রোমান্টিকতাবাদ
রোমান্টিকতাবাদ বা রোমান্টিকবাদ (ইংরেজি ভাষায়: Romanticism) পশ্চিমা বিশ্বের একটি বুদ্ধিবৃত্তিক ধারা বা আন্দোলনের নাম যা সাহিত্য, সঙ্গীত, চিত্রকলা, স্থাপত্য, সমালোচনা এবং ইতিহাস-লিখনের ক্ষেত্রে নতুন ধারার সৃষ্টি করে। অষ্টাদশ শতকের শেষ দিক থেকে শুরু হয়ে ঊনবিংশ শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত এই আন্দোলন সক্রিয় ছিল। সাধারণ ক্লাসিসিজ্ম এবং নব্য-ক্লাসিসিজ্মের নিয়মানুবর্তিতা, সৌষ্ঠব, ভারসাম্য, আদর্শিকতা, স্থিরতা এবং যৌক্তিকতাকে বর্জনের মাধ্যমে রোমান্টিকতার উদ্ভব ঘটেছিল। এছাড়া একে আলোকপ্রাপ্তি এবং অষ্টাদশ শতকের যুক্তিবাদ ও ভৌত বস্তুবাদের সাধারণ প্রতিবাদ হিসেবেও আখ্যায়িত করা যায়। রোমান্টিকতার মূল প্রতিপাদ্য ছিল যুক্তিহীনতা, কল্পনা, স্বতঃস্ফূর্ততা, আবেগ, দৃষ্টিভঙ্গি এবং লৌকিকতা বহির্ভূত স্বজ্ঞা। রোমান্টিক সাহিত্যিকদের অনেকে সাদা খাতা সামনে রেখে মনে যা আসত তা-ই লিখে যেতেন। সাহিত্যের উৎস হিসেবে চেতন মনের তুলনায় অবচেতন মনকে প্রাধান্য দিতেন।
রোমান্টিক যুগ
সম্পাদনারোমান্টিক যুগ (১৭৮৫ - ১৮৩০) ইংরেজি সাহিত্য এর সবচেয়ে ক্ষণস্থায়ী কিন্তু বৈচিত্র্যময় যুগ। উইলিয়াম ব্লেইক কে এ যুগের অগ্রদূত হিসেবে ধরা হয় এবং তিনি ১৭৮৫ সালে তাঁর প্রথম লেখা প্রকাশ করেন বলে এ সালকে রোমান্টিক যুগের শুরু হিসেবে ধরা হয়। যদিও অনেক ক্ষেত্রে ১৭৯৮ সালে উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ ও স্যামুয়েল টেইলর কোলরিজ রচিত লিরিক্যাল ব্যালাড প্রকাশিত হওয়ায় এ সময়টিকেও এ যুগের শুরু হিসেবে গণ্য করা হয়। রানী ভিক্টোরিয়া যখন সিংহাসনে বসেন তার পূর্ব পর্যন্ত এর সময়কাল ধরা হয়। [১]
রোমান্টিক যুগের কবিগণ এবং এ যুগের সাহিত্যের বিষয়বস্তু
সম্পাদনা৬ জন কবিকে এ যুগের অন্যতম কবি হিসেবে অভিহিত করা হয়, তারা হলেনঃ উইলিয়াম ব্লেইক, উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ, স্যামুয়েল টেইলর কোলরিজ, জন কিটস, পার্সি বিশি শেলি এবং লর্ড বায়রন।
রোমান্টিসিজম বলতে মূলত প্রেমঘটিত ব্যাপারগুলোই বোঝানো হয় কিন্তু তা একটি ভুল ধারণা। রোমান্টিক যুগের সাহিত্য শুধুমাত্র প্রেমকে কেন্দ্র করে নয়, বরং তা বহুমাত্রিক। স্বতস্ফূর্ত ভাবের বহিঃপ্রকাশ, নৈসর্গিক রহস্যময় রূপবৈচিত্র্য, আধ্যাত্মিকতা, অতিপ্রাকৃতিক বিষয়বস্তু, ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ প্রভৃতি রোমান্টিক যুগের সাহিত্যে প্রাধান্য বিস্তার করেছে।[২]