মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান
মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান (১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৩) বাংলাদেশের একজন গীতিকবি ও লেখক। তিনি শতাধিক চলচ্চিত্রের কাহিনী-চিত্রনাট্য-সংলাপ রচয়িতা। তিনি সংস্কৃতিতে অবদানের জন্য তিনি ২০২৪ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন।[১] তিনি ১৯৮৪ ও ১৯৮৬ সালে শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে এবং ২০০৮ সালে শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।[২][৩]
মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান | |
---|---|
জন্ম | |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশ |
মাতৃশিক্ষায়তন | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় |
পরিচিতির কারণ | গীতিকবি ও লেখক |
দাম্পত্য সঙ্গী | পান্না জামান |
সন্তান | সানজিদা শারমিন জামান স্নিগ্ধা ও সুহানা শারমিন জামান পৃথা |
পুরস্কার | জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (বাংলাদেশ), ১৯৮৪, ১৯৮৬, ২০০৮ |
স্বাক্ষর | |
জন্ম ও পারিবারিক পরিচয়
সম্পাদনা১৯৪৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান ঝিনাইদহ জেলার লক্ষ্নীপুরের ফুরসুন্দিতে মামাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক বাড়ি যশোর জেলার সদর উপজেলার খড়কীতে। তার বাবার নাম শাহাদাত আলী এবং মায়ের নাম সাজেদা খাতুন।
শিক্ষাজীবন
সম্পাদনামোহাম্মদ রফিকউজ্জামান যশোর জিলা স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন (এসএসসি), সরকারি মাইকেল মদুসূদন মহাবিদ্যালয় থেকে এইচএসসি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
কর্মজীবন
সম্পাদনা১৯৬৮ সালেবাংলাদেশ বেতার-এ চাকুরিতে যোগ দেন মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান। ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত এখানে চাকুরি করেন তিনি। পরবর্তীতে ২০০৪ সালে লন্ডনের চ্যানেল এস-এ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন এবং ২০০৭ সালে বৈশাখী টেলিভিশনে অনুষ্ঠান প্রধান হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি।
গান, নাটক, চলচ্চিত্র কাহিনী, চিত্রনাট্য, সংলাপ
সম্পাদনা১৯৬৫ সাল থেকে বাংলাদেশে বেতারে নিয়মিত গীতিকার হিসেবে কাজ করছেন মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান। ইতিমধ্যে তার প্রকাশিত গানের সংখ্যা প্রায় দুই হাজার। ১৯৭৩ সাল থেকে তিনি নিয়মিত ভাবে চলচ্চিত্রের জন্য গান লিখছেন। প্রায় শতাধিক চলচ্চিত্রের জন্য গান লিখেছেন তিনি। ১৯৬১-১৯৮৭ সাল পর্যন্ত মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান মঞ্চ, বেতার ও টেলিভিশনের জন্য শতাধিক নাটক লিখেছেন ও অভিনয় করেছেন।
পারিবারিক জীবন
সম্পাদনামোহাম্মদ রফিকউজ্জামানের স্ত্রীর নাম পান্না জামান। এ দম্পতির দুই সন্তান সানজিদা শারমিন হামান স্নিগ্ধা ও সুহানা শারমিন জামান পৃথা।
উল্লেখযোগ্য গান
সম্পাদনা- সেই রেললাইনের ধারে মেঠো পথটার পারে দাঁড়িয়ে
- বন্ধু হতে চেয়ে তোমার শত্রু বলে গণ্য হলাম
- দুঃখ আমার বাসর রাতের পালঙ্ক
- আমার মত এত সুখি নয় তো কারও জীবন
- ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়
- আমার মন পাখিটা যা রে উড়ে যায়
- পদ্ম পাতার পানি নয়, দিন যাপনের গ্লানি নয়
- মাঠের সবুজ থেকে সূর্যের লাল
- কিছু কিছু মানুষের জীবনে ভালোবাসা চাওয়াটাই ভুল
- মনটা সবাই দিতে পারে আমি তোমায় প্রাণটা দিতে চাই
- আকাশের সব তারা ঝরে যাবে
- যদি মরনের পরে কেউ প্রশ্ন করে
- আমার বাউল মনের একতারাটা
- দোয়েল পাখি গান শুনিয়ে ঘুম ভাঙ্গায়
- চির অক্ষয় তুমি বাংলাদেশ
- স্বাধীনতা তোমার জন্য যে পারে বইতে
- ওই সূর্য বলেছে আমাকে
- ক্ষয়ে ক্ষয়ে গেলেও তবু
- যেখানে বৃষ্টি কথা বলে
- আমি নদীর মতন বয়ে বয়ে
- ভালো লাগে না লাগে না এই
- শুক পাখিরে, পিঞ্জিরা তোর খুলে দিলাম আজ
- দিনে কি রাতে
- রিটার্ন টিকেট হাতে লইয়া আইসাছি এ দুনিয়ায়
প্রকাশিত গ্রন্থ
সম্পাদনা- হৃদয়ের ধ্বনিগুলো, ২০১৭ [৪]
পুরস্কার ও সম্মাননা
সম্পাদনা- স্বাধীনতা পুরস্কার, ২০২৪
- জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ১৯৮৪, ১৯৮৬, ২০০৮
- বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) পুরস্কার, ১৯৮২
- স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-দ্য ডেইলি স্টার জীবনের জয়গান উৎসব আজীবন সম্মাননা, ২০১০
- চ্যানেল আই পুরস্কার, ২০০৩
- বাংলাদেশ ফিল্মক্লাব পুরস্কার
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ BonikBarta। "১০ বিশিষ্টজন পাচ্ছেন স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২৪"। ১০ বিশিষ্টজন পাচ্ছেন স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২৪ (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-১৫।
- ↑ "জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০০৮ ঘোষণা"। ২০১৬-০২-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০২-১৮।
- ↑ "শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্রপুরস্কারও পেয়েছেন মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান"। NTV Online। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০২-১৮।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ BanglaNews24.com। "৭৫-এ মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান"। banglanews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০২-১৮।