মিশরের মধ্য রাজ্য
মিশরের মধ্য রাজ্য বা পুনঃএকীভবনের পর্যায় হল প্রাচীন মিশরের ইতিহাসের এমন এক পর্যায়, যার সূত্রপাত ঘটেছিল প্রথম অন্তর্বর্তী পর্যায় নামে পরিচিত এক রাজনৈতিক যুগ-বিভাগের ঠিক করেই। আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ২০৪০ থেকে ১৭৮২ অব্দ পর্যন্ত মধ্য রাজ্যের অস্তিত্ব ছিল। একাদশ রাজবংশের ফ্যারাও দ্বিতীয় মেনটুহোটেপের রাজত্বকালে মিশরের পুনরায় একীভবনের মধ্য দিয়ে এই যুগের সূত্রপাত ঘটে এবং এই যুগ সমাপ্ত হয় দ্বাদশ রাজবংশের শাসনকালের সমাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে। একাদশ রাজবংশের ফ্যারাওদের রাজধানী ছিল থিবস এবং দ্বাদশ রাজবংশের ফ্যারাওরা রাজ্যশাসন করতেন এল-লিশত থেকে।
মিশরের মধ্য রাজ্য | |||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ২০৫৫ অব্দ–আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১৬৫০ অব্দ | |||||||||
রাজধানী | থিবস, আইতজ্তাওয়ি | ||||||||
প্রচলিত ভাষা | প্রাচীন মিশরীয় | ||||||||
ধর্ম | প্রাচীন মিশরীয় ধর্ম | ||||||||
সরকার | দৈব, নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্র | ||||||||
ফ্যারাও | |||||||||
• আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ২০৬১–২০১০ অব্দ | দ্বিতীয় মেনটুহোটেপ (প্রথম) | ||||||||
• আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১৬৫০ অব্দ | শেষ রাজার নাম নিয়ে গবেষকদের মধ্যে মতান্তর রয়েছে: মেরনেফেররে আয় অথবা ত্রয়োদশ রাজবংশের শেষ রাজা | ||||||||
ইতিহাস | |||||||||
• প্রতিষ্ঠা | আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ২০৫৫ অব্দ | ||||||||
• বিলুপ্ত | আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১৬৫০ অব্দ | ||||||||
| |||||||||
বর্তমানে যার অংশ | মিশর |
১৮৪৫ সালে জার্মান মিশরতত্ত্ববিদ ব্যারন ফন বুনসেন মধ্য রাজ্যকে তিনটি "স্বর্ণযুগ"-এর অন্যতম হিসেবে দেখার ধারণাটির প্রচলন ঘটান। ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে এটির সংজ্ঞা গুরুত্বপূর্ণভাবে বিবর্তিত হয়।[১] কোনও কোনও গবেষক মিশরের ত্রয়োদশ রাজবংশটিকে সম্পূর্ণত এই যুগের অন্তর্গত হিসেবে ধরেন; সেক্ষেত্রে মধ্য রাজ্যের সমাপ্তিকালটি দাঁড়ায় আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১৬৫০ অব্দের কাছাকাছি। অন্যান্য গবেষকেরা মেরনেফেররে আয়কে এই যুগের শেষ ফ্যারাও হিসেবে ধরার পক্ষপাতী। উল্লেখ্য, উচ্চ ও নিম্ন মিশরের উভয় প্রান্তেই প্রত্যয়িত এই রাজবংশের শেষ রাজা মেরনেফেররে আয়ের রাজত্বকাল শেষ হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব ১৭০০ অব্দের কাছাকাছি সময়ে। মধ্য রাজ্যের আমলে জনপ্রিয় ধর্মবিশ্বাসে ওসাইরিস সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ দেবতায় পরিণত হয়েছিলেন।[২] মধ্য রাজ্যের অবসানের পর মিশরের দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী পর্যায়ের সূচনা ঘটে, যে যুগে পশ্চিম এশিয়ার হাইকসোসদের মিশর আক্রমণের ফলে সেই দেশে বিদেশি অনুপ্রবেশের আরেকটি পর্যায় সূচিত হয়।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Schneider, Thomas (২৭ আগস্ট ২০০৮)। "Periodizing Egyptian History: Manetho, Convention, and Beyond"। Klaus-Peter Adam। Historiographie in der Antike। Walter de Gruyter। পৃষ্ঠা 181–197। আইএসবিএন 978-3-11-020672-2।
- ↑ David, Rosalie (2002). Religion and Magic in Ancient Egypt. Penguin Books. p. 156
গ্রন্থপঞ্জি
সম্পাদনা- Aldred, Cyril (১৯৮৭)। The Egyptians। Thames and Hudson।
- Arnold, Dorothea (১৯৯১)। "Amenemhet I and the Early Twelfth Dynasty at Thebes"। Metropolitan Museum Journal। 26। ডিওআই:10.2307/1512902।
- Bell, Barbara (১৯৭৫)। "Climate and the History of Egypt: The Middle Kingdom"। American Journal of Archaeology। Archaeological Institute of America। 79 (3): 223–269। জেস্টোর 503481।
- Erman, Adolf (২০০৫)। Ancient Egyptian Literature: A Collection of Poems, Narratives and Manuals of Instructions from the Third and Second Millennia BC। Aylward M. Blackman কর্তৃক অনূদিত। New York: Kegan Paul। আইএসবিএন 0-7103-0964-3।
- Foster, John L. (২০০১)। Ancient Egyptian Literature: An Anthology। University of Texas Press। আইএসবিএন 0-292-72527-2।
- Gardiner, Alan (১৯৬৪)। Egypt of the Pharaohs। Oxford University Press।
- Grajetzki, Wolfram (২০০৬)। The Middle Kingdom of Ancient Egypt। Gerald Duckworth & Co. Ltd.। আইএসবিএন 0-7156-3435-6।
- Grimal, Nicolas (১৯৮৮)। A History of Ancient Egypt। Librairie Arthéme Fayard।
- Habachi, Labib (১৯৬৩)। "King Nebhepetre Menthuhotep: his monuments, place in history, deification and unusual representations in form of gods"। Annales du Service des Antiquités de l'Égypte। 19: 16–52।
- Hayes, William (১৯৫৩)। "Notes on the Government of Egypt in the Late Middle Kingdom"। Journal of Near Eastern Studies। 12: 31–39। ডিওআই:10.1086/371108।
- Morenz, Ludwid D. (২০০৩), "Literature as a Construction of the Past in the Middle Kingdom", Tait, John W., 'Never Had the Like Occurred': Egypt's View of Its Past, Martin Worthington কর্তৃক অনূদিত, London: University College London, Institute of Archaeology, an imprint of Cavendish Publishing Limited, পৃষ্ঠা 101–118, আইএসবিএন 1-84472-007-1
- Murnane, William J. (১৯৭৭)। Ancient Egyptian Coregencies। Studies in Ancient Oriental Civilization। 40। The Oriental Institute of the University of Chicago। আইএসবিএন 0-918986-03-6।
- Parkinson, R. B. (২০০২)। Poetry and Culture in Middle Kingdom Egypt: A Dark Side to Perfection। London: Continuum। আইএসবিএন 0-8264-5637-5।
- Redford, Donald (১৯৯২)। Egypt, Canaan, and Israel in Ancient Times । Princeton University Press। আইএসবিএন 0-691-00086-7।
- Richards, Janet (২০০৫)। Society and Death in Ancient Egypt। Cambridge University Press। আইএসবিএন 0-521-84033-3।
- Shaw, Ian; Nicholson, Paul (১৯৯৫)। The Dictionary of Ancient Egypt। Thames and Hudson।
- Shaw, Ian (২০০০)। The Oxford history of ancient Egypt । Oxford University Press। আইএসবিএন 0-19-280458-8।
- Simpson, William Kelly (১৯৭২)। The Literature of Ancient Egypt: An Anthology of Stories, Instructions, and Poetry। translations by R.O. Faulkner, Edward F. Wente, Jr., and William Kelly Simpson। New Haven and London: Yale University Press। আইএসবিএন 0-300-01482-1।
- Teeter, Emily (১৯৯৪)। "Egyptian Art"। Art Institute of Chicago Museum Studies। The Art Institute of Chicago। 20 (1): 14–31। জেস্টোর 4112949। ডিওআই:10.2307/4112949।
- Trigger, B.; Kemp, Barry; O'Connor, David; Lloyd, Alan (১৯৮৩)। Ancient Egypt: A Social History। Cambridge University Press।
- Wegner, Josef (১৯৯৬)। "The Nature and Chronology of the Senwosret III–Amenemhat III Regnal Succession: Some Considerations Based on New Evidence from the Mortuary Temple of Senwosret III at Abydos"। Journal of Near Eastern Studies। 55: 249–279। ডিওআই:10.1086/373863।
আরও পড়ুন
সম্পাদনা- Allen, James P. Middle Egyptian Literature: Eight Literary Works of the Middle Kingdom. Cambridge, UK: Cambridge University Press, 2015.
- Bourriau, Janine. Pharaohs and Mortals: Egyptian Art in the Middle Kingdom. Cambridge, UK: Fitzwilliam Museum, 1988.
- Grajetzki, Wolfgang. The Middle Kingdom of Ancient Egypt: History, Archaeology and Society. Bristol, UK: Golden House, 2006.
- Kemp, Barry J. Ancient Egypt: Anatomy of a Civilization. 2d ed. London: Routledge, 2006.
- Oppenheim, Adela, Dieter Arnold, and Kei Yamamoto. Ancient Egypt Transformed: The Middle Kingdom. New York: Metropolitan Museum of Art, 2015.
- Parkinson, Richard B. Voices From Ancient Egypt: An Anthology of Middle Kingdom Writings. Norman: University of Oklahoma Press, 1991.
- --. Poetry and Culture in Middle Kingdom Egypt: A Dark Side to Perfection. London: Continuum, 2002.
- Szpakowska, Kasia. Daily Life in Ancient Egypt. Oxford: Blackwell, 2008.
- Wendrich, Willeke, ed. Egyptian Archaeology. Chichester, UK: Wiley-Blackwell, 2010.
পূর্বসূরী প্রথম অন্তর্বর্তী পর্যায় |
মিশরীয় ইতিহাসের যুগবিভাগ আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ২০৫৫–১৬৫০ অব্দ |
উত্তরসূরী দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী পর্যায় |