রঙ্গনা হেরাথ

শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার

রঙ্গনা হেরাথ বা, এইচ. এম. আর. কে. বি. হেরাথ বা জ্যাক বা হেরাথ মুদিয়ানসেলাগ রঙ্গনা কীর্তি বান্দারা হেরাথ (সিংহলি: රංගන හේරත්; জন্ম: ১৯ মার্চ, ১৯৭৮) কুরুনেগালা এলাকায় জন্মগ্রহণকারী শ্রীলঙ্কার পেশাদার ক্রিকেটার। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলে তিনি মূলতঃ স্লো লেফট আর্ম অর্থোডক্স বোলিং করে থাকেন। বামহাতি স্পিনার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে সেরা বোলিং পরিসংখ্যানের অধিকারী তিনি। অধ্যয়ন করেছেন ময়ূরপদ সেন্ট্রাল কলেজ এবং মালিযাদেব কলেজে। বিখ্যাত স্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরনের অবসর গ্রহণের পর তাকে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট ইতিহাসে সেরা স্পিনার হিসেবে গণ্য করা হয়।

রঙ্গনা হেরাথ
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
হেরাথ মুদিয়ানসেলাগ রঙ্গনা কীর্তি বান্দারা হেরাথ
জন্ম (1978-03-19) ১৯ মার্চ ১৯৭৮ (বয়স ৪৬)
কুরুনেগালা, শ্রীলঙ্কা
ডাকনামকোটা, রাগায়া
উচ্চতা৫ ফুট ৫ ইঞ্চি (১.৬৫ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনস্লো বাম-হাত অর্থোডক্স স্পিন
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৭৮)
২২ সেপ্টেম্বর ১৯৯৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট৪ আগস্ট ২০১৬ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১২০)
২৫ এপ্রিল ২০০৪ বনাম জিম্বাবুয়ে
শেষ ওডিআই১ মার্চ ২০১৫ বনাম ইংল্যান্ড
ওডিআই শার্ট নং১৪
টি২০আই অভিষেক
(ক্যাপ ৩৯)
৬ আগস্ট ২০১১ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টি২০আই২৮ মার্চ ২০১৬ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
২০১০হ্যাম্পশায়ার
২০০৯সারে
১৯৯৮/৯৯-বর্তমানমুরস স্পোর্টস ক্লাব
১৯৯৬/৯৭-৯৭/৯৮কুরুনেগালা ইয়ুথ ক্রিকেট ক্লাব
২০১০হ্যাম্পশায়ার
২০১১-বর্তমানতামিল ইউনিয়ন ক্রিকেট ও অ্যাথলেটিক ক্লাব
২০১২বাসনাহিরা ক্রিকেট ডান্ডি
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই টি২০আই এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৭২ ৭১ ১৭ ২২৯
রানের সংখ্যা ১,২৩৯ ১৪০ ৪,০০৭
ব্যাটিং গড় ১৪.৪০ ৯.৩৩ ২.৬৬ ১৫.৯৬
১০০/৫০ ০/২ ০/০ -/- ০/১২
সর্বোচ্চ রান ৮০* ১৭* ৮০*
বল করেছে ২০,২৯৫ ৩,২৪২ ৩৬৫ ৪৯,৪৭৭
উইকেট ৩১৯ ৭৪ ১৮ ৮৮৬
বোলিং গড় ২৯.৪২ ৩১.৯১ ২০.৭২ ২৫.২১
ইনিংসে ৫ উইকেট ২৪ ৫৬
ম্যাচে ১০ উইকেট -
সেরা বোলিং ৯/১২৭ ৪/২০ ৫/৩ ৯/১২৭
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২১/– ১৪/– -/– ৯৭/–
উৎস: ক্রিকইনফো, ৬ আগস্ট ২০১৬

২৯ মে, ২০১৬ তারিখে মুত্তিয়া মুরালিধরন ও চামিন্দা ভাসের পর তৃতীয় শ্রীলঙ্কান হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ৩০০ উইকেট লাভ করেন।[]

'কোটা' ডাকনামে পরিচিত রঙ্গনা হেরাথ ১৯৯৯ সালে গালেতে অনুষ্ঠিত অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে টেস্ট খেলার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটাঙ্গনে প্রবেশ করেন। এছাড়াও, ২০০৪ সালে হারারে স্পোর্টস গ্রাউন্ডে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বপ্রথম অংশগ্রহণ করেন। আগস্ট, ২০১৫ সালে তিনি আইসিসি টেস্ট ক্রিকেট র‌্যাঙ্কিংয়ে ৮নং স্থানে অবস্থান করেন।[] এছাড়াও, ২০১২ সালে টেস্টে সর্বাধিকসংখ্যক উইকেট লাভকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন তিনি।[]

খেলোয়াড়ী জীবন

সম্পাদনা

২০০৯ সালে ইংরেজ ক্রিকেট মৌসুমে সারে দলের পক্ষ হয়ে কয়েকটি খেলায় অংশ নেন। এপ্রিল ২০১০ সালে হ্যাম্পশায়ারে যোগ দেন হেরাথ। সেখানে ২০১০ সালের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের প্রথমার্ধে খেলেন; শেষার্ধ্ব খেলেন সহ-খেলোয়াড় অজন্তা মেন্ডিস[]

২০০৯ সালে ৩ টেস্টের সিরিজে পাকিস্তানের বিপক্ষে স্ব-মূর্তি ধারণ করেন। ১৫ উইকেট লাভের পাশাপাশি প্রথম টেস্টে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেছিলেন হেরাথ।[] একই বছরে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত দুই টেস্টের সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৮ উইকেট লাভ করেন। এরফলে দল জয়লাভ করার পাশাপাশি সিরিজও জয়লাভে সক্ষম হয়।[]

ডিসেম্বর, ২০১১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টেস্টে ৯ উইকেট লাভ করেন তিনি ও ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন। এতে তার দল ২০৮ রানের বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয় যা দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্রীলঙ্কার প্রথম টেস্ট বিজয়রূপে পরিচিতি পায়।[]

কীর্তিগাঁথা

সম্পাদনা

১৬ আগস্ট, ২০১৪ তারিখে সফরকারী পাকিস্তান দলের বিপক্ষে সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে অনুষ্ঠিত ২য় টেস্টের ২য় ইনিংসে রঙ্গনা হেরাথ প্রথম বামহাতি স্পিনার হিসেবে নিজস্ব সেরা ৯ উইকেট লাভ করেন ১২৭ রানের বিনিময়ে।[] বিশ্বের সপ্তম স্পিনার হিসেবে এ নিয়ে তিনি ২০বার পাঁচ-উইকেট পান।[] এছাড়াও, মুত্তিয়া মুরালিধরন, শেন ওয়ার্নঅনিল কুম্বলের পর ৪র্থ দ্রুততম স্পিনাররূপে মিসবাহ-উল-হককে কট-আউট করে তিনি ৫৭ টেস্টে ২৫০ উইকেট পান।[১০] পাকিস্তানের বিপক্ষে কপিল দেবের ২৯ টেস্টে ৯৯ উইকেট লাভের পর ১৭ টেস্টে ৮৩ উইকেট নিয়ে তালিকায় বর্তমানে তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছেন। ঐ একই টেস্টে প্রথম পাকিস্তানি ফিল্ডার হিসেবে ইউনুস খান ১০০ ক্যাচ পান আব্দুর রেহমানের বলে তাকে আউট করে।[] মে, ২০১৬ সালে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২য় টেস্টে তিনি তার ৩০০তম টেস্ট উইকেট লাভ করেন।[১১] কিন্তু ঐ খেলায় ইংল্যান্ড দল ৯ উইকেটে জয়লাভ করে।

হ্যাট্রিক

সম্পাদনা

৫ আগস্ট, ২০১৬ তারিখে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ২য় টেস্টে হ্যাট্রিক করেন। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে তিনি অ্যাডাম ভোজেস, পিটার নেভিলমিচেল স্টার্ককে আউট করে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে ৪২তম হ্যাট্রিকের অধিকারী হন। নুয়ান জয়সার পর দ্বিতীয় শ্রীলঙ্কান ও লেগ স্পিনার হিসেবে প্রথম শ্রীলঙ্কান হিসেবে এ সফলতা লাভ করেন।[১২] ১৮৯২ সালে জনি ব্রিগসের পর দ্বিতীয় বামহাতি অর্থোডক্স বোলাররূপে হ্যাট্রিক করেন।[১৩] এছাড়াও, টেস্টে হ্যাট্রিক লাভকারী বয়োঃজ্যেষ্ঠ বোলার তিনি।[১৪]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Everyman Herath waddles into history"। ESPNCricinfo। ২৯ মে ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০১৬ 
  2. "Official Player Rankings"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  3. "Most wickets in 2012"। cricinfo। ২৮ ডিসেম্বর ২০১২। 
  4. "Hampshire sign Rangana Herath"। ৫ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০১৩ 
  5. "Pak vs SL Test Series, 2009, Most wickets"। Cricinfo। 
  6. "Sri Lanka vs New Zealand, 2nd Test (SSC), Aug 26–30 2009"। Cricinfo। 
  7. "Herath spins Sri Lanka to famous win"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ২০১১ 
  8. "Sangakkara, Jayawardene prosper after Herath nine, Sri Lanka v Pakistan, 2nd Test, SSC, 3rd day"ESPN Cricinfo। ১৬ আগস্ট ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৪ 
  9. "Herath races to 250, Sarfraz keeps scoring, Sri Lanka v Pakistan, 2nd Test, SSC, 2nd day"ESPN Cricinfo। ১৫ আগস্ট ২০১৪। ১৬ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৪ 
  10. "Herath's pledge, turn and prestige , Sri Lanka v Pakistan, 2nd Test, SSC, 2nd day"ESPN Cricinfo। ১৫ আগস্ট ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৪ 
  11. McGlashan, Andrew (২৮ মে ২০১৬)। "Sri Lanka fold again after Moeen's unbeaten century"ESPNcricinfo। ESPN Sports Media। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০১৬ 
  12. "Herath takes hat-trick as Australia collapse for 106"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০১৬ 
  13. "A hat-trick, a six-for and 21 wickets"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০১৬ 
  14. "Rangana Herath becomes oldest to claim Test hat-trick"। Cricbuzz। সংগ্রহের তারিখ 05 August 2016  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)

আরও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা