রংপুর জেলার বধ্যভূমির তালিকা
রংপুর জেলার বধ্যভূমিসমূহ হচ্ছে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রংপুর বিভাগের রংপুর জেলায় ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় জেলার বিভিন্ন স্থানে পাকবাহিনী কর্ততৃক এলাকার নিরহ মানুষকে হত্যা করার স্থান। এ বধ্য ভূমিগুলো মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবহন করে আসছে।[১][২][৩][৪]
রংপুর জেলার বধ্যভূমি | |
---|---|
উপাদান | ইট, সিমেস্ট, রড, বালু |
বিষয় | বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ |
অবস্থান | রংপুর বিভাগ, রংপুর জেলা, বাংলাদেশ |
টাউনহল বধ্যভূমি
সম্পাদনারংপুর শহরের টাউন হল ছিল নারী নির্যাতন কেন্দ্র। এখানে এনে বাঙালিদেরকে হত্যা করা হতো। স্বাধীনতার পর এখানে অনেক মানুষের কঙ্কাল পাওয়া গেছে। টাউন হলের উত্তর দিকের কুয়ায় অজানা অনেক মানুষের কঙ্কাল পাওয়া গেছে। এখানে একটি বধ্যভূমি স্মৃতি স্তম্ভ আছে।[১][৫][৬]
শাহেবগঞ্জ বধ্যভূমি
সম্পাদনারংপুর শহর থেকে ৫ কিমি দূরে তপোধন উইনয়ের বীরচরণ মৌজায় এটি অবস্থিত। এখানে ১৯জন বাঙালি সৈনিকের মরদেহ দাফন করা হয়। তাদের নাম জানা যায়নি।[১][২][৭]
দখিগঞ্জ বধ্যভূমি
সম্পাদনারংপুর-মাহিগঞ্জ রোডের তুলা উন্নয়ন বোর্ডের্ডের পাশে একটি শ্মশানের সাথে এ বদ্ধভূমি অবস্থিত। এখানে ৩ এপ্রিল ১৯৭১ সালে রংপুর শহরের জর্জেজেজসহ ১১জনকে হত্যা করা হয়।অন্যরা হলেন মোহাম্মদ মহরম, শ্রী গোপাল চন্দ্র, দুর্গগাদাশ অধিকারী, উত্তম কুমার অধিকারী, দুলাল মিয়া, রফিক আলী, ক্ষীতিশ হাওলাদার, নাম অজনা দুজন।[১][২][৮]
বালারখাইল বধ্যভূমি
সম্পাদনারংপুর কেন্টনমেন্টের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে বালারখাইল নামক স্থানে এ বধ্যভূমি অবস্থিত। ১২ এপ্রিল ১৯৭১ সালে এখানে ৩ ট্রাক বাঙালিকে হত্যা করা হয়। এখানে যাদের হত্যা করা হয় তাদের মধ্যে হলেন-ডাঃ জিকরুল হক, ডাঃ িইয়াকুব আলী, ডাঃ সামছুল হক, ডাঃ বদিউজ্জামান, আবেদ আলী, তুলশী রাম আগারওয়াল, যমুনা প্রসাদ, হরিহর প্রসাদ প্রমুখ।[১][৩][৯]
জয়রাম আনোয়ার মৌজা বধ্যভূমি
সম্পাদনাপায়রাবন্ধ ইউনিয়নের এ মৌজায় ৫টি ট্রাকে করে ২৬ জনকে নিয়ে এসে হত্যা করা হয়। এখানে রয়েছে ২টি বধ্যভূমি।[১][২][১০]
নব্দীগঞ্জ বধ্যভূমি
সম্পাদনারংপুর কাউনিয়া রোডের পাশে নব্দীগঞ্জ গ্রামে ১১ জনকে হত্যা করা হয়। এখানে একটি বধ্যভূমি আছে।[১][২]
ঝাড়ুয়ার বিল ও পদ্মপুকুর বধ্যভূমি
সম্পাদনাবদরগঞ্জ উপজেলার রামনাথ ইউনিয়নের ঝাড়ুয়ার বিল ও পদ্মপুকুর বদ্ধভূমি । এখানে ৪শত বাঙালিকে হত্যা করা হয়।[১][২][১১]
লাহিরীর হাট বদ্ধভূমি
সম্পাদনারংপুর-বদরগঞ্জ রোডের পাশে নারীর হাট বা লাহিরীর হাট এলাকায় এ বধ্যভূমি অবস্থিত। এখানে ৩২ জনকে হত্যা করা হয়। তাদের মধ্যে-আবেদ আলী, নওয়াব আলী, আব্দুল করিম, আজগার আলী প্রমুখ।[১][২][১২]
ঘাঘটপাড়ের বধ্যভূমি
সম্পাদনারংপুর -বদরগঞ্জ রোডের পাশে নিসবেতগঞ্জ এলাকায় ঘাঘট ব্রিজের পাশে অবস্থিত। এখানে ৫০-৬০ জনকে হত্যা করা হয়।[১][২][১৩]
নিসবেতগঞ্জ বধ্যভূমি
সম্পাদনারংপুর ক্যান্টনমেন্টের পাশে নেসবেত গঞ্জ এলাকায় এ বধ্যভূমি অবস্থিত।[১][২][১৪]
দমদমা ব্রিজ বদ্ধভূমি
সম্পাদনারংপুর-ঢাকা রোডের পাশে দমদমা নামক স্থানে এ বধ্যভূমি অবস্থিত। এখানে অধ্যাপক সুনিলবরণ চক্রবর্ততী, অধ্যাপক রামকৃষ্ণ অধিকারী, অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন রায়, অধ্যাপক কালাচাদ রায়কে হত্যা করা হয়।[১][১৫]
জাফরগঞ্জ বধ্যভূমি
সম্পাদনারংপুর-পাগলাপীর রাস্তার পাশে জাফরগঞ্জ। এখানে ঘাঘট নদীর উপর ব্রিজ। এ ব্রিজের নিচে হত্যা করা হয় অসংখ্য বাঙালিকে। এখানে ২৪ জনকে হত্যা করা হয়।[১][২][১৬]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট ঠ ড "রংপুরের বধ্যভূমির তালিকা"। রংপুর জেলা ওয়েব। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ প্রতিবেদক, নিজস্ব। "রংপুর ও কুড়িগ্রামে ১৯৭১ সালে গণহত্যা, বধ্যভূমি ও গণকবর"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০২-০৩।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ক খ "রংপুরের বধ্যভূমি এখনো অরক্ষিত"। বাংলাদেশ প্রতিদিন। ২০১৫-১১-৩০। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০২-০৩।
- ↑ "রংপুরের বধ্যভূমিগুলো সংস্কারের অভাবে নিশ্চিহ্ন হতে বসেছে"। দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০২-০৩।
- ↑ "রংপুরে বধ্যভূমিতে মিললো মানুষের হাড়গোড়"। banglanews24.com। ২০২০-১১-৩০। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০২-০৩।
- ↑ পরিষদ, সম্পাদনা (২০০০)। রংপুর জেলার ইতিহাস। রংপুর: জেলা প্রশাসন রংপুর। পৃষ্ঠা ২৫০–২৫১।
- ↑ পরিষদ, সম্পাদনা (২০০০)। রংপুর জেলার ইতিহাস। রংপুর: জেলা প্রশাসন রংপুর। পৃষ্ঠা ২৪১–২৪২।
- ↑ পরিষদ, সম্পাদনা (২০০০)। রংপুর জেলার ইতিহাস। রংপুর: জেলা প্রশাসন রংপুর। পৃষ্ঠা ২৩৪।
- ↑ পরিষদ, সম্পাদনা (২০০০)। রংপুর জেলার ইতিহাস। রংপুর: জেলা প্রশাসন রংপুর। পৃষ্ঠা ২৩৫–২৩৬।
- ↑ পরিষদ, সম্পাদনা (২০০০)। রংপুর জেলার ইতিহাস। রংপুর: জেলা প্রশাসন রংপুর। পৃষ্ঠা ২৩৯–২৪০।
- ↑ পরিষদ, সম্পাদনা (২০০০)। রংপুর জেলার ইতিহাস। রংপুর: জেলা প্রশাসন রংপুর। পৃষ্ঠা ২৩৭–২৩৯।
- ↑ পরিষদ, সম্পাদনা (২০০০)। রংপুর জেলার ইতিহাস। রংপুর: জেলা প্রশাসন রংপুর। পৃষ্ঠা ২৪৩–২৪৫।
- ↑ পরিষদ, সম্পাদনা (২০০০)। রংপুর জেলার ইতিহাস। রংপুর: জেলা প্রশাসন রংপুর। পৃষ্ঠা ২৪৫–২৪৬।
- ↑ পরিষদ, সম্পাদনা (২০০০)। রংপুর জেলার ইতিহাস। রংপুর: জেলা প্রশাসন রংপুর। পৃষ্ঠা ২৪৬–২৪৮।
- ↑ পরিষদ, সম্পাদনা (২০০০)। রংপুর জেলার ইতিহাস। রংপুর: জেলা প্রশাসন রংপুর। পৃষ্ঠা ২৪৮–২৪৯।
- ↑ পরিষদ, সম্পাদনা (২০০০)। রংপুর জেলার ইতিহাস। রংপুর: জেলা প্রশাসন রংপুর। পৃষ্ঠা ২৪৯–২৫০।