রফিক আল-তামিমি
মুহাম্মদ রফিক আল-তামিমি (আরবি: محمد رفيق التميمي; ১৮৮৯-১৯৫৭)[১] ২০তম শতকের একজন ফিলিস্তিন আরব শিক্ষাবিদ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। ১৯৪৫ সালে তিনি আরব উচ্চ কমিটিতে নিয়োগ পান। তিনি ফিলিস্তিনি আরব প্যারামিলিটারি স্কাউট আন্দোলন আল-নাজ্জাদার (১৯৪৫-৪৭) চেয়ারম্যান ছিলেন।
রফিক আল-তামিমি | |
---|---|
আল-ফাতাতের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ১৯১৮ – ১৯১৯ | |
আল-নাজ্জাদার চেয়ারম্যান | |
কাজের মেয়াদ ১৯৪৫ – ১৯৪৭ | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১৮৮৯ নাবলুস, উসমানীয় সাম্রাজ্য |
মৃত্যু | ১৯৫৭ (বয়স ৬৭–৬৮) |
জাতীয়তা | ফিলিস্তিনি আরব |
রাজনৈতিক দল | ফিলিস্তিন আরব পার্টি |
অন্যান্য রাজনৈতিক দল | আল-ফাতাত |
পেশা | আরব জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক কর্মী |
জীবিকা | প্রশাসনিক নেতা ও শিক্ষাবিদ |
কমিটি | আরব উচ্চ কমিটি |
ধর্ম | সুন্নি ইসলাম |
প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনাআল-তামিমি নাবলুসের একটি সুন্নি ভূস্বামী পরিবারের জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা তিনি সেখানে সম্পন্ন করেন। এরপর ইস্তানবুলের মারজান প্রিপারেটরি স্কুলে শিক্ষালাভ করেন। এখানে সাফল্য দেখানোর কারণে তিনি একটি প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়ে বিজয়ী হন। ফলে ইস্তানবুলের মুলকিয়া কলেজে ভর্তির সুযোগ পান। উসমানীয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তিনি পরিচিতি লাভ করেন এবং প্যারিসের সোরবনে পড়াশোনার সুযোগ পান। সেখান থেকে তিনি সাহিত্য ও শিক্ষা বিষয়ে ডিগ্রি লাভ করেন।[২]
রাজনৈতিক জীবন
সম্পাদনাবৈরুতের একটি সরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান হিসেবে তিনি উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রশাসনে যোগ দেন।[২] উসমানীয় সরকারের অধীনে কাজ করা সত্ত্বেও তিনি ও তার সহকর্মী আউনি আবদুল হাদি ১৯১১ সালে প্যারিসে আল-ফাতাত নামক গোপন সংগঠন গড়ে তোলেন। এই সংগঠনটি উসমানীয় সাম্রাজ্যের কাছ থেকে আরবদের স্বাধীনতা লাভে বিশ্বাসী ছিল।[৩] ১৬১৬ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময় উসমানীয় কর্মকর্তারা আল-তামিমিকে সাধারণ “গাইড বই” এর জন্য বৈরুত প্রদেশের জাবাল নাবলুস নামক দক্ষিণ অর্ধাংশের তথ্য সংগ্রহের দায়িত্ব দেন।[৪]
১৯১৮ সালের ডিসেম্বরে তিনি আল-ফাতাতের কেন্দ্রীয় কমিটিতে নির্বাচিত হন। ১৯১৯ সালের জুলাই মাসে আরব বিদ্রোহের পর আল-তামিমি ইজ্জত দারয়াজা, সাইদ হায়দার ও আল-ফাতাতের ভেতর দিককার অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে সিরিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসে একটি জোট গঠন করেন। এরা বৃহত্তর সিরিয়ায় যেকোনো ধরনের বিদেশী ম্যান্ডেটের (ব্রিটিশ বা ফরাসি) বিরোধিতা করেন। তাদের মতে এটি আরেকটি সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্য ছাড়া কিছু না।[৫]
১৯৪০ এর দশকের শুরুর দিকে আল-তামিমি ফিলিস্তিন আরব পার্টিতে যোগদান করেন এবং ১৯৪৫ সালে আরব উচ্চ কমিটিতে দলের প্রতিনিধিত্ব করেন।[৬] তিনি জাতীয় কমিটির জাফা শাখার চেয়ারম্যানের পদও পান। আল-তামিমি আরব উচ্চ কমিটির চেয়ারম্যান আমিন আল-হুসাইনির ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিতি পান।[৭] ১৯৪৬ সালে তিনি আল-নাজ্জাদা ও আল-ফুতুয়ার তরুণ আন্দোলনগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করতে কাজ করেন। ১৯৪৬ সালের মে মাসে আরব লীগ আরব উচ্চ কমিটিকে বিলুপ্ত করে। এর বদলে সৃষ্ট কায়রো ভিত্তিক আমিন আল-হুসাইনির অধীন আরব উচ্চ কার্যনির্বাহকদের মধ্যে তিনি স্থান পাননি। ব্লোদান সম্মেলনের পর ১৯৪৭ সালের ৫ জানুয়ারি জামাল আল-হুসাইনি কর্তৃক পুনর্গঠিত আরব উচ্চ কমিটিতে পুনরায় নিয়োগ পান।[৮] আল-তামিমি ১৯৪৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে আরব লীগে ফিলিস্তিনি প্রতিনিধি দলের সদস্য ছিলেন। আরব রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে ফিলিস্তিনিদের জন্য সামরিক, রাজনৈতিক ও নৈতিক সমর্থন লাভ তাদের লক্ষ্য ছিল।[৯]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনাগ্রন্থপঞ্জি
সম্পাদনা- Abu-Ghazaleh, Adnan (১৯৭৩), Arab cultural nationalism in Palestine during the British Mandate, Volume 34, Institute of Palestine Studies
- Doumani, Beshara (১৯৯৫), Rediscovering Palestine: Merchants and Peasants in Jabal Nablus, 1700-1900, University of California Press, আইএসবিএন 0-520-20370-4
- Khalaf, Issa (১৯৯১), Politics in Palestine: Arab factionalism and social disintegration, 1939-1948, SUNY Press, আইএসবিএন 0-7914-0708-X
- Levenberg, Haim (১৯৯৩), Military Preparations of the Arab Community in Palestine, 1945-1948, Routledge, আইএসবিএন 978-0-7146-3439-5
- Muslih, Muhammad Y. (১৯৮৯), The Origins of Palestinian Nationalism, Columbia University Press, আইএসবিএন 978-0-231-06509-2