রাসমঞ্চ
রাসমঞ্চ ভারতীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার অন্তঃপাতী বিষ্ণুপুর শহরের একটি পুরাতাত্ত্বিক স্থাপনা। মল্লরাজা বীর হাম্বীর আনুমানিক ১৬০০ খ্রিষ্টাব্দে এই মঞ্চটি নির্মাণ করেন।[১] বৈষ্ণব রাস উৎসবের সময় বিষ্ণুপুর শহরের যাবতীয় রাধাকৃষ্ণ বিগ্রহ এখানে জনসাধারণের দর্শনের জন্য আনা হত।[১] ১৬০০ থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত এখানে রাস উৎসব আয়োজিত হয়েছে। বর্তমানে অবশ্য এখানে আর উৎসব হয় না।[২]
রাসমঞ্চ | |
---|---|
সাধারণ তথ্যাবলী | |
স্থাপত্যশৈলী | পিরামিড, বাংলা চালা স্থাপত্য, ইসলামি স্থাপত্য |
শহর | বিষ্ণুপুর |
দেশ | পশ্চিমবঙ্গ, ভারত |
বর্তমান দায়িত্ব | ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ |
সম্পূর্ণ | ১৬০০ |
গ্রাহক | বীর হাম্বীর |
স্থাপত্যশৈলী
সম্পাদনারাসমঞ্চ একটি অভিনব স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন।[১][৩] মঞ্চের বেদিটি মাকড়া বা ল্যাটেরাইট পাথরে নির্মিত।[১] বেদিটির উচ্চতা ১.৬ মিটার ও দৈর্ঘ্য ২৪.৬ মিটার।[১] মঞ্চটির মোট উচ্চতা ১০.৭ মিটার।[১] উপরের অংশ ইষ্টকনির্মিত।[৩] চূড়ার কাছে একটি স্বল্প পরিসর ছাদে গিয়ে উপরের অংশটি মিলিত হয়েছে।[১]
রাসমঞ্চের চূড়া পিরামিডাকৃতির।[১][৩] চূড়ার মূলে চারটি করে দোচালা ও প্রতি কোণে একটি করে চারচালা রয়েছে।[৩]
গর্ভগৃহটি দেওয়াল-দ্বারা আবৃত নয়।[৩] বরং রাসমঞ্চের গর্ভগৃহটিকে ঘিরে রয়েছে তিন প্রস্থ খিলানযুক্ত দেওয়াল।[১] বাইরের সারিতে খিলানের সংখ্যা ৪০।[২] এই খিলানগুলির গায়ে পোড়ামাটির পদ্ম ও পূর্ব দেওয়ালে বিষ্ণুপুরের গায়ক-বাদকদের স্মৃতি-অলংকৃত কয়েকটি টেরাকোটার প্যানেল রয়েছে। রাসমঞ্চটি বিষ্ণুপুরের প্রচলিত স্থাপত্যরীতি অনুসরণে নির্মিত হয়নি।[৩]
চিত্রশালা
সম্পাদনা-
রাসমঞ্চ (পূর্ব দিকের দৃশ্য)
-
পূর্বের বারান্দা
-
ভিতরের পথ
-
দক্ষিণের বারান্দা
-
পোড়ামাটির পদ্ম
পাদটীকা
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ বিষ্ণুপুর, এস এস বিশ্বাস, ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ, নতুন দিল্লি, ১৯৯২, পৃ. ২৩-২৪
- ↑ ক খ মল্লভূম বিষ্ণুপুর, মনোরঞ্জন চন্দ্র, দেজ পাবলিশিং, কলকাতা, ২০০৪, পৃ. ৬২২-২৮
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ বিষ্ণুপুরের টেরাকোটা মন্দির: ডার্করুম থেকে আলোয়, ঋত্বিক মল্লিক, প্রকাশন বিভাগ, কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক, ভারত সরকার, নতুন দিল্লি, ২০১০, পৃ. ২২