যাদবিন্দ্র সিং
স্যার যাদবিন্দার সিং (গুরুমুখী: ਯਾਦਵਿੰਦਰ ਸਿੰਘ; জন্ম: ৭ জানুয়ারি, ১৯১৪ - মৃত্যু: ১৭ জুন, ১৯৭৪) তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাবের পাতিয়ালা এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। এছাড়াও, পাতিয়ালার নবম ও সর্বশেষ মহারাজা হিসেবে ১৯৩৮ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।
;লেফটেন্যান্ট-জেনারেল এইচ.এইচ. ফারজন্দ-ই-খাস-ই-দৌলত-ই-ইংলিশিয়া, মনসুর-ই-জামান, আমির উল-উমরা, মহারাজাধিরাজ রাজ রাজেশ্বর, ১০৮ শ্রী মহারাজা-ই-রাজন, মহারাজা স্যার যাদবিন্দ্র সিং | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পাতিয়ালার মহারাজা | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
রাজত্ব | ২৩ মার্চ, ১৯৩৮ - ১৫ আগস্ট, ১৯৪৭ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
পূর্বসূরি | মহারাজা ভুপিন্দার সিং | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উত্তরসূরি | অমরিন্দার সিং | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী | তালিকা দেখুন | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | পাতিয়ালা, পাঞ্জাব, ব্রিটিশ ভারত | ৭ জানুয়ারি ১৯১৪|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১৭ জুন ১৯৭৪ হেগ, নেদারল্যান্ডস | (বয়স ৬০)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মহারাণী | হেম প্রভা দেবী (বি. ১৯৩৫–১৯৭৪) পাতিয়ালার মেহতাব কৌর (বি. ১৯৩৮–১৯৭৪) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বংশধর |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
রাজবংশ | ফুলকিয়ান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
পিতা | মহারাজা ভুপিন্দার সিং | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মাতা | ভক্তবর কৌর | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ধর্ম | শিখ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ইতালিতে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
কাজের মেয়াদ ১৯৬৫-১৯৬৬ | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
নেদারল্যান্ডসে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
কাজের মেয়াদ ১৯৭১-১৯৭৪ | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
পূর্বসূরী | জগন্নাথ ধর্মীজা | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উত্তরসূরী | কে. এস. বাজপাই | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ক্রিকেট তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | - | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
একমাত্র টেস্ট | 10 February 1934 বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ESPNcricinfo, 31 May 2020 |
ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৩৪ সালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।[১] ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে পাতিয়ালার মহারাজা একাদশ, উত্তর ভারত ও দক্ষিণ পাঞ্জাব দলের প্রতিনিধিত্ব করেন যাদবিন্দ্র সিং। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন।
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনা১৯১৪ সালে পাঞ্জাবের পাতিয়ালায় জন্মগ্রহণকারী মহারাজা যাদবিন্দ্র সিং লাহোরের এইচিসন কলেজে পড়াশোনা করেছিলেন। পাতিয়ালা রাজ্য পুলিশের দায়িত্ব পালন করেন ও ইন্সপেক্টর জেনারেল পদবী ধারণ করেন। এরপর, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মালয়, ইতালি ও বার্মায় দায়িত্বপ্রাপ্ত হন।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। ১৯৩৫ সালে সারাইকেলা রাজ্যের হেমপ্রভা দেবী (১৯১৩ - ২০১৪) নাম্নী রমণীর প্রথম পাণিগ্রহণ করেন। ২৩ মার্চ, ১৯৩৮ তারিখে মহারাজা ভুপিন্দার সিংয়ের পরিবর্তে পাতিয়ালার মহারাজা হিসেবে সিংহাসনে আরোহণ করেন। ১৯৩৮ সালে পাতিয়ালার মেহতাব কৌরের (১৯২২ - ২০১৭) সাথে দ্বিতীয়বারের মতো পাণিগ্রহণ করেন। ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয় যে, প্রথম স্ত্রী সন্তানহীন থাকায় তিনি দ্বিতীয় বিবাহ করেছিলেন। আকালি নেতৃবৃন্দের পরামর্শক্রমে ভবিষ্যতের শিখ উত্তরাধিকারী নির্ধারণই এর প্রধান কারণ ছিল।[২]
খেলোয়াড়ী জীবন
সম্পাদনা১৯৩১-৩২ মৌসুম থেকে ১৯৫৭-৫৮ মৌসুম পর্যন্ত যাদবিন্দ্র সিংয়ের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। দীর্ঘদেহের অধিকারী ও ধ্রুপদীশৈলী ব্যাটসম্যান যাদবিন্দ্র সিংয়ের ক্রিকেট পরিবারে জন্ম। পিতা পাতিয়ালার মহারাজা ছিলেন ও রঞ্জী ট্রফি দান করেন। ১৯৩২ সালে ইংল্যান্ড গমনের জন্যে আমন্ত্রণ পান। কিন্তু, রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত থাকায় যেতে পারেননি।
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন যাদবিন্দ্র সিং। ১০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৪ তারিখে চেন্নাইয়ে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এটিই তার একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। এরপর আর তাকে কোন টেস্টে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি।
১৯৩৩-৩৪ মৌসুমে ইংল্যান্ড দল ভারত গমন করে। এ সফরে মাদ্রাজ টেস্টে অংশ নিয়ে ২৪ ও ৬০ রান তুলেন। এটিই তার একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। ১৯৩৫-৩৬ মৌসুমে জ্যাক রাইডারের নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়া দল অনানুষ্ঠানিক টেস্ট খেলার জন্যে ভারতে আসে। তিনি ভারত দলকে নেতৃত্ব দেন। ১৯৩৬ সালে ভারত দলকে নেতৃত্ব দিয়ে ইংল্যান্ড গমনের অন্যতম প্রার্থী ছিলেন।
প্রশাসনে অংশগ্রহণ
সম্পাদনা১৯৩৮ থেকে ১৯৬০ সময়কালে ভারতের অলিম্পিক সংস্থার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন যাদবিন্দ্র সিং। এশিয়ান গেমসের ব্যবস্থাপনা কমিটিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। যাদবিন্দ্র পাবলিক স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। স্যার যাদবিন্দ্র সিং লাল বাগ প্যালেসে এ বিদ্যালয়টি পরিচালনার্থে দান করেন। অবসর সময় উদ্যানে অবস্থান করে কাটাতেন। পরবর্তীকালে ভারতীয় উদ্যানবিদ্যা উন্নয়ন সংস্থার সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়াও, বিসিসিআইয়ের সভাপতিত্ব করেন তিনি।
পাতিয়ালার সিংহাসনে অভিষিক্ত হবার পর রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পরেন। ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত প্রিন্সেস চেম্বারের আচার্যের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতা লাভের পর প্রিন্সেস চেম্বারের উপাচার্য ছিলেন। বিশেষ সভায় তিনি মন্তব্য করেন যে, বিদেশী শাসন থেকে ভারতের স্বাধীনতা লাভের জন্য কয়েক শতাব্দী লেগেছে। এখনই সময় আমাদের সকল রাজা নিয়ন্ত্রিত সকল রাজ্যকে একত্রিত হয়ে আমাদের মাতৃভূমিকে শক্তিশালী করা। অনেক শাসক ইন্ডিয়ান ইউনিয়নে যোগ দেন। ভারত বিভাজনের সময়কালে রাজকুমার নিয়ন্ত্রিত পাতিয়ালার অভ্যন্তরে ও বাইরে অনেকগুলো অঘটন ঘটেছে।[৩]
১৯৫৬ সালে হিমাচল প্রদেশ গঠনের পূর্বে পাঞ্জাব সরকারকে ১৫০ বিঘার উপর নির্মিত প্রাসাদ আনন্দ ভবন দান করে দেন। শুরুতে দরিদ্র শিশুদের বসবাসের ব্যবস্থা করা হলেও পরবর্তীকালে বাবা রামদেবের পতঞ্জলী ট্রাস্টের অনুকূলে লিজ দেয়া হয়।
কূটনৈতিক জীবন
সম্পাদনা১৯৫৬ সাল থেকে কর্মজীবন চালিয়ে যেতে থাকেন। ১৯৫৬ থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এবং ১৯৫৮ সালে ইউনেস্কোয় ভারতীয় প্রতিনিধি ছিলেন। এছাড়াও, ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৯ সময়কালে ফাওয়ে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন। এ পর্যায়ে ১৯৬৫ থেকে ১৯৬৬ সময়কালে ইতালিতে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত ছিলেন। এরপর, ১৯৭১ সাল থেকে ১৭ জুন, ১৯৭৪ তারিখে মৃত্যু-পূর্ব পর্যন্ত নেদারল্যান্ডসে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন।
৬০ বছর বয়সে নেদারল্যান্ডসের হেগে নিজ কার্যালয়ে হৃদযন্ত্রক্রীয়ায় আক্রান্ত হয়ে দেহাবসান ঘটে তার। তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর সরাসরি তত্ত্বাবধানে পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে সমাহিত করা হয়। নিজ পুত্র ক্যাপ্টেন অমরিন্দার সিং পরিবারের প্রধান হন। অমরিন্দার সিং কংগ্রেস দলের রাজনীতিবিদ ও ২০০২ থেকে ২০০৭ এবং ২০১৭ সালে পাঞ্জাবের মূখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তার কন্যা হেমিন্দার কৌর ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী কে. নটবর সিংয়ের সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন।
পদবী
সম্পাদনা- ১৯১৩ - ১৯৩৫: শ্রী যুবরাজ যাদবিন্দ্র সিং সাহিব-জী
- ১৯৩৫ - ১৯৩৮: লেফট্যানেন্ট শ্রী যুবরাজ যাদবিন্দ্র সিং সাহিব-জী
- ১৯৭১ - ১৯৭৪: লেফট্যানেন্ট-জেনারেল স্যার যাদবিন্দ্র সিং, জিসিআইই, জিবিই
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "The Greatest: One Test Wonders"। International Cricket Council। সংগ্রহের তারিখ ১৯ এপ্রিল ২০১৮।
- ↑ Singh, K.C. (৩ আগস্ট ২০১৭)। "Tales from two Punjabs"। tribuneindia.com। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ Mustafa Janjua, Haroon (জানুয়ারি ৭, ২০১৪)। "Daily Times - Unheard cries: atrocities in Patiala, 1947"।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে যাদবিন্দ্র সিং (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে যাদবিন্দ্র সিং (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
- Yadavindrasingh, Maharaja of Patiala
- Genealogy of the rulers of Patiala
যাদবিন্দ্র সিং জন্ম: ১৭ জানুয়ারি ১৯১৪ মৃত্যু: ১৭ জুন ১৯৭৪
| ||
রাজত্বকাল শিরোনাম | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী ভূপিন্দার সিং |
পাতিয়ালার মহারাজা ১৯৩৮ - ১৯৪৭ |