মুহাজির ইবনে আবি উমাইয়া
আল মুহাজির ইবনে আবী উমাইয়ার ইবনে আল-মুগিরাহ ইবনে আবদুল্লাহ (আরবি: المهاجر بن أبي أمية المغيرة بن عبد الله, প্রতিবর্ণীকৃত: আল মুজাজির ইবনে আবী উমাইয়ার ইবনে আল-মুগিরাহ ইবনে আবদুল্লাহ) ছিলেন বনু মাখজুম বংশের এবং মুহাম্মদের সাহাবী। এছাড়াও রিদ্দা যুদ্ধের সময় ইয়েমেনের একজন সক্রিয় মুসলিম সেনাপতি ছিলেন তিনি।
জীবনী
সম্পাদনাআল-মুহাজিরের জন্মের নাম আল-ওয়ালিদ ছিল। পরে নবী মুহাম্মদ তার নাম রাখেন আল-মুহাজির (অভিবাসী)। পরবর্তীকালে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ফেরাউনদের একজন আল-ওয়ালিদ নামটি ধারণ করেছিলো এবং কুরাইশ গোত্রের বনু মাখজুম গোষ্ঠীর দ্বারা নামটি এত বেশি ব্যবহৃত হতো যে কার্যত আল- ওয়ালিদ যেন তাদের বংশের দেবতা হয়ে গিয়েছিল।[১] আল-মুযাহিরের পিতা আবু উমাইয়া সুহাইল ছিলেন মক্কার বনু মাখজুমের ইসলাম-পূর্ব যুুুগের বিশিষ্ট নেতা আল-মুগিরা ইবনে আবদুল্লাহর ছেলে।[২] আবু উমাইয়া রাস্তায় ভ্রমণ সঙ্গীদের উদারতার জন্য সুপরিচিত এবং যাদ আল-রাক্ব (যাত্রীদের সরবরাহকারী) নামে খ্যাত ছিলেন।[২] আল-মুহাজিরের মা ছিলেন কিনানাহ গোত্রের ফিরাস বংশের আতিকা বিনতে আমির, এই গোত্র তাদের সামরিক দক্ষতার জন্য খ্যাত ছিল।[৩] আল-মুহাজিরের বোন ছিলেন উম্মে সালামা, তিনি ইসলামী নবী মুহাম্মদের অন্যতম স্ত্রী।[৪] তিনি খালিদ ইবনে আল-ওয়ালিদের চাচাতো ভাই।[৫]
মুহাম্মাদ আল-মুহাজিরকে ইয়েমেন গোত্র কিন্দা (বিশেষত এর বনু মুয়াবিয়া শাখা) এবং সাদিফের উপর কর আদায়কারী হিসাবে নিযুক্ত করেছিলেন।[৫] তিনি আসমা বিনতে আল-নুমান ইবনে আবি আল-জৌনকে বিয়ে করেছিলেন, তিনি ছিলেন বনু কিন্দার অভিজাত মহিলা; পরে তিনি আল-মুহাজিরের মাখজুমির আত্মীয় ইকরিমা ইবনে আবি জাহলকে বিয়ে করেন।[৬] ৬৩১ সালে মুহাম্মদ আল-মুহাজিরকে ইয়েমেনের প্রধান শহর সানা'র রাজ্যপাল বা গভর্নর নিযুক্ত হন।[৭][৮] তিনি ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে খলিফা আবু বকরের খিলাফতের আগ পর্যন্ত মদীনায় এই পদ গ্রহণ করেননি।[৮] আবু বকর তাকে ইয়েমেনের গভর্নর জিয়াদ ইবনে লাবিদ আল-আনসারিকে শক্তিশালী করতে এবং রিদ্দা যুদ্ধের সময় হদরামওয়াত (দক্ষিণ আরবীয় উপকূলীয় অঞ্চল) -তে কিন্দার বনু মুয়াবিয়া গোত্রের বিদ্রোহ দমন করতে তাকে প্রেরণ করেছিলেন।[৯][১০][১১] শেষ পর্যন্ত আল-মুহাজির এবং ইকরিমার কাছে কিন্দা গোত্র আত্মসমর্পণ করে।[১০]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Kister ১৯৭৫, পৃ. ১৫-১৬।
- ↑ ক খ Landau-Tasseron ১৯৯৮, পৃ. ৮০।
- ↑ Landau-Tasseron ১৯৯৮, পৃ. ১৭৫।
- ↑ Donner ১৯৯৩, পৃ. ২০, টীকা ১২৫।
- ↑ ক খ Blankinship ১৯৯৩, পৃ. ১৪৩, টীকা ৭৭৬।
- ↑ Donner ১৯৯৩, পৃ. ১৮৫ টীকা ১১৩১, ১৯০ টীকা ১১৫৬।
- ↑ Blankinship 1993, পৃ. 143, notes 776–777।
- ↑ ক খ Hinds 1991, পৃ. 138।
- ↑ Lecker 1994, পৃ. 343।
- ↑ ক খ Lecker 2004, পৃ. 693।
- ↑ Donner 1981, পৃ. 86–87।
উৎস
সম্পাদনা- Donner, Fred M., সম্পাদক (১৯৯৩)। The History of al-Ṭabarī, Volume X: The Conquest of Arabia, A.D. 632–633/A.H. 11। SUNY Series in Near Eastern Studies.। Albany, New York: State University of New York Press। আইএসবিএন 978-0-7914-1071-4।
- Donner, Fred M. (১৯৮১)। The Early Islamic Conquests। Princeton: Princeton University Press। আইএসবিএন 0-691-05327-8।
- Blankinship, Khalid Yahya, সম্পাদক (১৯৯৩)। The History of al-Ṭabarī, Volume XI: The Challenge to the Empires। SUNY Series in Near Eastern Studies.। Albany, New York: State University of New York Press। আইএসবিএন 978-0-7914-0851-3।
- Hinds, M. (১৯৯১)। "Makhzūm"। Bosworth, C. E.; van Donzel, E. & Pellat, Ch.। The Encyclopaedia of Islam, New Edition, Volume VI: Mahk–Mid। Leiden: E. J. Brill। পৃষ্ঠা 137–140। আইএসবিএন 90-04-08112-7।
- Kister, M. J. (১৯৭৫)। ""Call Yourselves by Graceful Names ..."। Lectures in Memory of Professor Martin M. Plessner। Jerusalem: Institute of Asian and African Studies, The Hebrew University। পৃষ্ঠা 3–25।
- Landau-Tasseron, Ella, সম্পাদক (১৯৯৮)। The History of al-Ṭabarī, Volume XXXIX: Biographies of the Prophet's Companions and their Successors: al-Ṭabarī's Supplement to his History। SUNY Series in Near Eastern Studies.। Albany, New York: State University of New York Press। আইএসবিএন 978-0-7914-2819-1।
- Lecker, M. (২০০৪)। "Al-Ridda"। Bearman, P. J.; Bianquis, Th.; Bosworth, C. E.; van Donzel, E. & Heinrichs, W. P.। The Encyclopaedia of Islam, New Edition, Volume XII: Supplement। Leiden: E. J. Brill। পৃষ্ঠা 692–695। আইএসবিএন 90-04-13974-5।
- Lecker, Michael (নভেম্বর ১৯৯৪)। "Kinda on the Eve of Islam and during the "Ridda""। Journal of the Royal Asiatic Society। 4 (3): 333–356। জেস্টোর 25182938। ডিওআই:10.1017/S1356186300005964।