মোহাম্মদ আবদুর রব
মোহম্মদ আবদুর রব (১৯১৯-১৪ নভেম্বর ১৯৭৫) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর উত্তম খেতাব প্রদান করে।[১] এছাড়া ২০০০ সালে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখার জন্য তাকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক ২০০০ দেয়া হয়।[২][৩]
মোহাম্মদ আবদুর রব | |
---|---|
জন্ম | ১৯১৯ |
মৃত্যু | ১৪ নভেম্বর ১৯৭৫ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশ |
পেশা | বাংলাদেশ সেনাবাহিনী |
পরিচিতির কারণ | বীর উত্তম |
রাজনৈতিক দল | আওয়ামী লীগ |
পুরস্কার | বীর উত্তম স্বাধীনতা পুরস্কার (২০০০) |
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
সম্পাদনামোহাম্মদ আবদুর রবের জন্ম হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার কুর্শা-খাগাউড়া গ্রামে। তার বাবার নাম মনোয়ার আলী এবং মায়ের নাম রাশিদা বেগম। তিনি চিরকুমার ছিলেন। তিনি হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছেন।
কর্মজীবন
সম্পাদনাপাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে লেফটেন্যান্ট কর্নেল হিসেবে ১৯৭০ সালে অবসর নেওয়ার পর মোহাম্মদ আবদুর রব রাজনীতিতে যুক্ত হন। ওই বছরই অনুষ্ঠিত হয় পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচন। তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পরিষদের সদস্য (এমএনএ) নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধের সূচনায় বৃহত্তর সিলেট জেলায় প্রতিরোধ যুদ্ধে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।[৪] ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন সিলেট-২০ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[৫]
মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা
সম্পাদনা২৭ মার্চ সিলেটের রশীদপুর চা-বাগান এলাকার শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার, শেরপুর-সাদিপুর, সিলেটসহ আরও কয়েক স্থানে তখন প্রতিরোধ যুদ্ধ হয়। এসব যুদ্ধে এম এ রব সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। তার প্রত্যক্ষ পরামর্শ ও পরিচালনায়ই বেশির ভাগ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এ সময় হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়ায় প্রতিরোধ যুদ্ধরত মুক্তিযোদ্ধাদের সামরিক দলনেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠক আয়োজনে তার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। ১০ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকার গঠিত হলে মুক্তিযুদ্ধের জন্য ক্রমে সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে উঠতে থাকে। এরপর মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি নিযুক্ত হন এম এ জি ওসমানী। চিফ অফ স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব পান মোহাম্মদ আবদুর রব। তিনি পূর্বাঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেন। তার সদর দপ্তর ছিল ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায়। ১৪ ডিসেম্বর এম এ জি ওসমানী ও তিনি হেলিকপ্টারে সিলেটে যুদ্ধ এলাকা পরিদর্শনকালে ফেঞ্চুগঞ্জে পাকিস্তানি সেনাদের একটি দল ওই হেলিকপ্টার লক্ষ্য করে গুলি করে। তখন তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। তার পায়ে গুলি লাগে। পরে আগরতলায় তার চিকিৎসা হয়।[৬]
যুদ্ধের পর
সম্পাদনাযুদ্ধের পর তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল (অক্রিয়) পদবী লাভ করেন।
পুরস্কার ও সম্মাননা
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"| তারিখ: ১৪-০৭-২০১২[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের তালিকা"। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ অক্টোবর ২০১৭।
- ↑ "রব, মেজর জেনারেল এম.এ - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-০১।
- ↑ একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা (খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রন্থ)। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ৪১। আইএসবিএন 978-984-33-5144-9।
- ↑ "১ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (দ্বিতীয় খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। মার্চ ২০১৩। পৃষ্ঠা ৫৭। আইএসবিএন 9789849025375।