রাসবিহারী ঘোষ
স্যার রাসবিহারী ঘোষ (জন্ম ২৩ ডিসেম্বর ১৮৪৫ - মৃত্যু ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯২১) ছিলেন ভারতীয় রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, সমাজকর্মী এবং লোকহিতৈষী। স্যার রাসবিহারী ঘোষ এর জন্ম খণ্ডঘোষ গ্রামে হয়েছিল। পরে উনি উনার মামাবাড়িতে তোড়কোনা গ্রামে প্রারম্ভিক জীবন শুরু করেন।
রাসবিহারী ঘোষ | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯২১ | (বয়স ৭৫)
প্রতিষ্ঠান | ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশন, তোড়কোনা জগবন্ধু হাইস্কুল |
আন্দোলন | ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস |
প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনারাসবিহারী ঘোষ ২৩ ডিসেম্বর ১৮৪৫ সালে বাংলার প্রেসিডেন্সি পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ এলাকার খণ্ডঘোষ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৮৬০ সালে বাঁকুড়া হাই স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাশ করেন, এরপর ১৮৬৫ সালে তিনি কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে থেকে বিএ পাশ করেন। ১৮৬৬ সালে তিনি এমএ পরীক্ষায় ইংরেজিতে প্রথম স্থান অর্জন করেন। ১৮৬৭ সালে স্বর্ণপদকসহ আইন পাশ করে বহরমপুর কলেজে অধ্যাপনা করেন। ১৮৭১ সালে তিনি আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং ১৮৮৪ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ডক্টর অব ল'স ডিগ্রিতে সম্মানিত হন।[১][২]
রাজনৈতিক জীবন
সম্পাদনারাসবিহারী ঘোষ ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সদস্য হন। তিনি অগ্রগতির গভীর বিশ্বাসী ছিলেন কিন্তু যে কোন ফর্মের প্রগতিবাদী বিরোধিতাও ছিল। তিনি দুইবার ১৯০৭ সালে সুরাটে এবং ১৯০৮ সালে মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত কংগ্রেস অধিবেশনে সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেন।
রাসবিহারী ঘোষ বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য (১৮৯১-৯৪, ১৯০৬-১৯০৯) এবং ভারতীয় কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। ১৮৯৬ সালে নববর্ষ সম্মাননায় তিনি 'অর্ডার অফ দ্যা ইন্ডিয়ান এম্পায়ার'(সিআইই) এর সহচরী হিসাবে নিযুক্ত হন এবং ১৯০৯ সালে জন্মদিন সম্মাননায় 'অর্ডার অফ দ্যা স্টার অফ ইন্ডিয়া' (সিএসআই) এর সহচরী হিসাবে নিযুক্ত হন।[৩][৪] ১৪ই জুলাই ১৯১৫ সালে নাইট উপাধিতে সম্মানিত হন।[৫]
অবদান
সম্পাদনারাসবিহারী ঘোষ ১৮৭৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠাকুর আইন অধ্যাপক হয়ে ল'স অফ মর্টগেজ ইন ইন্ডিয়া সম্বন্ধে যেসব মূল্যবান বক্তৃতা দিয়েছিলেন সেইগুলি একত্রে মুদ্রিত হয়ে মর্টগেজ আইন সম্বন্ধে প্রমাণ গ্রন্থরূপে স্বীকৃতি হয়ে আছে। ১৮৮৪ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ডিএল ডিগ্রী অর্জন করেছিলেন।
তিনি তার ওকালতি জীবনে অর্জিত বেশিরভাগ অর্থ দেশ ও সমাজের কাজে মুক্তহস্তে দান করেন। তিনি ১৮৯৪ সালে তোড়কোনা জগবন্ধু স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।১৯১৩ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য দশ লক্ষ টাকা দান করেন। যাদবপুরে ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশন (এনসিই) প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি ১৩ লাখ টাকা দান করেন। পরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় রূপে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ওঠে। রাসবিহারী ঘোষ (এনসিই)র প্রথম সভাপতি ছিলেন।
২০১০ সালে স্যার রাসবিহারী ঘোষ মহাবিদ্যালয় খণ্ডঘোষ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক-এর উখরিদ গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয়। এছাড়াও তিনি তার গ্রামে স্কুল ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।[৬]
সম্মাননা
সম্পাদনাভারতবর্ষে রাসবিহারী ঘোষের অবদান বিবেচনা করে, তাহাকে সম্মান জানিয়ে কলকাতায় তার নামে একটি রাস্তার নামকরণ করা হয়।[৭] তার নামে নামকরণ করা রাসবিহারী এভিনিউ, যেটি কালীঘাট মেট্রো স্টেশন থেকে শুরু করে পূর্ব দিকে বালিগঞ্জ এবং গড়িয়াহাট পর্যন্ত চলে যায়।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Sinha, D P। "Past Presidents — Rashbehari Ghose"। Article। All India Congress Committee। ২ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০১৯।
- ↑ সংসদ বাঙালী চরিতাভিধান। ৩২ এ আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রোড, কলকাতা ৭০০০০৯: সাহিত্য সংসদ। ১৯৬০। পৃষ্ঠা ৪৯৩।
- ↑ "নং. 26695"। দ্যা লন্ডন গেজেট (ইংরেজি ভাষায়)। ২৪ মার্চ ২০১৯।
- ↑ "নং. 28263"। দ্যা লন্ডন গেজেট (সম্পূরক) (ইংরেজি ভাষায়)। ২৪ মার্চ ২০১৯।
- ↑ "নং. 29232"। দ্যা লন্ডন গেজেট (ইংরেজি ভাষায়)। ২৪ মার্চ ২০১৯।
- ↑ "Sir Rashbehari Ghosh Mahavidyalaya"। SRGM। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০১৯।
- ↑ P Thankappan Nair, A History of Calcutta's Streets, Publisher: Calcutta: Firma KLM, 1987