রওশন আলী চৌধুরী
রওশন আলী চৌধুরী ছিলেন একজন বাঙালি সাংবাদিক, লেখক, কবি ও রাজনীতিবিদ।[১]
রওশন আলী চৌধুরী | |
---|---|
জন্ম | ১৮৭৪ |
মৃত্যু | ১৯৩৩ (বয়স ৫৮–৫৯) |
পেশা | সাংবাদিক |
পিতা-মাতা |
|
আত্মীয় | ইয়াকুব ও আওলাদ (ছোট ভাই), রোকনুজ্জামান খান (নাতনি) |
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনারওশন আলী ১৮৭৪ সালে বর্তমান পাংশা উপজেলারং মাগুরাডাঙ্গী গ্রামে বৃহত্তর ফরিদপুরের সম্ভ্রান্ত বাঙালি মুসলিম পরিবারে (চোধুরী) জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা এনায়েতুল্লাহ চৌধুরী পেশায় একজন পুলিশ ছিলেন। তিনি পাংশার একটি স্কুলে পড়াশোনা করেছেন।[২] তার ভাই ছিলেন মোহাম্মদ এয়াকুব আলী চৌধুরী, একজন প্রাবন্ধিক এবং তার ছোট ভাই ছিলেন আওলাদ আলী চৌধুরী, তিনিও একজন সাংবাদিক ছিলেন।[৩]
কর্ম জীবন
সম্পাদনারওশন আলী কুষ্টিয়ার লাহিনীপাড়ার একজন বাঙালি মুসলিম মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন যিনি প্রখ্যাত লেখক মীর মশাররফ হোসেনের আত্মীয় ছিলেন। মশাররফ হোসেনের সাথে পরিচিত হওয়ার কারণে, দুই ব্যক্তি কুষ্টিয়া থেকে কোহিনূর পত্রিকা প্রকাশ করতে শুরু করেন। তিনি পাংশাতে কোহিনূর সাহিত্য সমিতি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যা কোহিনুর পত্রিকা ও পূর্ণিমা সম্মিলনী (পূর্ণিমা সমিতি) প্রকাশ করত। রওশন আলী কোহিনূর পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯০৫ সালের এপ্রিল মাসে, তিনি মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদীর সাথে রাজশাহীতে প্রতিষ্ঠিত বঙ্গীয় ইসলাম মিশন সমিতির যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সদস্য হওয়ার পাশাপাশি (নির্বাহী কমিটির নির্বাচনের মাধ্যমে) তিনি বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতিরও অংশ ছিলেন। তিনি ১৯১২ সালে ফার্সি ভাষার সাপ্তাহিক হাবলুল মতিন এবং ১৯২৩ সালে সোলতান সাপ্তাহিক সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। রহমান মাসিক মোহাম্মদী পত্রিকারও বার্তা সম্পাদক ছিলেন।[৪]
যদিও রওশন আলীর বাংলা সাহিত্যের প্রতি গভীর আগ্রহ ছিল; গদ্য এবং কবিতা উভয়ই, তিনি কোন বই প্রকাশ করেননি। তাঁর রচনায় মূলত মতামত লেখা এবং গদ্য আকারে সংবাদ প্রতিবেদন ছিল। রওশন আলীর জীবনীকার মোট বারোটি স্বাক্ষরিত রচনা খুঁজে পাওয়া গিয়েছে; ছয়টি কবিতা এবং ছয়টি প্রবন্ধ। তার সম্পাদিত কোহিনূর পত্রিকায় এই প্রবন্ধগুলোর প্রায় সবকটিই প্রকাশিত হয়েছে। কোহিনূর-এর জন্য তার অনেক কাজ স্বাক্ষরবিহীন বলে মনে করা হয়, তাই প্রমাণ করা যায় না যে সেগুলি তার লেখা। যোগীন্দ্রনাথ সমাদ্দারের মুসলিম লেখকদের তালিকায় (১৯১৫) রওশন আলীর জীবন ও কাজ এবং সহ লেখকদের সাথে তার ঘনিষ্ঠতার সম্পর্ক অন্তর্ভুক্ত ছিল।[৪]
তিনি ১৯৯২ সালে হুগলি-চুঁচুড়ায় অনুষ্ঠিত বঙ্গীয় সাহিত্য সম্মেলনের পঞ্চম সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন। সম্মেলনের তৃতীয় দিনে, রওশন আলী তার পরিচিত মীর মশাররফ হোসেনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছিলেন এবং তাকে ২৪ পরগণার চন্ডীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় সমর্থন করেছিলেন।
তিনি ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি সমর্থন করতেন এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সমর্থক ছিলেন। তিনি ফরিদপুরে অসহযোগ আন্দোলনের নেতা ছিলেন, ভারতের স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলন। তিনি খিলাফত আন্দোলনকে সমর্থন করেছিলেন, ভারতের একটি আন্দোলন যা উসমানীয় সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানিয়েছিল।[২][৫] তিনি ফরিদপুর জেলা কংগ্রেস কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[৬]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "'কোহিনূর' পত্রিকা ও রওশন আলী চৌধুরী"। ভোরের কাগজ। ২০১৯-০৬-০২। ২০২১-১১-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-২০।
- ↑ ক খ ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর, সম্পাদকগণ (২০১২)। "বাংলাদেশ"। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর, সম্পাদকগণ (২০১২)। "বাংলাদেশ"। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ ক খ Abul Ahsan Chaudhuri (২ জুন ২০১৯)। "'কোহিনূর' পত্রিকা ও রওশন আলী চৌধুরী"। Bhorer Kagoj।
- ↑ ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর, সম্পাদকগণ (২০১২)। "বাংলাদেশ"। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ Chatterjee, Srilata (২০০৩)। Congress Politics in Bengal 1919-1939 (ইংরেজি ভাষায়)। Anthem Press। পৃষ্ঠা 61। আইএসবিএন 9781843313663। সংগ্রহের তারিখ ৫ মে ২০১৯।