রমাপ্রসাদ বণিক
রমাপ্রসাদ বণিক (২৮ ডিসেম্বর ১৯৫৪– ২৭ ডিসেম্বর ২০১০) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের, কলকাতায়, অবস্থিত একজন ভারতীয় বাঙালি থিয়েটার অভিনেতা, পরিচালক এবং নাট্যকার।[১][২]
রমাপ্রসাদ বণিক | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ২৭ ডিসেম্বর ২০১০ | (বয়স ৫৫)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
পেশা | অভিনেতা |
দাম্পত্য সঙ্গী | সুমিত্রা বণিক |
সন্তান | ২ |
রমাপ্রসাদ থিয়েটার, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনে কাজ করেছেন। তিনি খুব কম বয়সে তার কর্মজীবন শুরু করেন "পুতুল খেলা" দিয়ে, যা হেনরিক ইবসেনের, ‘এ ডলস হাউস’ এর রূপায়ণ ছিল। এই নাটকটি শম্ভু মিত্রের দ্বারা পরিচালিত। তাকে শম্ভু মিত্রের শিষ্য বলা হত। তিনি বহু থিয়েটার দলের জন্য অনেক নাটক রচনা করেছেন এবং অভিনয়ও করেছেন।[১]
কর্মজীবন
সম্পাদনাবিখ্যাত অভিনেতা অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় তরুণ রমাপ্রসাদ বণিক-কে দেখার পর বলেছিলেন, "এদের মত ছেলেদের দেখলে মনে হয় আরও কিছু বছর বাঁচি, যা জানি সব শিখিয়ে দিয়ে যাই"৷
রমাপ্রসাদ বণিকের নাটকে হাতেখড়ি মাত্র আট বছর বয়সে,বহুরূপী নাটকের দলে, শম্ভু মিত্র, তৃপ্তি মিত্র, কুমার রায়দের কাছে তার শিক্ষা লাভ৷ দীর্ঘদিন ধরে বহুরূপীর নানা প্রযোজনার কাজে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থেকে নিজেকে শিক্ষিত করেছিলেন রমাপ্রসাদ। ১৯৮১ সালে তিনি বহুরূপী ত্যাগ করেন,তিনি নিজের সমবয়সীদের সঙ্গে জোট বেঁধে চেনামুখ নামে থিয়েটার গ্রুপ তৈরি করেন।একের পর এক অসাধারণ নাটক আবিষ্ট রেখেছিল সিরিয়াস নাটকের দর্শকদের৷ ১৯৯১ সালে তিনি আরেকটি থিয়েটার গ্রুপ "থিয়েটার প্যাশন" তৈরি করেন।"[২]
রমাপ্রসাদ বণিক ব্যাংকের মোটা মাইনের চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন শুধু থিয়েটার করবেন বলে৷ কলকাতার নেহরু চিলড্রেনস মিউজিয়মে কিশোর-কিশোরীদের যে নাটকের কর্মশালা আছে,তার তিনি প্রাণপুরুষ ছিলেন৷ সেখানে তিনি ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের নাটক শেখাতেন। থিয়েটার,সিনেমা,টিভি এবং নিজের হাজার রকমের ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি সময় দিতেন এই নাটকের প্রশিক্ষণ শিবিরে৷ তিনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তৈরি করার স্বার্থে ব্যক্তিগত সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যকে উপেক্ষা করতেও পিছপা হতেন না৷ তিনি বৃহত্তর স্বার্থকে সবসময় ব্যক্তিগত স্বার্থের উপরে রাখতেন৷ নিজের শারীরিক অসুস্থতাকেও খুব একটা গুরুত্ব দেননি বরং কাজ করে গেছেন৷ শুধু থিয়েটার না, সিনেমা বা টিভিতে নানা ধরনের মজাদার এবং নেতিবাচক ভূমিকায় তার তুখোড় অভিনয় সব স্তরের দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় করেছিল তাকে৷
তিনি নিজের থিয়েটার গ্রুপের সাথে সম্পূর্ণভাবে জড়িত থাকলেও, তবুও পুরো থিয়েটার সম্প্রদায় তার উপর সর্বদা নির্ভর করত। অনেকবার অন্য দল তাকে তাদের জন্য নাটক লিখতে বা নির্দেশনা দেওয়ার প্রস্তাব দিলে, তিনি দ্বিধা করতেন না।
২০১০ সালে, মাত্র ৫৬ বছর বয়েসে রমাপ্রসাদ চলে গেলেন, রেখে গেলেন মা, স্ত্রী, দুই কন্যা আর অসংখ্য গুণগ্রাহী ভক্তদের৷ রমাপ্রসাদের আকস্মিক প্রয়াণে অনেকটাই নিঃস্ব হয়ে গেলে বাংলার থিয়েটার।[১]
কাজ
সম্পাদনাতিনি থিয়েটারে,চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনে অভিনয় করেছেন।
থিয়েটার
সম্পাদনা- পুতুল খেলা
- দশচক্র
- ছেঁড়া তার
- চার অধ্যায়
- যদি আরেকবার
চেনামুখের সাথে
সম্পাদনা- রানি কাহিনী
- ইচ্ছে গাড়ি
- আগন্তুক
- পাখি
- শরণাগত
থিয়েটার প্যাশনের সাথে
সম্পাদনা- কবি কথা
- ত্রাতা
- দি টেম্পেস্ট
- দহনশীল
- অন্তর বাহির
- স্পর্শক
- বাহবলেই ভাল
- অনুকূল
- অঙ্ক স্যার গোলাপি বাবু আর টিপু
- ইতি মৃতজন
নেহরু চিলড্রেন মিউজিয়ামের সাথে
সম্পাদনা- মহাবিদ্যা প্রাইমেরি
- একলা পাগল
- মাননীয় সত্য
- যদিও সন্ধ্যা
- অনুভব
- সরস্বতী সমীপেষু
- লাক্সেম্বার এর লক্ষ্মী
- ভালোবাসা
- পরিচয়
পূর্ব পশ্চিমসাথে
সম্পাদনা- অংশুমতি
- পটলবাবু ফিল্ম স্টার
অন্য থিয়েটারের সাথে
সম্পাদনা- আছে আছে স্থান
টাকি নাট্যের সাথে
সম্পাদনা- গুড মর্নিং নিশীকান্ত
ইফটার সাথে
সম্পাদনা- ঘাসিরাম কোতওয়াল
অযান্ত্রিকের সাথে
সম্পাদনা- প্রথম পথ
চলচ্চিত্র
সম্পাদনা- চলো পটল তুলি (২০১১)
- প্রাইভেট প্র্যাকটিস (২০১১)
- আলো ছায়া (২০১১)
- বাজিকর (২০১১)
- এক পলকে একটু দেখা (২০১১)
- পূর্ণ ব্রহ্ম শ্রী শ্রী হরিচাঁদ (২০১১)
- জুয়াড়ি (২০০৯)
- হচ্ছেটা কি? (২০০৮)
- সাধুবাবার লাঠি (২০০৮)
- আবার আসব ফিরে (২০০৪)
- অর্জুন আমার নাম (২০০৩)
- পাতালঘর (২০০৩)
- আমার মায়ের শপথ (২০০৩)
- নিশানা (২০০২)
- অধিকার (১৯৯২)
টৈলিভিশন ধারাবাহিক
সম্পাদনা- জন্মভূমি
- দ্রপদি
- দ্রৌপদী
- কনকানঞ্জলি
- ১৩ নং বাড়ির রহস্য (চরিত্র 'হুকাকাশী')
- মহাপ্রভু
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ "Theatre personality Ramaprasad Banik dead"। The Hindu। ২৯ ডিসেম্বর ২০১০। ২ জানুয়ারি ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০১২।
- ↑ ক খ "Eminent theatre personality Ramaprasad Banik dead"। Sify (Source: IANS)। ৩১ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০১২।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে রমাপ্রসাদ বণিক (ইংরেজি)