর্যটক টানতে ২০১৭ সালের ৮ - ১০ এপ্রিল একটি লাটাগুড়ি কার্নিভালেরও আয়োজন করা হয়েছে।[৩]
অর্থনীতি
সম্পাদনা১৯৮০ পর্যন্ত লাটাগুড়ির অর্থনীতি মূলত কাঠের ব্যবসার উপর নির্ভরশীল ছিল। সে' সময় লাটাগুড়িতে ১৫টি শ মিল ছিল, এছাড়াও ছিল একটি প্লাইউডের কারখানা। রেলের স্লিপার ও বিদ্যুতের খুঁটিও তখন লাটাগুড়ি থেকে সরবরাহ করা হত। কিন্তু ১৯৮০ সালে বন সংরক্ষণ আইন চালু হওয়ায় এই কাঠের ব্যবসা যথেষ্টই মার খায়। মিলগুলি বন্ধ হয়ে যায়, শ্রমিকরা কাজ হারায়। লাটাগুড়ির অর্থনীতি এই বদ্ধদশা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পরবর্তীকালে পর্যটন ব্যবসা, বিশেষত প্রকৃতি পর্যটন (ইকো ট্যুরিজম) ব্যবসাকে আঁকড়ে ধরে। অতীতের মিলমালিকেরা অনেকেই রিসর্ট খুলে বসেন। ২০১১ সালের এপ্রিল মাসের হিসেব অনুযায়ী এখানে অন্তত ৩৩টি বেসরকারি পর্যটন আবাস গড়ে ওঠে। বর্তমানে এলাকার অনেক যুবকই গাড়ি কিনে পরিবহনের কাজে যুক্ত হয়ে পড়েছেন বা গাইডের কাজকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। এছাড়া পর্যটনকে কেন্দ্র করেই নানা হস্তশিল্প সামগ্রীর দোকান, অন্যান্য দোকান বাজারেরও বিরাট সম্প্রসারণ ঘটেছে লাটাগুড়িতে।[৪]
শিক্ষা
সম্পাদনাএলাকার ছেলেমেয়েদের পড়াশুনোর জন্য এখানে দু'টি উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে - একটি লাটাগুড়ি হাই স্কুল (কো-এড) ও অপরটি লাটাগুড়ি গার্লস' হাই স্কুল।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ গর্বের গরুমারা ২৪ ঘণ্টা, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১২, সংগৃহীত ২৮ মার্চ, ২০১৭।
- ↑ ক খ লাটাগুড়ি-মূর্তি-খুনিয়া-চাপরামারি বিকাশপিডিয়া সংগৃহীত ২৮ মার্চ ২০১৭।
- ↑ "পর্যটক টানতে তিনদিনের লাটাগুড়ি কার্নিভাল"[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] Eenadu India সোনার বাংলা, ২০ মার্চ, ২০১৭, সংগৃহীত ২৮ মার্চ, ২০১৭।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;North Bengal Tourism
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি