মার্শিয়া (ইংরেজি: Mercia; /ˈmɜːrʃiə, -ʃə/,[] /ˈmɜːsɪə/;[] প্রাচীন ইংরেজি: Miercna rīċe‎; লাতিন: Merciorum regnum) ছিল অ্যাংলো-স্যাক্সন হেপ্টার্কির অন্যতম একটি রাজ্য। এই রাজ্যের নামটি প্রাচীন ইংরেজি Mierce বা Myrce (পশ্চিম স্যাক্সন উপভাষা; মার্শিয়ান উপভাষায় Merce) শব্দের লাতিনকৃত রূপ, যার অর্থ ছিল "সীমান্তের অধিবাসী"। তিন শতাব্দী কাল পরবর্তীকালে যে অঞ্চল ইংল্যান্ড নামে পরিচিত হয়েছিল সেই অঞ্চলে প্রভুত্ব করেন মার্শিয়ার শাসকবর্গ। তারপর ক্রমে ক্রমে এই রাজ্যের পতন ঘটে এবং ওয়েসেক্স ঘটনাচক্রে রাজ্যটিকে জয় করে সকল রাজ্যগুলিকে একত্র করে ইংল্যান্ড রাজ্য গড়ে তোলে।[]

মার্শিয়া রাজ্য

Miercna rīċe (প্রাচীন ইংরেজি)
Merciorum regnum (লাতিন)
৫২৭–৯১৮
মার্শিয়া রাজ্য (মোটা রেখায়) এবং মার্শিয়ান প্রাধান্যের যুগে রাজ্যের বিস্তার (সবুজ আভায়)
মার্শিয়া রাজ্য (মোটা রেখায়) এবং মার্শিয়ান প্রাধান্যের
যুগে রাজ্যের বিস্তার (সবুজ আভায়)
অবস্থাস্বাধীন রাজ্য(৫২৭–৮৭৯)
ওয়েসেক্সের উপভোক্তা রাজ্য (আনু. ৮৭৯–৯১৮)
রাজধানীট্যামওয়ার্থ
প্রচলিত ভাষাপ্রাচীন ইংরেজি, লাতিন
ধর্ম
পৌত্তলিকতাবাদ, খ্রিস্টধর্ম
সরকারনিরঙ্কুশ রাজতন্ত্র
শাসক 
• ৫২৭–?
আইসেল (প্রথম)
• আনু. ৬২৬–৬৫৫
পেন্ডা
• ৬৫৮-৬৭৫
উলফহিয়ার
• ৭১৬–৭৫৭
অ্যাথেলবাল্ড
• ৭৫৭–৭৯৬
ওফা
• ৭৯৬–৮২১
কোয়েনউলফ
• ৮২১–৮২৩
সেওলউলফ
• ৮২৩–৮২৬
বেওরনউলফ
• আনু. ৮৮১–৯১১
অ্যাথেলরেড
• ৯১১–৯১৮
অ্যাথেলফ্ল্যাড
• ৯১৮
অ্যালফউইন (শেষ)
আইন-সভাউইটেনাগেমোট
ঐতিহাসিক যুগহেপটার্কি
• প্রতিষ্ঠা
৫২৭
• বিলুপ্ত
৯১৮
মুদ্রাস্কিট
পূর্বসূরী
উত্তরসূরী
সাব-রোমান ব্রিটেন
Hwicce
লিন্ডসে রাজ্য
নর্থামব্রিয়া রাজ্য
ওয়েসেক্স রাজ্য
বর্তমানে যার অংশ

মার্শিয়া রাজ্যের কেন্দ্র ছিল ট্রেন্ট নদী ও তার শাখানদী-বিধৌত উপত্যকা। এই অঞ্চলটি এখন ইংলিশ মিডল্যান্ডস নামে পরিচিত। রাজ্যের কোনও নির্দিষ্ট রাজধানী শহর ছিল না, রাজদরবার বসত রাজ্যের নানা স্থানে ঘুরে ঘুরে। মনে করা হয়, গোড়ার দিকে রেপটন ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ শাসনকেন্দ্র। অ্যাংলো-স্যাক্সন ক্রনিকল অনুযায়ী, রেপটন থেকেই ৮৭৩-৮৭৪ সালে গ্রেট হিদেন সেনাবাহিনী মার্শিয়ার রাজাকে ক্ষমতাচ্যূত করে। আরও মনে করা হয় যে, এই ঘটনার অল্পকাল পূর্বে রাজা ওফা শাসনকেন্দ্র হিসেবে ট্যামওয়ার্থকে বেছে নিয়েছিলেন। সেখানেই তাঁর রাজ্যাভিষেক ঘতেছিল এবং অনেকগুলি বড়োদিন তিনি সেখানেই অতিবাহিত করেছিলেন।

তিনশো বছর ধরে (৬০০ থেকে ৯০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে) হেপ্টার্কির অপর ছ’টির মধ্যে পাঁচটি রাজ্য (পূর্ব অ্যাংলিয়া, এসেক্স, কেন্ট, সাসেক্স ও ওয়েসেক্স) জয় করে বা সেগুলিকে করদ রাজ্যে পরিণত করে মার্শিয়া হাম্বার নদীর দক্ষিণতীরবর্তী ইংল্যান্ডে আধিপত্য বিস্তার করে। এই সময়কালটি মার্শিয়ান প্রাধান্যের যুগ নামে পরিচিত। রাজা ওফার (যার স্মৃতি উল্লেখযোগ্যভাবে রক্ষিত হয়েছে তাঁর ডাইকে) রাজত্বকালে মার্শিয়া ও ওয়েলশ রাজ্যগুলির সীমানা চিহ্নিত হয়েছিল। এই রাজত্বকাল কখনও কখনও "মার্শিয়ার স্বর্ণযুগ" হিসেবে বর্ণিত হয়। নিকোলাস ব্রুকসের মতেম নবম শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত মার্শিয়ান বিভিন্ন আদি অ্যাংলো-স্যাক্সন জাতির মধ্যে সবচেয়ে সফল গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছিল।[] স্যার ফ্র্যাংক স্টেনটনের মতো কোনও কোনও ইতিহাসবিদ মনে করেন, হাম্বার মোহনার দক্ষিণে ইংল্যান্ডের ঐক্যবদ্ধকরণ ওফার রাজত্বকালেই ঘটেছিল।[]

গোড়ার দিকে মার্শিয়া ছিল একটি পৌত্তলিকতাবাদী রাজ্য। ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দে রাজা পেডা খ্রিস্টধর্মে ধার্মান্তরিত হন এবং সপ্তম শতাব্দীর শেষভাগের মধ্যেই খ্রিস্টধর্ম এই রাজ্যে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দেই রেপটনকে কেন্দ্র করে মার্শিয়ার ডায়োসিস স্থাপিত হয় এবং এর প্রথম বিশপ হন ডিউমা। ১৩ বছর রেপটন কেন্দ্র থাকার পর ৬৬৯ খ্রিস্টাব্দে পঞ্চম বিশপ সন্ত চ্যাড বিশপরিক সরিয়ে নিয়ে যান লিচফিল্ডে, সেই থেকে সেখানেই বিশপরিক অবস্থিত। ৬৯১ খ্রিস্টাব্দে মার্শিয়ার ডায়োসিস পরিণত হয় লিচফিল্ডের ডায়োসিসে। ৭৮৯ থেকে ৭৯৯ সাল পর্যন্ত ডায়োসিসটি ছিল একটি আর্চবিশপরিক, কিন্তু ৮০৩ সালে তা বিলুপ্ত হয়। বর্তমান বিশপ মাইকেল ইপগ্রেভ হলেন ডায়োসিস প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৯৯তম বিশপ।

নবম শতাব্দীর শেষে ভাইকিং ও তাদের গ্রেট হিদেন সেনাবাহিনীর বহিরাক্রমণের পরে পূর্বতন মার্শিয়ান রাজ্যের অধিকাংশই ডেনল রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। ডেনল রাজ্যের স্বর্ণযুগে লন্ডন, সমগ্র পূর্ব অ্যাংলিয়া ও উত্তর ইংল্যান্ডের অধিকাংশ অঞ্চল এই রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।

সর্বশেষ মার্শিয়ান রাজা দ্বিতীয় সিওলউলফ মারা যান ৮৭৯ সালে। তারপর সম্ভবত রাজ্যটি রাজনৈতিক স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলে। প্রথম দিকে এই রাজ্য শাসিত হত একজন অধিপতি বা এয়াল্ডোরম্যান কর্তৃক। তিনি ছিলেন মহামতি অ্যালফ্রেডের (যিনি "অ্যাংলো-স্যাক্সনদের রাজা" উপাধি গ্রহণ করেছিলেন) অধিরাজত্বের অধীনস্থ। দশম শতাব্দীর মধ্যভাগে রাজ্যটি কিছুদিনের জন্য স্বাধীনতা অর্জন করেছিল এবং ১০১৬ সালেও অত্যন্ত অল্প সময়ের জন্য স্বাধীন হয়েছিল। যদিত ততদিনে রাজ্যটিকে স্বাধীন রাজ্যের পরিবর্তে ইংল্যান্ড রাজ্যের একটি প্রদেশ মনে করা হত।

মার্শিয়া নামটি এখনও ভৌগোলিক নাম চিহ্নিতকরণের কাজে ব্যবহৃত হয়। সামরিক, সাধারণ, বাণিজ্যিক ও স্বেচ্ছাসেবক সংস্থা সহ বিভিন্ন সংগঠনের নামেও শব্দটি ব্যবহার করা হয়।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Roach & Hartman, eds. (1997) English Pronouncing Dictionary, 15th edition. (Cambridge University Press). p. 316; see also J.C. Wells, Longman Pronunciation Dictionary and Upton et al., Oxford Dictionary of Pronunciation for Current English.
  2. '"Mercian, n. and adj."Oxford English Dictionary (3rd সংস্করণ)। সেপ্টেম্বর ২০০১। সংগ্রহের তারিখ ৩ অক্টোবর ২০২০ 
  3. "Mercia | historical kingdom, England"Encyclopedia Britannica (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১২-২৮ 
  4. *Brooks, N. (১৯৮৯)। "The formation of the Mercian kingdom"। Bassett, Steven। The Origins of Anglo-Saxon Kingdoms। Leicester। পৃষ্ঠা 159। 
  5. Stenton, F. M. (১৯৭০)। "The Supremacy of the Mercian kings"। Stenton, D. M.। Preparatory to Anglo-Saxon England। Oxford। পৃষ্ঠা 48–66। 

আরও পড়ুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা

টেমপ্লেট:Heptarchy