রওশন ইজদানী
রওশন ইজদানী (২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯১৮/ব. ১৫ ফাল্গুন ১৩২৪ - ২৩ জুন, ১৯৬৭) প্রখ্যাত কবি ও প্রাবন্ধিক, লোক. সাহিত্যের গবেষক ও সংগ্রাহক। [১] তিনি মোমেনশাহীর লোক সাহিত্য ও পূর্ব পাকিস্তানের লোক সাহিত্য - এই দুটি মৌলিক গবেষণা গ্রন্থের জন্য সবিশেষ খ্যাত। তার একটি শিশুপাঠ্য পদ্যের বিখ্যাত দুটি চরণ হলো: "সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো বেলা গেল ঐ/কোথায় গেল হাঁসগুলো তৈ তৈ তৈ"।[২]
রওশন ইজদানী | |
---|---|
জন্ম | ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯১৮ (১৫ ফাল্গুন ১৩২৪) |
মৃত্যু | ২৩ জুন, ১৯৬৭ |
পরিচিতির কারণ | কবি, প্রাবন্ধিক, লোকসাহিত্যের গবেষক ও সংগ্রাহক |
পিতা-মাতা | শেখ আলী কবির, |
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
সম্পাদনাপ্রখ্যাত কবি ও প্রাবন্ধিক, লোকসাহিত্যের গবেষক ও সংগ্রাহক রওশন ইজদানী ( জন্ম তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে এবং বাংলা তারিখ ১৫ ফাল্গুন ১৩২৪ সাল) নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার বিদ্যাবল্লভ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম শেখ আলী কবির। পিতা শেখ আলী কবিরের পেশা ছিলো কবিরাজি চিকিৎসা। ১০ বছর বয়সে পিতার মৃত্যু হলে স্থানীয় ওল্ড স্কিম মাদ্রাসায় রওশন ইজদানীর বিদ্যাশিক্ষার হাতে খড়ি। পরে আশুজিয়া হাইস্কুলে ভর্তি হন রওশন ইজদানী। এ স্কুলে দশম শ্রেণী পর্যন্ত অধ্যায়ন করেন তিনি। ১৮ বছর বয়সে মাতৃ বিয়োগ হওয়ার কারণে তার পড়া লেখাপড়ায় ছেদ পড়ে। মাতৃবিয়োগের পর উদাসীন হয়ে বাউলদের প্রতি ঝুঁকে পড়েন ইজদানী এবং বাউল গান গেয়ে সময় কাটান। এর কিছুকাল পর জুবায়দা আখতার খাতুনকে বিবাহ করে সংসার ধর্মে প্রত্যবর্তন করেন।
কর্মজীবন
সম্পাদনাপ্রথম জীবনে ১৩৪৬ সালে গ্রামের প্রাইমারী স্কুলে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন ইজদানী। এর কিছুকাল পরে ঋণ সালিসি বোর্ডের কেরানির চাকুরিতে যোগদান করেন। ১৯৪৮ সালে 'দৈনিক আজাদের' রিডিং সেকশনে যোগ দেন তিনি। এর পর ১৯৫৮ সালে ফ্রাঙ্কলিন পাবলিকেশনের প্রুফ রিডার, গ্রেড-১ পদে যোগ দান করেন। ভগ্ন স্বাস্থ্যের জন্য ১৯৫৯ সালে প্রুফ রিডারের চাকুরি ছেড়ে দিয়ে তিনি গ্রামের বাড়িতে প্রত্যাবর্তন করেন এবং সাহিত্য সাধনায় নিজেকে নিয়োজিত করেন।
রওশন ইজদানী মূলতঃ পল্লী কবি হিসেবে খ্যাত। তিনি রসুল (সা.)-এর উপর একটি পুরো কাব্য খাতামুন নবীঈন রচনা করেন। তিনি লোকসাহিত্য নিয়ে তিনি অনেক লেখালেখি করেছিলেন। তার গবেষণা গ্রন্থ "মোমেনশাহীর লোক সাহিত্য ও পূর্ব পাকিস্তানের লোক সাহিত্য"।, কবি রওশন ইজদানীর প্রকাশিত গ্রন্থ ২৬টি এবং অপ্রকাশিত গ্রন্থ ১৮টি। পাঠ্য পুস্তক প্রকাশনার সংখ্যা ৬টি। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থঃ হলো নীল দরিয়া, মরুর কাফেলা, হৃদয় বীণা, ভাঙ্গা বীণা, বজ্রবাণী, ইউসুফ জুলায়খা, মোমেনশাহীর প্রাচীন পল্লী ও সমাজ জীবন ইত্যাদি।
প্রকাশনা
সম্পাদনাকাব্যগ্রন্থ
সম্পাদনা- চিনু বিবি (১৯৫১)
- খাতামুন নাবীঈন (১৯৬০)[৩]
- বজ্রবাণী (১৯৪৭)
- রঙ্গিলা বন্ধু (১৯৫১)
- ইউসুফ জুলেখা।
অন্যান্য গ্রন্থাবলী
সম্পাদনা- ভাঙ্গাবীনা (১৯৪৪)
- বজ্রবানী (১৯৪৭)
- নীল দরিয়া (১৯৪৬)
- রাহগীর (১৯৪৯)
- ইসলাম জাহানের দুই সেতারা
- খোলাফা-ই-রাশেদীন (১৯৭৯)
- মোমেনশাহীর লোক সাহিত্য
- পূর্ব পাকিস্তানের লোক সাহিত্য।
পুরস্কার ও সম্মাননা
সম্পাদনারওশন ইজদানী ‘খাতামুন নাবীঈন’ লিখে ১৯৬০ খ্রীস্টাব্দে সাহিত্য কর্মের জন্য আদমজী সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেছিলেন।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ রওশন ইজদানী[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "কেন্দুয়ায় কবি রওশন ইজদানীকে স্মরণ"। ২৭ জুলাই ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ এপ্রিল ২০১৪।
- ↑ ইসলামী ফাউন্ডেশান তথ্যতীর্থ[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
গ্রন্থসূত্র
সম্পাদনা- লেখক অভিধান, ২০০৭, বাংলা একাডেমী, ঢাকা।
- জীবনবৃত্তে : ২০১৩ : হামিদুর রহমান : নান্দনিক : ঢাকা।
- মোমেনশাহীর লোক সাহিত্য : ১৯৫৮ : রওশন ইজদানী : বাংলা একাডেমী, ঢাকা।
- রওশন ইজদানী : ১৯৮০ : ইমামুর রশীদ : বাংলা একাডেমী, ঢাকা।
- নেত্রকোণার প্রবাদ-প্রবচন ও লোকছড়া: ২০১৪: হাসান ইকবাল: রাঁচী গ্রন্থনিকেতন: ঢাকা।