রাজিন্দর কৌর ভট্টাল
রাজিন্দর কাউর ভাট্টাল একজন ভারতীয় রাজনীতিবিদ। তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের রাজনীতির সাথে যুক্ত। তিনি পাঞ্জাবের চতুর্দশ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি এখনপর্যন্ত পাঞ্জাবের প্রথম ও একমাত্র নারী, যিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।[১] তিনি ভারতের অষ্টম নারী মুখ্যমন্ত্রী। ১৯৯২ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি পাঞ্জাবের লেহরা বিধানসভা আসন থেকে পাঁচবার নির্বাচিত হয়েছেন।তিনি পাঞ্জাব থেকে ভারতের প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন এবং মুখ্যমন্ত্রী পদের পরে তিনি প্রথম উপ-মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।
রাজিন্দর কাউর ভাট্টাল | |
---|---|
পাঞ্জাবের উপমুখ্যমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ 6 জানুয়ারী 2004 – 1 অক্টোবর 2007 | |
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ২১ নভেম্বর ১৯৯৬ – ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭ | |
পূর্বসূরী | হরচরণ সিং ব্রার |
উত্তরসূরী | প্রকাশ সিং বাদল |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ৩০ সেপ্টেম্বর ১৯৪৫ লাহোর, পাঞ্জাব, ব্রিটিশ ভারত |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
রাজনৈতিক দল | ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস |
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনা১৯৪৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ৩০ তারিখে অবিভক্ত ভারতের অবিভক্ত পাঞ্জাব প্রদেশের লাহোরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম হিরা সিং ভাট্টাল ও তার মাতার নাম হরনাম কাউর।
রাজনৈতিক জীবন
সম্পাদনা১৯৯৪ সালে, রাজিন্দর কাউর ভাট্টাল, চণ্ডীগড়ে রাজ্য সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন।[২] হরচরণ সিং ব্রারের মৃত্যুর পর তিনি পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত হন এবং রাজ্যের ইতিহাসে প্রথম ও ভারতের ইতিহাসে অষ্টম নারী হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।[১][৩] তিনি ১৯৯৬ সালের এপ্রিল মাস থেকে ১৯৯৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৯৬ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি রাজ্যের ক্ষুদ্র কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেন, যা ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়।[৪]
১৯৯৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে, অনুষ্ঠিত পাঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনে, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস পরাজিত হলে তাকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হয়। সে বছরের মে মাসে সিং রণধাওয়ার কাছ থেকে তিনি প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটিত সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন।[৫] এর পর, ১৯৯৮ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত, চৌধুরী জগজিৎ সিং এর দায়িত্ব লাভের পূর্বে, তিনি বিধানসভার কংগ্রেস সদস্যদের নেত্রী ছিলেন।[৬][৬] তার পরিবর্তে জগজিৎ সিং-এর দায়িত্ব গ্রহণের পিছনে অমরিন্দর সিং-এর হাত ছিল বলে বিশ্বাস করা হয়। ২০০৩ সালে, ভাট্টাল, অমরিন্দর সিংকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরানোর জন্য প্রকাশ্যে অঙ্গীকার করেন। তাকে সমর্থন জানান প্রাদেশিক কংগ্রেসের প্রায় ১২ জন এমএলএ।[৭] তাঁদের মধ্যকার এই বিরোধ কেন্দ্রীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব নিরসনের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু, প্রাথমিকভাবে, তিনি অমরিন্দর সিং-এর অপসারণ বাদে কোন ধরনের সমঝোতায় আসতে চান নি।[৮]
২০০৪ সালের জানুয়ারি মাসে, রাজিন্দর কাউর ভাট্টাল ডেপুটি চিফ মিনিস্টারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।[৯] তিনি জানান যে, কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর আহবানে তিনি এই দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।[১০] ২০০৭ সালের মার্চে তিনি প্রাদেশিক বিধানসভার কংগ্রেসী এমএলএ-দের নেত্রী নির্বাচিত হন।[১১] এসবের পরও তাঁদের মধ্যকার বিরোধ থেমে থাকে নি। এসময় আবারও কেন্দ্রীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব তাঁদের বিরোধ নিরসনের উদ্যোগ নেয়।[১২]
এই সময়ে তিনি আদালতে তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগের মোকাবেলা করেন।[১৩] তিনি এই সময়ে কৃষকদের জন্য ঋণ মকুব প্রকল্প চালুর জন্য সরকারকে চাপ প্রয়োগ করেন এবং এতে সফল হন।[১৪]
২০১৬ সালের নভেম্বরে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট শতদ্রু-যমুনা সংযোগ নিয়ে পাঞ্জাবের পরিবর্তে হরিয়ানার পক্ষে রায় দিলে পাঞ্জাব বিধানসভার বিরোধী দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের ৪২ জন সদস্য একসাথে বিধানসভা থেকে পদত্যাগ করেন, যাঁদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম।[১৫] বিষয়টি ভারতীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার জন্ম দেয়।
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনাতিনি সানগ্রুর জেলার লেহরাগাগার চাঙ্গালিওয়ালা গ্রামে লাল সিং সিধুর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির দুইজন সন্তান আছে, এক ছেলে ও এক মেয়ে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ Bouton, Marshall M.; Oldenburg, Philip (১৯৯৯)। India briefing: a transformative fifty years। M.E. Sharpe। পৃষ্ঠা 275। আইএসবিএন 978-0-7656-0339-5।
- ↑ "Teachers strike after one is slapped", The Gadsden Times, ২৭ মে ১৯৯৪
- ↑ "Mamata Banerjee to be India's 14th Woman CM", Outlook Magazine, ১৭ মে ২০১১, সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১১[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ Dhillon, G.S. (১৭ ডিসেম্বর ২০০১), "Aftermath of free power bonanza to Punjab farmers", The Tribune, সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১১[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "Randhawa quits Punjab Congress chief post", The Indian Express, ১৯ মে ১৯৯৭, সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১১
- ↑ ক খ "Bhattal questions her removal", The Indian Express, ২৮ নভেম্বর ১৯৯৮, সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১১
- ↑ "Bhattal to give signed list of disgruntled legislators", The Economic Times, ১২ ডিসেম্বর ২০০৩, ৩ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১১
- ↑ Dhaliwal, Sarbjit (১৭ ডিসেম্বর ২০০৩), "Dissidents may go on Bharat Darshan", The Tribune, সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১১
- ↑ "Bhattal deputy CM, expansion soon", The Times of India, ৭ জানুয়ারি ২০০৪, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১১
- ↑ "Bhattal speaks to reporters on Amarinder", The Times of India, ১০ জানুয়ারি ২০০৪, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১১
- ↑ "Bhattal elected leader of CLP", The Hindu, ১২ মার্চ ২০০৭, ১০ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১১
- ↑ Bains, Satinder (২৩ এপ্রিল ২০০৮)। "Congress high command brings truce between Amarinder, Bhattal"। Punjab Newsline। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১১।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "Badal Govt won't fight Bhattal clean chit", The Indian Express, ২ এপ্রিল ২০০৮, সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১১
- ↑ "Bhattal thanks Centre for debt relief scheme for farmers", The Hindu, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৮, ১০ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১১
- ↑ "SYL verdict: 42 Punjab Congress MLAs submit resignation", Indian Express, 11 November 2016