মুদ্রারাক্ষস (সংস্কৃত: मुद्राराक्षस) চতুর্থ শতাব্দী[] বা অষ্টম শতাব্দীতে[] সংস্কৃত কবি বিশাখদত্ত দ্বারা রচিত একটি ঐতিহাসিক নাটক বিশেষ। জটিল রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক কৌশলের মধ্যে দিয়ে মৌর্য্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্যের রাজনৈতিক উত্থান এই নাটকের মূল উপজীব্য।

মুদ্রারাক্ষস
मुद्राराक्षस
রচয়িতাবিশাখদত্ত
চরিত্রচন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্য
চাণক্য
মলয়কেতু
রাক্ষস
মূল ভাষাসংস্কৃত
বর্গঐতিহাসিক

কাহিনী

সম্পাদনা

এই নাটকের কাহিনী মৌর্য্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্যকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে। হিমালয়ের কোনও একটি রাজ্যের অধীশ্বর পর্বতেশ্বরের সঙ্গে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্যের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা চাণক্য কূটনৈতিক মিত্রতা স্থাপন করে নন্দ সাম্রাজ্যকে পরাজিত করতে সক্ষম হন। কিন্তু এই সময়, পর্বতেশ্বরকে বিষপ্রয়োগে হত্যা করা হলে মলয়কেতু তার স্থানে সিংহাসনে আরোহণ করেন। নন্দ সাম্রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাক্ষসের সঙ্গে মিলিত ভাবে মলয়কেতু নন্দ সাম্রাজ্যের অধিকৃত এলাকা দাবি করেন। শেষ নন্দ সম্রাট ধননন্দের হত্যার প্রতিশোধ নিতে মলয়কেতুর সহায়তায় রাক্ষস রাজধানী আক্রমণ করে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্যকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

এই পরিস্থিতিতে চাণক্য যেন তেন প্রকারে রাক্ষসকে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করাতে চেয়েছিলেন। রাক্ষসের প্রতীক মুদ্রাটি (সীলমোহর) হস্তগত করে চাণক্য চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্যকে উদ্দেশ্য করে একটি নকল চিঠি প্রস্তুত করেন। এই চিঠিতে রাক্ষসের মুদ্রার ছাপ (সীলমোহর) দিয়ে লেখা হয় যে তিনি চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্যের শিবিরে যোগ দিতে ইচ্ছুক। চাণক্য প্রথমেই মলয়কেতুর নিকট এই চিঠির বিষয়ে বার্তা পাঠালে তাতে বিশ্বাস করে মলয়কেতু রাক্ষসের সঙ্গত্যাগ করেন। এই ভাবে চাণক্য রাক্ষসকে তার সঙ্গীদের থেকে দূরে সরিয়ে দেন। পরবর্তী কৌশল হিসেবে তিনি রাক্ষসের বন্ধু চন্দনদাসের মৃত্যুদণ্ড দিলে রাক্ষস তাকে বাঁচাতে, আত্মসমর্পণে ও চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনে বাধ্য হন।

পরবর্তী যুগে

সম্পাদনা

ষোড়শ শতাব্দীতে ধুন্দিরাজা এই নাটকের টীকাভাষ্য রচনা করেন। এই নাটকের একটি তামিল অনুবাদ রয়েছে।[] ১৮৮৯ খ্রিষ্টাব্দে কেশবলাল ধ্রুব মেল নি মুদ্রিকা নামে এই নাটকের গুজরাটি অনুবাদ করেন। ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দে সম্প্রচারিত চাণক্য নামক টেলিভিশন ধারাবাহিকের শেষ কয়েকটি অংশ মুদ্রারাক্ষসের ওপর নির্ভর করে নির্মিত হয়েছিল।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Manohar Laxman Varadpande (১ সেপ্টেম্বর ২০০৫)। History Of Indian Theatre। Abhinav Publications। পৃষ্ঠা 223–। আইএসবিএন 978-81-7017-430-1। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০১২ 
  2. Upinder Singh (১ সেপ্টেম্বর ২০০৮)। A History of Ancient and Early Medieval India: From the Stone Age to the 12th Century। Pearson Education India। পৃষ্ঠা 30–। আইএসবিএন 978-81-317-1120-0। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০১২ 
  3. Viśākhadatta; S. M. Natesa Sastri (১৮৮৫), Mudrarakshasam: A tale in Tamil founded on the Sanskrit drama, Madras School Book and Vernacular Literature Society 
  4. Uma Chakravarti (২০০০) [1998]। "Inventing Saffron History"। Mary E. John, Janaki Nair। A question of silence: the sexual economies of modern India। পৃষ্ঠা 243–268। 

আরো পড়ুন

সম্পাদনা