যৌথ বন ব্যবস্থাপনা
যৌথ বন ব্যবস্থাপনা বা জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট হল ভারত সরকার স্বীকৃত সরকারি ও স্থানীয় মানুষের উদ্যোগে স্থানীয় বনজ সম্পদের সুপরিচালন ব্যবস্থা।
ঐতিহাসিক পটভূমি
সম্পাদনাযৌথ বন ব্যবস্থাপনা বা JFM-এর ধারণাটির প্রথম সূত্রপাত হয় ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার আরাবাড়ি অরণ্যে। এই প্রকল্পটির সূচনা করা হয়েছিল জনগনের দাবি মেনে ধ্বংসের হাত থেকে অরণ্যকে বাঁচাতে। বনদপ্তরের নীতি অনুযায়ী ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে দক্ষিণবঙ্গে শালগাছের জঙ্গল পুনরুদ্ধারের জন্য মেদিনীপুর শহর থেকে ৩০ কিমি দূরে আরাবারি অরণ্যে ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার (DFO) শ্রী অজিত কুমার ব্যানার্জির নেতৃত্বে শালগাছ চাষের ব্যবস্থা করা হয়। তিনি স্থানীয় ১১টি গ্রামের মানুষের সঙ্গে আলোচনা করে ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে বন সুরক্ষা কমিটি (FPC) গড়ে তোলেন। এই কমিটিকে সদ্য রোপিত শালগাছের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। বিনিময়ে স্থানীয় মানুষদের গ্রামীণ নিযুক্তি স্কিমে চাকরির ব্যবস্থা ও কাঠের পরিবর্তে অন্য বনজ সম্পদ আরোহণের অধিকার দেওয়া হয়। এই উদ্যোগ সফল হয়।
ব্যবস্থাপনা
সম্পাদনাআরাবারির ঘটনায় অনুপ্রাণিত হয়ে ভারত সরকারের পরিবেশ ও বনমন্ত্রক সমস্ত রাজ্য সরকারকে, স্থানীয় জনসাধারণ এবং স্বেচ্ছা সংগঠনগুলিকে সঙ্গে নিয়ে বন উন্নয়নের চালননীতি প্রণয়ন করে। সেই অনুযায়ী ২২টি রাজ্য সরকার সংশ্লিষ্ট রাজ্য বনদপ্তরকে যৌথ বন ব্যবস্থাপনা করবার নির্দেশ দেয়। বর্তমানে ভারতে ১৭.৩৩ মিলিয়ন হেক্টর বন পরিচালনে যৌথ বন ব্যবস্থাপনা সহায়তা করে। এর অধীনে অনেকগুলি কমিটি গঠিত হয় যেগুলি বন সংরক্ষণের ভূমিস্তরে কাজ করে থাকে। এই কমিটিগুলি হল :
- ফরেস্ট প্রোটেকশন কমিটি (FPC);
- ইকো ডেভেলপমেন্ট কমিটি (EDC);
- ভিলেজ ফরেস্ট কমিটি (VFC) প্রভৃতি।[১]
জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে ভূমিকা
সম্পাদনাজীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে যৌথ বন ব্যবস্থাপনার ভূমিকাগুলি হল:
- বিভিন্ন রাজ্যে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে রাজ্য বনদপ্তরকে সক্রিয় সহযোগিতা করা।
- বনে চোরাশিকারের ঘটনা তাৎক্ষণিক বনদপ্তরকে জানানোর কাজ করা।
- দাবানল, বেআইনি পশুশিকার, বনভূমি বিনাশের প্রচেষ্টা, বেআইনি খননকার্য রোধে প্রাথমিকভাবে বনদপ্তরকে তা জানানো ও সংশ্লিষ্ট কাজে বনদপ্তরের সঙ্গে সহযোগিতা করা।[১]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- "ভারতীয় বন ওও পরিবেশ মন্ত্রণালয়"। (ইংরেজি)