মিউনিখ বিমান দুর্ঘটনা
মিউনিখ বিমান দুর্ঘটনা সংঘঠিত হয়েছিল ১৯৫৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি। এ দিনে ব্রিটিশ ইউরোপীয়ান এয়ারওয়েজ ফ্লাইট ৬০৯ বরফে ঢাকা জার্মানির মিউনিখ-রিয়েম এয়ারপোর্টের রানওয়ে থেকে তৃতীয় বারের মত উড্ডয়নের চেষ্টা করার সময় ভূপাতিত হয়। বিমানের যাত্রী ছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ফুটবল দল, যাদের তৎকালীণ সময়ে বাজবি বেইবস নামে ডাকা হতো এবং প্রচুর সমর্থক ও সাংবাদিক। বিমানের ৪৪ জন যাত্রীর মধ্যে ২৩ জন যাত্রী এই বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান।
এই ফ্লাইটটি পরিচালনা করে ব্রিটিশ ইউরোপীয়ান এয়ারওয়েজে একটি "এলিজাবেথীয়" শ্রেণীর এয়ারস্পীড অ্যাম্বাসেডর চার্টার বিমান জি-এএলজেডইউ (G-ALZU) লর্ড বার্ঘলি।
পটভূমি
সম্পাদনা১৯৫৫ সাল থেকে ইউরোপীয়ান কাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যদিও কোন ইংরেজ ক্লাব ফুটবল লীগের আইনের কারণে এই প্রতিযোগিতার প্রথম আসরে অংশ নিতে পারেনি। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ১৯৫৬-৫৭ মৌসুমের ইউরোপীয়ান কাপে প্রথম অংশ নেয় এবং সেমি-ফাইনালে উন্নীত হয়, যাতে তারা চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদের কাছে পরাজিত হয়। এ কারণে ১৯৫৭-৫৮ মৌসুমের অন্যতম আলোচিত দল ছিল। ঘরোয়া লীগের খেলাগুলো শনিবারে এবং ইউরোপীয়ান খেলাগুলো সপ্তাহের মধ্যভাগে অনুষ্ঠিত হত। তাই বিমানযোগে যাতায়াত ঝুঁকিপূর্ণ হলেও লীগ সময়সূচি অক্ষুণ্ণ রাখতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হাতে অন্য বিকল্প ছিল না।[১] ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এই দলটি বাজবি বেইবস নামে পরিচিত ছিল তৎকালীন ম্যানেজার স্যার ম্যাট বাজবির নামে। এই দলের খেলোয়াড়দের গড় বয়স খুব কম ছিল।
ক্লাবটি ইউরোপীয়ান কাপে যুগোস্লাভিয়ার দল রেড স্টার বেলগ্রেডের বিপক্ষে একটি ম্যাচ খেলার জন্য একটি বিমান ভাড়া করে। খেলাটি ৩-৩ গোলে ড্র হয় এবং ইউনাইটেড দুই লেগের খেলায় ৫-৪ গোলে জয়ী হয়। ইউনাইটেড খেলোয়াড় জনি বেরি পাসপোর্ট হারিয়ে ফেলার কারণে বিমান ছাড়তে দেরি হয়,[২] এবং পরে মিউনিখে তেল নেয়ার জন্য থামে।
সেই দুর্ঘটনা
সম্পাদনাবিমানের পাইলট ক্যাপ্টেন জেমস থেইন দুইবার উড্ডয়নের চেষ্টা করেন, কিন্তু ইঞ্জিনের সমস্যার কারণে দুইবারের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। বিকাল ৩:০৪ টায় তৃতীয়বারের মত চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এবারে বিমান উড্ডয়নের জন্য যথেষ্ট উচ্চতায় পৌছতে পারেনি, ফলে বিমানটি এয়ারপোর্টের সীমানা প্রাচীরে আছড়ে পড়ে, এবং পরে একটি বাড়ীতে ধাক্কা লাগে। সেসময় বাড়ীটি খালি ছিল।
প্রথমে পাইলটের ভুলের কারণে বিমান দুর্ঘটনাটি হয়েছিল বলে মনে করা হলেও পরবর্তীকালে দেখা গেছে রানওয়ের শেষপ্রান্তে জমে থাকা তুষারের কারণেই এটি হয়েছিল। এই তুষারের কারণে বিমানটি উড্ডয়নের জন্য পর্যাপ্ত গতি পেতে ব্যর্থ হয়। উড্ডয়নের শুরুতে বিমানটি ১১৭ নট গতি প্রাপ্ত হয়েছিল কিন্তু তুষারের কারণে গতি কমে ১০৫ নটে নেমে আসে, যেটি আকাশে উঠানোর জন্য খুবই কম। এই ছোট রানওয়েতে বিমান উড্ডয়ন বাতিল করার মত পর্যাপ্ত সময়ও ছিল না। পুরানো মডেলের বিমানগুলোর নকশায় অভিকর্ষ কেন্দ্রের অবস্থানের কারণে এদের উড্ডয়নে তুষারপাত কোন সমস্যা করত না। কিন্তু নতুন মডেলের অ্যাম্বাসেডরের অভিকর্ষ কেন্দ্র সঠিক স্থানে রাখা হয়নি। এই দুর্ঘটনার ফলে বিমান ও রানওয়ে পরিচালনা ক্ষেত্রে বিশাল অনুসন্ধান চলে, এবং এ ক্ষেত্রে নিয়ম কানুনে পরিবর্তন আনা হয়।
দুরঘটনার কারণ সম্পর্কে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার পরও পশ্চিম জার্মানির কর্তৃপক্ষ (যারা আইনত বিমানবন্দরের রানওয়ের পরিচর্যার দায়িত্বপ্রাপ্ত) ক্যাপ্টেন থেইনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। তারা দাবি করে তিনি বিমানের ডানাগুলোকে পর্যাপ্ত ডি-আইসিং না করেই উড্ডয়নের চেষ্টা করেছেন, তাই এই দুর্ঘটনার জন্য তিনিই একমাত্র দায়ী, যদিও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান কর্তৃপক্ষের দাবি সঠিক নয়। জার্মান কর্তৃপক্ষের এই দাবির ভিত্তি ছিল বিমানের একটি ছবি (বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত - ডানে দেখানো হয়েছে) যা টেক-অফের সামান্য পরেই তোলা হয়েছিল। এটিতে দেখা যায় বিমানের ডানার উপরের অংশে তুষার জমা পড়েছে। যখন প্রকৃত নেগেটিভ পরীক্ষা করা হয়, তখন তাতে কোন তুষার দেখা যায়নি। তুষার দেখার মূল কারণ ছিল আরেকটি নকল-নেগেটিভ থেকে ছবিটি প্রস্তুত করা হয়েছিল। কোন কারণে জার্মান তদন্ত কমিটি সাক্ষীদের হাজির না করেই থেইনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। থেইনের বিরুদ্ধে এই মামলা ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত চলেছে এবং শেষ পর্যন্ত তাকে অভিযোগ থেকে নিস্কৃতি দেয়া হয়। ব্রিটিশ ইউরোপীয়ান এসোসিয়েশন দুর্ঘটনার পর থেইনকে বরখাস্ত করে। তিনি এরপর অবসর নেন এবং বার্কশায়ারে তার মুরগির খামার প্রতিষ্ঠা করেন। হার্ট অ্যাটাকের কারণে ১৯৭৫ সালে ৫৩ বছর বয়সে তিনি মারা যান।
দুর্ঘটনার পর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
সম্পাদনাদুর্ঘটনায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাতজন খেলোয়াড় ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন এবং দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্ত ডানকান এডওয়ার্ডস ২১শে ফেব্রুয়ারি মারা যায়। অন্য দুজন খেলোয়াড়কে দুর্ঘটনার জেরে অবসর নিতে হয়। ম্যাট বাজবি গুরুতর আহত হন এবং তাকে বেশ কিছুকাল হাসপাতালে থাকতে হয়। এসময় জোর অনুমান চলছিল যে ক্লাবটিকে বন্ধ করে দেয়া হবে, কিন্তু ইউনাইটেডের কোচ জেমস মারফি ম্যানেজারের দায়িত্ব নেন এবং জীর্ণ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কোনমতে ১৯৫৭-৫৮ মৌসুমে লীগ শেষ করে।[৩] এ দলটি ছিল প্রধানত বিকল্প ও যুব দলের খেলোয়াড়দের নিয়ে গঠিত। দুর্ঘটনার ঠিক পরের লীগ খেলায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড শেফিল্ড ওয়েডনেজডেকে ৩–০ গোলে পরাস্ত করে। এই খেলার পরের অনুষ্ঠানে কোন ইউনাইটেড খেলোয়াড় অংশ নেয় নি, যেখানে সকলের থাকার কথা ছিল।
যদিও দলের লীগ ফলাফল ভাল ছিলনা তবে এই দল নিয়েই তারা এফএ কাপের ফাইনালে পৌছায় যাতে তারা ২–০ গোলে বোল্টন ওয়ান্ডারার্স দলের কাছে পরাস্ত হয়। পরের মৌসুমে বাজবি দলের ম্যানেজার হিসেবে প্রত্যাবর্তন করেন এবং শেষপর্যন্ত দ্বিতীয় প্রজন্মের বাজবি বেইবস গঠনে সমর্থ হন। এ সময় দলে আসেন জর্জ বেস্ট ও ডেনিস ল এর মত খেলোয়াড়েরা যারা দুর্ঘটনার এক দশক পর ১৯৬৮ সালে বেনফিকাকে হারিয়ে প্রথম ইউরোপীয়ান কাপ শিরোপা জয়লাভ করেন। দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া ববি চার্লটন ও বিল ফোকস ও সেই দলের সদস্য ছিলেন।
আজ পর্যন্ত, বিপক্ষ দলের কিছু সমর্থক, বিশেষ করে স্থানীয় প্রতিপক্ষ ম্যানচেস্টার সিটির সমর্থকেরা, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে খেলায় সেই দুর্ঘটনার ব্যাঙ্গাত্নক অনুকরণ করে ইউনাইটেড সমর্থকদেরকে তীব্র কটাক্ষ করেন।[৪][৫]
শ্রদ্ধাঞ্জলি
সম্পাদনাসঙ্গীত
সম্পাদনা- ইংরেজ লোকগীতির ব্যান্ড দ্য স্পিনার্স মিউনিখ দুর্ঘটনা নিয়ে ১৯৬২ সালে একটি গান প্রকাশ করে যার শিরোনাম দ্য ফ্লাওয়ার্স অব ম্যানচেস্টার (ম্যানচেস্টারের ফুল)।
- গায়ক মরিসেই ২০০৪ সালে "মিউনিখ এয়ার ডিজাস্টার, ১৯৫৮" নামে একটি গান প্রকাশ করেন।
- ইংরেজ ব্যান্ড দ্য ফিউচারহেডস দুর্ঘটনা সম্মানে তাদের অ্যালবামের নাম দেন 'নিউজ এন্ড ট্রিবিউটস (দ্য ডেইলি মিরর এর একটি শিরোনাম)।
- ব্রিটিশ পপ/লোকগীতি শিল্পী ইয়েইন ম্যাথিউস একটি ক্যাপেলা গান রেকর্ড করেন "বাজবি'স বেইবস" নামে, সেই ঘটনায় বাজবির প্রতিক্রিয়া নিয়ে।
চলচ্চিত্র
সম্পাদনাব্যারি নাভিদি বর্তমানে মিউনিখ দুর্ঘটনা নিয়ে একটি হলিউড ছবির পান্ডুলিপি লিখছেন। ২০০৫ সালের ২২ এপ্রিল ম্যানচেস্টার ইভনিং নিউজ একটি সংবাদ প্রকাশ করে জানায় দুর্ঘটনা থেকে বেচে যাওয়া কারও সাক্ষাৎকার নেয়া হয়নি, তাই কীভাবে সত্য কাহিনী দেখানো হবে তা নিয়ে তারা প্রশ্ন তোলে।
টেলিভিশন
সম্পাদনা২০০৬ সালের ১০ জানুয়ারি বিবিসি একটি ডকুমেন্টারি চলচ্চিত্র প্রকাশ করে সারভাইভিং ডিজাস্টার্স নামে। সিরিজটি লিথুয়ানিতে ধারণ করা হয়।
দুর্ঘটনায় যারা মারা গেছেন
সম্পাদনাম্যানচেস্টার ইউনাইটেড খেলোয়াড়
সম্পাদনাঅন্যান্য
সম্পাদনা- ওয়াল্টার ক্রিকমার - ক্লাব সচিব
- বার্ট হোয়ালি - প্রধান কোচ
- টম কারি - প্রশিক্ষক
- অ্যালফ ক্লার্ক - সাংবাদিক, ম্যানচেস্টার ইভনিং ক্রোনিকি
- ডন ডেভিস - সাংবাদিক, ম্যানচেস্টার গার্ডিয়ান
- জর্জ ফলোস - সাংবাদিক, ডেইলি হেরাল্ড
- টম জ্যাকস্ন - সাংবাদিক, ম্যানচেস্টার ইভনিং নিউজ
- আর্চি লেডব্রুক - সাংবাদিক, ডেইলি মিরর
- হেনরি রোজ - সাংবাদিক, ডেইলি এক্সপ্রেস
- এরিক থম্পসন - সাংবাদিক, ডেইলি মেইল
- ফ্রাঙ্ক সুইফট - সাংবাদিক, নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড (সাবেক ইংল্যান্ড ও ম্যানচেস্টার সিটি গোলরক্ষক)
- ক্যাপ্টেন কেনেথ "কেন" রেমেন্ট - ব্রিটিশ সহকারী-পাইলট। মি. রেমেন্ট দুর্ঘটনার পর একাধিক আঘাত পান এবং তিন সপ্তাহ শেষে মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ জনিত কারণে মারা যান। যে দুইজন ঘটনার পরে হাসপাতালে মারা গেছেন তাদের মধ্যে তিনি একজন। (অন্যজন ডানকান এডওয়ার্ডস)
- বেলা মিক্লস - ট্রাভেল এজেন্ট
- উইলি স্যাটিনফ - সমর্থক
- টম ক্যাবল - স্টুয়ার্ড
যারা বেঁচে গেছেন
সম্পাদনাম্যানচেস্টার ইউনাইটেড খেলোয়াড়
সম্পাদনাএখনো বেঁচে আছেন:
অন্যান্য
সম্পাদনা- ম্যাট বাজবি - দলীয় ম্যানেজার
- ফ্রাঙ্ক টেইলর - সাংবাদিক
- জেমস থেইন - ক্যাপ্টেন
- জর্জ (বিল) রজার্স - রেডিও কর্মকর্তা
- পিটার হোয়ার্ড - চিত্রগ্রাহক
এখনো বেঁচে আছেন:
- টেড এলিয়ার্ড - চিত্রগ্রাহক
- মিসেস ভেরা লুকিচ ও শিশুকন্যা ভেনোনা - যাত্রী (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড খেলোয়াড় হ্যারি গ্রেগ বাঁচিয়েছেন।)
- মিসেস মিক্লস -বেলা মিকলসের স্ত্রী, সেই ট্রাভেল এজেন্টের স্ত্রী যিনি ভ্রমণের আয়োজন করেছেন ও দুর্ঘটনায় মারা গেছেন
- মি. এন টমাসেভিচ - যাত্রী
- রোজমেরি চেভার্টন - স্টুয়ার্ডেস
- মার্গারেট বেলিজ - স্টুয়ার্ডেস
আরো দেখুন
সম্পাদনা- ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাব
- বানিজ্যিক বিমানের ঘটনা ও দুর্ঘটনার তালিক
- আমেরিকান সেনাবাহিনীর একটি বিমান মধ্য মিউনিখে ভূপাতিত হয় ১৯৬০ সালে।
- The 1989 crash of Surinam Airways Flight PY764 killed a group of Surinamese players known as "The Colorful 11", whose members played professional football in the Netherlands.
- Nearly the entire Zambia national football team was killed in a 1993 crash.
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- Air Disasters by Stanley Stewart - Arrow Books (UK) 1986/89 - আইএসবিএন ০-০৯-৯৫৬২০০-৬
- Manchester United — The Betrayal of a Legend by Michael Crick and David Smith - Pan Books 1990 - আইএসবিএন ০-৩৩০-৩১৪৪০-৮
- Airspeed's elegant Ambassador - Part 3 by Don Middleton - Aeroplane Monthly - April 1982 issue
টুকিটাকি
সম্পাদনা- ↑ Manchester United — The Betrayal of a Legend 39.
- ↑ Manchester United — The Betrayal of a Legend 46.
- ↑ ওয়েলস জাতীয় দলের ম্যানেজার হিসেবে এওয়ে ম্যাচ খেলার জন্য মারফি সেসময় আর বেলগ্রেড যাননি
- ↑ "Fans urged to stop Munich chants"। BBC News। 2006-01-03। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ "Ugly chants born of misplaced hatred and not of passion"। The Independent। 2006-02-20। ২০০৭-১০-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৬-০৫। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য)