মেক্সিকোতে ইসলাম
মেক্সিকোতে ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা একটি ছোট সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করে। তবে মেক্সিকোতে ইসলামকে দ্রুত বর্ধনশীল ধর্ম হিসেবে গণ্য করা হয়। মেক্সিকোর সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ হওয়ায় দেশটির মুসলমানরা অন্যদের দাওয়াতের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করতে এবং অনুমতি সাপেক্ষে মসজিদ নির্মাণ করতে পারে। পিউ রিসার্চ সেন্টারের গবেষণা মতে, ১৯৯০ সালে দেশটির মুসলিম জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৬০,০০০ ; ২০১০ সালে ১১১,০০০ এবং ২০৩০ সালে তা বেড়ে ১২৬,০০০ হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়।[১][২] দেশটির অধিকাংশ মুসলিম বিদেশি নাগরিক এবং তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠরা সুন্নি ইসলামের অনুসারী।[৩]
মোট জনসংখ্যা | |
---|---|
১১১,০০০ | |
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল | |
চিয়াপাস, জলিসকো, মিচোয়াকান, ওক্সাকা, সিনালোয়া, মেক্সিকো সিটি | |
ধর্ম | |
সুন্নি ইসলাম, শিয়া | |
ভাষা | |
স্পেনীয় ভাষা, ইংরেজি, আরবি |
২০২২ সালের নভেম্বরে মেক্সিকোর মোট জনসংখ্যা ১২৮,৫ মিলিয়নে পৌঁছে এবং তাদের মধ্যে ১১১,০০০ জন মুসলিম ছিলেন যা, মোট জনসংখ্যার 0.৪৬% এর প্রতিনিধিত্ব করে। মেক্সিকো সরকার অনুমোদিত প্রায় ২০টি মসজিদ ও ইসলামি সেন্টার রয়েছে। এছাড়াও সেখানে ব্যক্তিগত বেশ কিছু নামাজ ঘর রয়েছে।[৪]
ইসলামি সংস্থা
সম্পাদনাবর্তমান বেশিরভাগ মেক্সিকান ইসলামি সংস্থা তৃণমূল ধর্মীয় মিশনারী কার্যকলাপের উপর গুরুত্ব প্রদান করে এবং সেগুলি সম্প্রদায় স্তরে সবচেয়ে কার্যকর। ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত ধর্মান্তরিত মেক্সিকান মুসলিম ওমর ওয়েস্টানের নেতৃত্বে সংগঠিত সেন্ট্রো কালচারাল ইসলামিকো ডি মেক্সিকো (সিসিআইএম) একটি সুন্নি সংগঠন। এটি উত্তর ও মধ্য মেক্সিকোর কয়েকটি বড় শহরে সক্রিয় রয়েছে। এটি মোরেলোস রাজ্যে বিনোদন, শিক্ষা ও সম্মেলনের জন্য দারুস সালাম নামে একটি প্রার্থনা হল ও একটি কেন্দ্র তৈরি করেছে। তাছাড়া এটি একটি হোটেলও পরিচালনা করে, যা মুসলিম ভ্রমণকারীদের জন্য হালাল ব্যবস্থাপনা এবং অমুসলিমদের জন্য সহানুভূতিশীল ব্যবস্থাপনার সেবা দিয়ে থাকে। এই সংস্থাটি অ্যাবারডিন বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ব্রিটিশ নৃবিজ্ঞানী মার্ক লিন্ডলি-হাইফিল্ডের একটি গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল।
সিসিআইএম ছাড়াও মেক্সিকো সিটিতে নুর আশকি জেররাহি নামে সুফি তরিকার একটি শাখা রয়েছে, যা প্রায়শ ঐতিহ্যবাদী মুসলিম সম্প্রদায়ের সাথে মতভেদ করে। এর প্রধান দুই মহিলা শায়খা হলেন ফাতিমা ফারিহা ও আমিনা তেসলিমা। এছাড়াও মুহাম্মদ আবদুল্লাহ রুইজের নেতৃত্বে একটি ছোট সালাফি সংগঠন (সেন্ট্রো সালাফি ডি মেক্সিকো) এবং একটি শিক্ষাকেন্দ্র রয়েছে, যা প্রধানত মিশর ও মধ্যপ্রাচ্যের মুসলমানদের দ্বারা পরিচালিত হয়। ঈসা রোজাসের সেন্ট্রো আল হিকমাহ নামে একটি সংগঠন রয়েছে। তিনি একজন মেক্সিকান ব্যক্তি এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজে অধ্যয়ন করেছিলেন। [৫]
মুহাম্মাদ রুইজের নেতৃত্বাধীন সিসিআইএম প্রথমে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ১৯৯৮ সালে সৌদি আরব দূতাবাসের সমর্থনের কারণে এটি সালে পুনরায় চালু হয়। ২০১১ সালে মুহম্মদ রুইজ তার বইয়ে দাবি করেন যে, তখন মেক্সিকো শহরে সক্রিয় সদস্য সংখ্যা প্রায় ২০০ জন এবং এদের অর্ধেক মেক্সিকান ধর্মান্তরিত মুসলিম। [৬] এই সংখ্যায় সুফি ও অন্যান্য সংগঠনের মুসলমান অন্তর্ভুক্ত ছিল। [৬] সালাফি সেন্টার অফ মেক্সিকোর (CSM) জেনারেল ডিরেক্টর মুহাম্মদ রুইজ আল মেক্সিকি অনুমান করেন যে, ২০১৫ সালে মেক্সিকোতে প্রায় ১০,০০০ মুসলমান ছিল৷ [৭]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Table: Muslim Population by Country"। ২৭ জানুয়ারি ২০১১।
- ↑ Instituto Nacional de Estadística y Geografía (২০১০)। "Censo de Población y Vivienda 2010 — Cuestionario básico"। INEGI। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০১১।
- ↑ Tottoli, Roberto (১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪)। Routledge Handbook of Islam in the West। পৃষ্ঠা 157। আইএসবিএন 9781317744023। সংগ্রহের তারিখ ২ নভেম্বর ২০১৪।
- ↑ "মেক্সিকোতে ইসলামের অগ্রযাত্রা | কালের কণ্ঠ"। Kalerkantho। ২০২২-০১-২২। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-২৬।
- ↑ Ruiz Al Meksiki, Muhammad (২০০৯)। "PRIMERA PARTE El inicio de la Dawa y los primeros musulmanes activos en la Historia del Islam en México" (Spanish ভাষায়)। ২০১২-০১-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০২১।
- ↑ ক খ Eugenia Cruset, Maria (২০১১)। Migration and New International Actors: An Old Phenomenon Seen With New Eyes (English ভাষায়)। Cambridge Scholars Publishing। পৃষ্ঠা 74। আইএসবিএন 978-1443834902। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০২১।
- ↑ ""México no tolera a musulmanes: Muhammad Ruiz Al Meksiki""। Noroeste। ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০২১।