রানি পদ্মিনী
পদ্মিনী বা পদ্মাবতী ছিলেন ১৩-১৪ শতকের কিংবদন্তি ভারতীয় রানী। ১৭ শতকের বেশ কয়েকটি গ্রন্থে তার উল্লেখ পাওয়া যায়, যার প্রাচীনতম সূত্র পদ্মাবত, ১৫৪০ খ্রিষ্টাব্দে মালিক মুহম্মদ জায়সী কর্তৃক লিখিত মহাকাব্য।[১] মধ্যযুগের বাঙালি কবি আলাওল মহাকাব্যটিকে পদ্মাবতী নামে অনুবাদ করেছিলেন। এই মহাকাব্য হতে পদ্মাবতী সম্পর্কে জানা যায় যে, তিনি সিংহল রাজ্যের (শ্রীলঙ্কা) সুন্দরী রাজকন্যা ছিলেন।[ক] চিত্তৌর দূর্গের রাজপুত শাসক ছিলেন রতন সেন, যিনি হিরামন নামের একটি কথা বলা টিয়া পাখির কাছে তার রূপের কথা জানতে পারেন। এক রোমাঞ্চকর অভিযানের মাধ্যমে রতন সেন পদ্মাবতীকে জয় করে নেন, এবং বিয়ে করে চিত্তৌর নিয়ে আসেন। তৎকালিন দিল্লির সুলতান আলাউদ্দিন খিলজিও তার রূপের কথা শুনে তাকে দখল করার উদ্দেশ্যে চিত্তৌর আক্রমণ করেন। অবশেষে দুর্গ দখলে নেওয়া পর্যন্ত অবরোধের সময়কালে অনেক ঘটনা ঘটেছিলো। এই যুদ্ধে রতন সেন কুম্ভলনারের রাজা দেবপালের হাতে দ্বন্দ্বের কারণে নিহত হন, যিনি নিজেও পদ্মাবতীর রূপমুগ্ধ ছিলেন। আলাউদ্দিনের দুর্গ দখলের আগেই পদ্মাবতী এবং তার সঙ্গীরা জওহর (আত্মবলিদান) করেন নিজেদের সম্মান রক্ষার্থে। তার মৃত্যুর পর রাজপুত রাজা যুদ্ধরত অবস্থায় যুদ্ধক্ষেত্রেই মৃত্যুবরণ করেন।
রানি পদ্মিনী | |
---|---|
পদবি | মেবারের রানী |
দাম্পত্য সঙ্গী | রতন সেন (পদ্মাবতীতে; পরবর্তীতে কিছু কিছু কিংবদন্তি অনুযায়ী রতন সিং) |
ধর্ম | হিন্দুধর্ম |
বেশ কিছু কিংবদন্তি তাকে বর্ণনা করে এমন একজন হিন্দু রাজপুত রানী হিসেবে যে মুসলিম আগ্রাসনের হাত থেকে নিজের সম্মান রক্ষা করতে পেরেছিল। পরবর্তীতে সে একজন ঐতিহাসিক চরিত্র হিসেবে বিভিন্ন উপন্যাস, নাটক এবং টিভি সিরিয়ালে চিত্রিত হয়। কিন্তু ১৩০৩ সালে আলাউদ্দিন খিলজির চিত্তৌর আক্রমণ ঐতিহাসিক ঘটনা হলেও পদ্মিনী চরিত্রের কোনো ঐতিহাসিক প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায় না। বর্তমানের অধিকাংশ ইতিহাসবিদ তার বাস্তব অস্তিত্বের সম্ভাবনা নাকচ করে দেন।
জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে
সম্পাদনা- পদ্মাবত (২০১৮)
তথ্যসূত্র
সম্পাদনাপাদটীকা
সম্পাদনাসূত্রনির্দেশ
সম্পাদনা- ↑ Ramya Sreenivasan 2007, পৃ. 2।
- ↑ "ASI covers plaque outside Padmini Mahal that states Khilji saw the queen"। The Times of India। ২৭ নভেম্বর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০২১।
- ↑ "Padmavati row: Was Padmini a fictional character or a queen who enamoured Khilji?"। Hindustan Times। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০২১।
- ↑ ""Khilji did not attack Chittor for Padmini""। The Times of India। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
গ্রন্থসূত্র
সম্পাদনা- Aditya Behl (২০১২)। Love's Subtle Magic: An Indian Islamic Literary Tradition, 1379–1545। Oxford University Press। আইএসবিএন 978-0-19-514670-7।
- Catherine B. Asher; Cynthia Talbot (২০০৬)। India Before Europe। Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0-521-80904-7।
- Jason Freitag (২০০৯)। Serving empire, serving nation: James Tod and the Rajputs of Rajasthan। Leiden: Brill। আইএসবিএন 978-90-04-17594-5।
- Kishore Valicha (১৯৮০)। The Moving Image: A Study of Indian Cinema। Orient Blackswan। পৃষ্ঠা 124। আইএসবিএন 978-81-250-1608-3।
- Rajendra Ojha, সম্পাদক (১৯৯৮)। Screen World Publication presents National film award winners: 1953–1997। Screen World। পৃষ্ঠা 107।
- Ramya Sreenivasan (২০০৭)। The Many Lives of a Rajput Queen: Heroic Pasts in India C. 1500–1900। University of Washington Press। আইএসবিএন 978-0-295-98760-6।
- Ratnabali Chatterjee (১৯৯৬)। Madhusree Dutta; Flavia Agnes; Neera Adarkar, সম্পাদকগণ। The Nation, the State, and Indian Identity। Popular Prakashan। আইএসবিএন 978-81-85604-09-1। অজানা প্যারামিটার
|url=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - Lindsey Harlan (১৯৯২)। Religion and Rajput Women: The Ethic of Protection in Contemporary Narratives। University of California Press। আইএসবিএন 978-0-520-07339-5।
- Ram Vallabh Somani (১৯৭৬)। History of Mewar, from Earliest Times to 1751 A.D.। Mateshwari। ওসিএলসি 2929852।
- Shiri Ram Bakshi (২০০৮)। Architecture in Indian sub-continent। Vista। আইএসবিএন 978-81-89942-73-1।
- Subimal Chandra Datta (১৯৩১)। Narendra Nath Law, সম্পাদক। "First Saka of Citod"। The Indian Historical Quarterly। Caxton। 7।
- Syama Prasad Basu (১৯৬৩)। Rise and Fall of Khilji Imperialism। U. N. Dhur।
- V. K. Agnihotri, সম্পাদক (২০১০)। Indian History। Allied। আইএসবিএন 978-81-8424-568-4।