রেবতী মোহন বর্মণ

বাঙালি সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবী

রেবতী মোহন বর্মণ (১৯০৫ - ৬ মে, ১৯৫২) বিংশ শতাব্দীর একজন সাম্যবাদী ধারার লেখক ও ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনকারী বিপ্লবী। তিনি বেশ কিছু পুস্তক রচনা করে বাংলাদেশ অঞ্চলে মার্কসবাদের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।

রেবতী মোহন বর্মণ
জন্ম১৯০৫
মৃত্যু৬ মে, ১৯৫২
আগরতলা, (বর্তমান ভারত ভারত)
নাগরিকত্ব ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)
 ভারত (১৯৫২ সাল পর্যন্ত)
মাতৃশিক্ষায়তনকলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
পেশালেখক, রাজনীতিবিদ
পরিচিতির কারণব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের নায়ক
উল্লেখযোগ্য কর্ম
লেনিন ও বলশেভিক পার্টি
রাজনৈতিক দলস্বাধীনতার পুর্বে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি, স্বাধীনোত্তর কালে পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি
আন্দোলনব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন
পিতা-মাতাহরনাথ বর্মণ

জন্ম ও শৈশব শিক্ষাজীবন

সম্পাদনা

রেবতী বর্মণ কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার শিমূলকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা হরনাথ বর্মণ ছিলেন একজন নামকরা আইনজীবী। ইংরেজদের প্রতি আনুগত্যের জন্য তিনি রায় উপাধিতে পান। ঢাকার পগোজ স্কুল এবং কুমিল্লার গভর্নমেন্ট হাইস্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন তিনি। ১৯২২ সালে কিশোরগঞ্জের আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। ঐ বছর প্রমোদরঞ্জন চক্রবর্তী এবং গৌরচন্দ্র মণ্ডলও তার সংগে একই নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছিলেন।[] ১৯২৮ সালে কৃতিত্বের সাথে এমএ পাশ করেন। তার আগে বিএ পরীক্ষায় কৃতিত্বের জন্য পেয়েছিলেন জগত্তারিণী পদক এবং পদক বিক্রির অর্থ দিয়ে সহপাঠীদের নিয়ে প্রকাশ করেছিলেন কিশোরদের মাসিক পত্রিকা ‘বেণু’।

কর্মজীবন

সম্পাদনা

সম্পন্ন ও ব্রিটিশ শাসকদরদী পরিবারের সন্তান হলেও রেবতী বর্মন সাম্যবাদী ও ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামে যোগ দিয়েছিলেন ছাত্রাবস্থায়। ১৯৩০-৩৮ সালে বিনা বিচারে জেলে অন্তরীন থাকেন। দেউলী জেলে বন্দী থাকাকালীন সময় তার শরীরে কুষ্ঠরোগের জীবাণু ঢুকিয়ে দেয়া হয়। জেলে থাকাকালীন সময়ে তিনি সমাজ বিবর্তণমূলক অসংখ্য গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি রচনা করেন যা পরে বই আকারে প্রকাশিত হয়। ১৯৩৯ সালে ন্যাশনাল বুক এজেন্সী প্রতিষ্ঠা করেন। উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলাবেলঘরিয়ায় থাকাকালীন শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তোলার কাজ শুরু করেন। এসময়ই তার শরীরে কুষ্ঠ রোগের প্রাদুর্ভাব হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পুলিশ তার উপর হুলিয়া জারি করে ও তিনি বাংলাদেশের ভৈরব উপজেলায় চলে যান।

মৃত্যু

সম্পাদনা

দেশভাগের পরে ১৯৫১ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কারণে তাকে বাধ্য হয়ে মাতৃভূমি ছেড়ে আগরতলা চলে আসতে হয়। ১৯৫২ সালের ৬ মে তারিখে আগরতলার কাছে মৃত্যুবরণ করেন রেবতী বর্মণ।

গ্রন্থসমূহ

সম্পাদনা

তার লিখিত বইগুলো হচ্ছেঃ

  • সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি (১৯৩৮),
  • মার্কস প্রবেশিকা (১৯৩৮),
  • কৃষক ও জমিদার (১৯৩৮),
  • সাম্রাজ্যবাদের সংকট (১৯৩৮),
  • হেগেল ও মার্কস (১৯৩৮),
  • ক্যাপিটাল ( মার্কসের ক্যাপিটালের বাংলায় লেখা সংক্ষিপ্তসার-১৯৩৮),
  • লেনিন ও বলশেভিক পার্টি (১৯৩৯),
  • Society and Its Development (1939),
  • Marxist View of Capital (1939),
  • সমাজের বিকাশ (১৯৩৯),
  • সোভিয়েট ইউনিয়ন (১৯৪৪),
  • শান্তিকামী সোভিয়েট (১৯৪৫),
  • অর্থনীতির গোড়ার কথা (১৯৪৫),
  • পরিবার-ব্যক্তিগত সম্পত্তি ও রাষ্ট্রের উৎপত্তি (অনুবাদ),
  • সমাজতন্ত্রবাদ-বৈজ্ঞানিক ও কাল্পনিক (অনুবাদ),
  • সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ (১৯৫২)।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৬৭৫

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা

Barman, Reboti Mohan বাংলাপিডিয়ায় রেবতী মোহন বর্মণ সম্পর্কে।