রাজগড় জেলা
রাজগড় জেলা হল মধ্য ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের একটি জেলা। রাজগড় শহরটি জেলার প্রশাসনিক সদর দফতর। মধ্যপ্রদেশের রাজগড় ভারত সরকার কর্তৃক নির্বাচিত একটি উন্নয়নশীল জেলা। জেলার বিস্তৃতি ৬১৫৪ কিলোমিটার২ এবং জনসংখ্যা ১,৫৪৫,৮১৪ (২০১১ আদমশুমারি)।[১] জেলাটি মালোবা মালভূমির উত্তর প্রান্তে অবস্থিত, এবং পার্বতী নদী জেলার পূর্ব সীমানা গঠন করেছে। এর পশ্চিম সীমানা গঠন করেছে কালী সিন্ধু নদী। জেলায় সাতটি তহশিল আছে, সেগুলি হল রাজগড়, খিলচিপুর, জিরাপুর, বিওরা, নরসিংগড়, সরঙ্গপুর এবং পাচোরে। জেলাটির উত্তরে রাজস্থান রাজ্য, এবং উত্তর-পূর্বে গুনা জেলা, পূর্বে ভোপাল, দক্ষিণ-পূর্বে সেহোর, এবং দক্ষিণ ও পশ্চিমে শাজাপুর। এটি ভোপাল বিভাগের অংশ। রাজগড় জেলায় ১৭২৮টি গ্রাম আছে।
রাজগড় জেলা | |
---|---|
মধ্য প্রদেশের জেলা | |
মধ্যপ্রদেশে রাজগড় জেলার অবস্থান মানচিত্র | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | মধ্যপ্রদেশ |
বিভাগ | ভোপাল |
সদর দপ্তর | রাজগড় (মধ্যপ্রদেশ) |
সরকার | |
• লোকসভা কেন্দ্র | রাজগড় |
আয়তন | |
• মোট | ৬,১৫৪ বর্গকিমি (২,৩৭৬ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ১৫,৪৫,৮১৪ |
• জনঘনত্ব | ২৫০/বর্গকিমি (৬৫০/বর্গমাইল) |
জনসংখ্যার উপাত্ত | |
• সাক্ষরতা | ৬১.২১ % |
সময় অঞ্চল | আইএসটি (ইউটিসি+০৫:৩০) |
প্রধান মহাসড়ক | এনএইচ -৩, এনএইচ -১২ |
ওয়েবসাইট | http://rajgarh.nic.in |
জেলাটি ১৯৪৮ সালের মে মাসে নির্মিত হয়েছিল। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে রাজগড়, নরসিংগড়, খিলচিপুরের প্রাক্তন দেশীয় রাজ্য অঞ্চল এবং দেওয়াস জুনিয়র ও সিনিয়র (সরঙ্গপুর তহসিল) এবং ইন্দোর (জিরাপুর তহশিল, এখন খিলচিপুর তহশিলের অংশ) রাজ্যের অংশগুলি।
রাজগড় শহর ছাড়াও, খিলচিপুর, কোটরাভিহার এবং নরসিংগড় এই জেলার আকর্ষণীয় স্থান।
ইতিহাস
সম্পাদনা১৯৪৮ সালের মে মাসে মধ্য ভারত গঠনের পরে রাজগড় জেলা গঠিত হয়েছিল। এর আগে বর্তমান জেলার অঞ্চল রাজগড়, নরসিংগড়, খিলচিপুর, দেওয়াস (সিনিয়র) দেওয়াস (জুনিয়র) এবং ইন্দোর রাজ্যগুলির মধ্যে বিভাজন করা হয়েছিল। রাজগড় ছিল উমত রাজপুত এবং মহান পরমারা বংশের শাখা দ্বারা শাসিত একটি মধ্যস্থতাকারী রাজ্যের সদর দফতর, তারা বংশপরম্পরায় দিল্লির সুলতান এবং মোগল সম্রাটের অধীনে একটি সনদ রাজ্য ভোগ করত। প্রথম রাজধানী ছিল দুপারিয়া, সেটি এখন শাজাপুর জেলায়। পরে এটি ডুঙ্গারপুরে স্থানান্তরিত করা হয় (রাজগড় থেকে ১৯ কিলোমিটার দূরে)। তারপরে রতনপুরে (নরসিংগড়ের ১৯ কিলোমিটার পশ্চিমে) নেয়ার পর আবার আগের জায়গায়। ঘন ঘন যাতায়াত করা মুঘল সেনাবাহিনীর ঝামেলা এড়াতে, এস্টেটের শাসক, মোহন সিং, ১৬৪০ খ্রিস্টাব্দে, ভিলের কাছ থেকে বর্তমান দিকটি অধিগ্রহণ করেন। আগে এর নাম ছিল ঝনঝনিপুর। অবশেষে তিনি ১৬৪৫ সালে সদর দপ্তর স্থানান্তর করেন এবং স্থানটির বর্তমান নাম দেন।
আকবরের রাজত্বকালে (১৫৫৬-১৬০৫) তাতানপুরের উদাজীকে একটি খিলাত ও একটি সনদ দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়, সরঙ্গপুর ছিল মালোবার সুবার সরকার। এর অধিক্ষেত্রটি বর্তমান সেহোর জেলার পশ্চিমাঞ্চল থেকে উজ্জয়িনী জেলার পূর্ব অংশ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। এর চব্বিশটি মহালের মধ্যে অনেকগুলিরই আসল নামটি থেকে গেছে, সেগুলি অষ্ট, তালাইন (তালেন), আগ্রা (আগর), বাজিলপুর (বিজিলপুর), ভোরসা, খিলজিপুর, জিরাপুর, সরঙ্গপুর, সোন্দারসি (সুন্দরসি), সোসনার (সুনার) সাজাপুর, কায়াথ এবং নবগাম (তারানা) হিসাবে চিহ্নিত। ১. ১৯০৮ সালে, রাজগড় রাজ্যটিকে সাতটি পরগনায় বিভক্ত করা হয়, সেগুলি ছিল নওলগঞ্জ, বিওড়া, কালীপীঠ, করণওয়াস, কোত্র, সিওগড় ও তালেন। নরসিংগড় রাজ্য চারটি পরগনায় বিভক্ত ছিল, সেগুলি হল হুজুর (নরসিংগড়), পাচোরে, খুজনার এবং ছাপেরা। রাজস্ব সংক্রান্ত বিষয় ও শাসন-সংক্রান্ত কাজের জন্য প্রত্যেক পরগনাকে একজন তহশিলদারের দায়িত্বে নিযুক্ত করা হয়। ২. খিলচিপুর রাজ্যটি তিনটি পরগনায় বিভক্ত ছিল। সরঙ্গপুর এখন যেমন আছে, তখনও, দেওয়াস (সিনিয়র) এবং দেওয়াস (জুনিয়র) রাজ্যের তহশিল সদর ছিল। জারাপুর পূর্ব ইন্দোর রাজ্যের মাহিদপুর জেলার একটি তহশিল ছিল। এটিকে এখন বিলুপ্ত করে খিলচিপুর তাহসিলে একীকরণ করা হয়েছে।
১৬৪৫ সালে রাজমাতার অনুমতিক্রমে, দেওয়ান আজব সিং রাজগড়ের পার্বত্য অঞ্চলের ভিলদের পরাজিত করেছিলেন এবং তিনি ১৭৪৫ সালে একটি প্রাসাদ নির্মাণ করেছিলেন, যার পাঁচটি প্রধান দরজা ছিল। সেগুলির নাম ছিল ইটওয়ারিয়া, ভুডওয়ারিয়া, সুরজপোল, পানারাদিয়া এবং নয়া দরজা। এখানে তিনটি খুব প্রাচীন মন্দির ছিল। সেগুলির নাম রাজ রাজেশ্বর মন্দির, চতুর্ভূজনাথজি মন্দির এবং নরসিংহ মন্দির, এবং এতে রাজমাতা এবং তাঁর ১৫ বছরের পুত্র রাওয়াত মোহন সিং নিরাপদে বাস করতেন। ঝনঝনিপুর একটি রাজধানী ছিল এবং এখানে একটি প্রাসাদ ছিল, যেজন্য এই স্থানটি রাজগড় নামে পরিচিত এবং এটি বিখ্যাত হয়ে উঠেছিল।
অর্থনীতি
সম্পাদনা২০০৬ সালে পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রক রাজগড়কে দেশের ২৫০টির মধ্যে একটি সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জেলা ঘোষণা করে (মোট ৬৪০টি জেলা)।[২] এটি মধ্য প্রদেশের ২৪টি জেলার মধ্যে একটি যা বর্তমানে পশ্চাৎপদ অঞ্চল অনুদান তহবিল কর্মসূচির (বিআরজিএফ) অনুদান প্রাপ্ত।[২] রাজগড় জেলাটি নীতি আয়োগের উন্নয়নশীল জেলা কার্যক্রমের ১০০ জেলার মধ্যে একটি জেলা।
জনসংখ্যার উপাত্ত
সম্পাদনাবছর | জন. | ব.প্র. ±% |
---|---|---|
১৯০১ | ২,৭৪,৬৭৬ | — |
১৯১১ | ৩,৪৭,৩১১ | +২.৩৭% |
১৯২১ | ৩,২৫,০৮২ | −০.৬৬% |
১৯৩১ | ৩,৬৬,৩০৩ | +১.২% |
১৯৪১ | ৪,০১,৯৩৩ | +০.৯৩% |
১৯৫১ | ৪,২৭,৫২৩ | +০.৬২% |
১৯৬১ | ৫,১৬,৮৭১ | +১.৯২% |
১৯৭১ | ৬,৪৪,৩৪৬ | +২.২৩% |
১৯৮১ | ৮,০১,৩৮৪ | +২.২১% |
১৯৯১ | ৯,৯২,৭৬৪ | +২.১৬% |
২০০১ | ১২,৫৪,০৮৫ | +২.৩৬% |
২০১১ | ১৫,৪৫,৮১৪ | +২.১১% |
সূত্র:[৩] |
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে রাজগড় জেলার জনসংখ্যা ১,৫৪৫,৮১৪,[১] যা সোয়াজিল্যান্ড বা মরিশাসের মতো দেশগুলির জনসংখ্যার চেয়ে বেশি।[৪] জনসংখ্যার ভিত্তিতে এটি ভারতে ৩২২তম স্থানে আছে (মোট ৬৪০ জেলার মধ্যে)।[৫] জেলার জনসংখ্যার ঘনত্ব ২৫১ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (৬৫০ জন/বর্গমাইল)।[১] এর জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২০০১ - ২০১১ এর দশকে ২৩.২৬% ছিল।[১] রাজগড়ে প্রতি এক হাজার পুরুষের জন্য ৯৫৬ জন মহিলা (যৌন অনুপাত) রয়েছে এবং সাক্ষরতার হার৬১.২১%।[১]
২০১১ সালের ভারতের আদমশুমারি অনুযায়ী, জেলার মোট জনগণের ৯৮.৯৫% তাদের প্রথম ভাষা হিসাবে হিন্দিতে এবং ০.৯৩% উর্দুতে কথা বলে।[৬]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ http://www.census2011.co.in/census/district/309-rajgarh.html
- ↑ ক খ Ministry of Panchayati Raj (৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯)। "A Note on the Backward Regions Grant Fund Programme" (পিডিএফ)। National Institute of Rural Development। ৫ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১১।
- ↑ Decadal Variation In Population Since 1901
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ http://www.census2011.co.in/district.php
- ↑ 2011 Census of India, Population By Mother Tongue
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- Rajgarh District web site
- Tirupati Darshan-Tamil Nadu District ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে
টেমপ্লেট:Districts of Madhya Pradesh টেমপ্লেট:Bhopal Division