মার্ক বেনসন
মার্ক রিচার্ড বেনসন (ইংরেজি: Mark Benson; জন্ম: ৬ জুলাই, ১৯৫৮) পশ্চিম সাসেক্সের শোরহ্যাম-বাই-সী এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ইংরেজ ক্রিকেটার ও আম্পায়ার। বর্তমানে তিনি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করছেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের পক্ষে ১৯৮৬ সালে একটিমাত্র টেস্ট ও একটিমাত্র একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণের সুযোগ ঘটে তার। এছাড়াও ইংরেজ ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে কেন্টের প্রতিনিধিত্ব করেছেন বেনি ডাকনামে পরিচিত মার্ক বেনসন। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর নেয়ার পর তিনি আইসিসির আম্পায়ারদের এলিট প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত হন।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | মার্ক রিচার্ড বেনসন | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | শোরহাম-বাই-সী, সাসেক্স, ইংল্যান্ড | ৬ জুলাই ১৯৫৮|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | বেনি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উচ্চতা | ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি (১.৭৫ মিটার) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | বামহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি অফ স্পিন | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | ব্যাটসম্যান, আম্পায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
একমাত্র টেস্ট (ক্যাপ ৫১৮) | ৩ জুলাই ১৯৮৬ বনাম ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
একমাত্র ওডিআই (ক্যাপ ৮৯) | ১৬ জুলাই ১৯৮৬ বনাম নিউজিল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৮০–১৯৯৫ | কেন্ট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আম্পায়ারিং তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট আম্পায়ার | ২৭ (২০০৪–২০০৯) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই আম্পায়ার | ৭২ (২০০৪–২০০৯) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টি২০আই আম্পায়ার | ১৯ (২০০৭–২০০৯) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ক্রিকইনফো, ৩ ডিসেম্বর ২০১৭ |
কেন্টের সাটন ভ্যালেন্স স্কুলে অধ্যয়ন করেন। শেলে বাজারজাতকরণ সহকারী হিসেবে কাজ করেন। এরপর কেন্টের পক্ষে পূর্ণাঙ্গভাবে খেলার জন্য সময় ব্যয় করেন।
কাউন্টি ক্রিকেটে অংশগ্রহণ
সম্পাদনাবামহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন মার্ক বেনসন। ১৯৮০ সালে প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অভিষেক ঘটে তার। এরপর থেকেই পরবর্তী পনেরো মৌসুম কেন্ট দলের নিয়মিত খেলোয়াড় হিসেবে অংশ নেন। কাউন্টি দলের পক্ষে ৪৮ সেঞ্চুরিসহ আঠারো সহস্রাধিক রান তুলেন। বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তীকালে কেন্টের তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারীর মর্যাদা লাভ করেন। লেস অ্যামিস, ফ্রাঙ্ক ওলি ও কলিন কাউড্রের পর কেন্টের ইতিহাসে ৪০.২৭ গড়ে রান সংগ্রহ করে চতুর্থ সর্বোচ্চ ব্যাটসম্যান হিসেবে আবির্ভূত হন। ১২ মৌসুমে সহস্রাধিক রান তুলেন। তন্মধ্যে, ১৯৮৭ সালে ৪৪.২৩ গড়ে সর্বাধিক ১,৭২৫ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন তিনি কেন্টের পক্ষে ২৬৮টি একদিনের খেলায় অংশ নিয়ে ৩১.৮৯ গড়ে ৭,৮১৪ রান তুলেন। এ সময় তিনি ৫টি শতরান, ৫৩টি অর্ধ-শতরান ও ছয়বার ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেছেন তিনি।
১৯৯১ সালে কেন্টের অধিনায়ক মনোনীত হন মার্ক বেনসন। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম দিনেই নিজস্ব সেরা ২৫৭ রান করেন হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে। তার অধিনায়কত্বে ১৯৯২ সালে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপ ও ১৯৯৩ সালে সানডে লীগে কেন্ট রানার্স-আপ হয়েছিল। ১৯৯৫ সালে সানডে লীগ চ্যাম্পিয়ন হয় ও হেজেস কাপের চূড়ান্ত খেলায় অংশ নেয়। ১৯৯৫ মৌসুম শেষে হাঁটুর আঘাতের কারণে তাকে জোরপূর্বক খেলা থেকে বিরত থাকতে হয়।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
সম্পাদনা১৯৮৬ সালে ইংল্যান্ড দলের সদস্যরূপে ভারতের বিপক্ষে একটিমাত্র টেস্ট ও একটিমাত্র ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার সুযোগ হয় তার।
সামগ্রীকভাবে প্রতি ১০.২৩ ইনিংসে একটি শতরান করতে পেরেছেন যা কেন্টের পক্ষে তৃতীয় সর্বোচ্চ গড়। তন্মধ্যে, ১৯৯৩ সালে ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে উভয় ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেছেন। ১৯৯১ সালে নিল টেলরের সাথে উদ্বোধনী জুটিতে ৩০০ রান তুলেন। ডার্বিশায়ারের বিপক্ষে এ জুটির সংগ্রহটি কেন্টের সর্বোচ্চ জুটিরূপে বিবেচিত। ব্রায়ান লাকহার্স্টের মতে বেনসন কেন্টের যুদ্ধ-পরবর্তীকালের সেরা উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ও তাকে তার প্রজন্মের অলিখিত বীররূপে চিহ্নিত করেন।
আম্পায়ারিত্ব
সম্পাদনাখেলা থেকে অবসর নেয়ার পর আম্পায়ারিত্বের দিকে ঝুঁকে পড়েন মার্ক বেনসন। ১৯৯৭ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে আম্পায়ার জীবনের সূচনা ঘটান। ২০০৪ সালে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রথম অংশগ্রহণ করেন। ২০০৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের আট খেলায় আম্পায়ার হিসেবে খেলা পরিচালনা করেন। মাত্র এক মৌসুম আম্পায়ার প্যানেলের সদস্য হিসেবে খেলা পরিচালনা করার পর সেপ্টেম্বর, ২০০৭ সালে বর্ষসেরা আইসিসি আম্পায়ারের তালিকায় তিনি মনোনয়ন পান।
এপ্রিল, ২০০৬ সাল পর্যন্ত আট টেস্ট ও চব্বিশটি একদিনের আন্তর্জাতিক খেলা পরিচালনা করেন। এ সময়েই তিনজন আম্পায়ারের একজনরূপে এমিরেটস আন্তর্জাতিক আম্পায়ার প্যানেলের সদস্য থেকে এমিরেটস এলিট আম্পায়ার প্যানেলে তাকে উত্তরণ ঘটানো হয়। এছাড়াও, দক্ষিণ আফ্রিকার জোহেন্সবার্গে অনুষ্ঠিত ২০০৭ সালে বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত খেলায় সাইমন টাওফেলের সাথে তিনি আম্পায়ারিত্ব করেন।
২৮ ডিসেম্বর, ২০০৬ তারিখে ডারবানে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতের মধ্যকার দ্বিতীয় টেস্টে হৃদপিণ্ডের উত্তেজনা বৃদ্ধির ফলে মাঠ থেকে সরে আসতে বাধ্য হন তিনি।[১]
সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সালে উপর্যুপরী দ্বিতীয় বছরের মতো বর্ষসেরা আইসিসি আম্পায়ার হিসেবে মনোনয়ন লাভ করেন তিনি।
বিতর্ক
সম্পাদনাজানুয়ারি, ২০০৮ সালের পূর্বে তার আম্পায়ার জীবন ব্যাপক অর্থে বিতর্কবিহীন ছিল। তবে, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের মধ্যকার সিডনি টেস্টে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন। ভারতের বিপক্ষে ঐ সিরিজে বেশকিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্ত প্রদান করা হয় যার ফলে একটি খেলায় স্বল্প ব্যবধানে পরাজয়বরণ করে। ভারতের দলীয় ব্যবস্থাপক চেতন চৌহান এ সিদ্ধান্তে ক্ষুদ্ধ ও মর্মাহত হন বলে জানান ও অযোগ্য আম্পায়ার নিয়োগের কথা তুলে ধরনে। আশাবাদী যে, এ সিরিজে এ ধরনের ঘটনার পুণরাবৃত্তি ঘটবে না। অধিকাংশ সমালোচনাই স্টিভ বাকনরকে ঘিরে হলেও মেলবোর্নের পূর্বেকার টেস্টে সুন্দরভাবে খেলা পরিচালনাকারী বেনসন নিজেই অনেকগুলো ভুল করে বসেন।
পার্থের তৃতীয় টেস্টের জন্য বাকনরের পরিবর্তে বিলি বাউডেনকে স্থলাভিষিক্ত করা হয়। বেনসনকে আর আম্পায়ার হিসেবে দেখা যায়নি। আসাদ রউফ তৃতীয় টেস্টের জন্য তার স্থান দখল করেন।
অবসর
সম্পাদনা৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১০ তারিখে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আম্পায়ারিং জগত থেকে নিজের অবসরের কথা ঘোষণা করেন মার্ক বেনসন।[২] তবে, ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ার হিসেবে খেলা পরিচালনা করতে থাকেন তিনি।[৩]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "BBC SPORT - Cricket - Benson recovers after heart scare"।
- ↑ "Mark Benson - the umpire who made history - calls time on career"। ESPNcricinfo। ২০ জানুয়ারি ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০ জানুয়ারি ২০১৬।
- ↑ "Umpire Benson leaves elite panel"। BBC News। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০।
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে মার্ক বেনসন (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে মার্ক বেনসন (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
- Benson, Doctrove and Rauf elevated to Elite Panel from Cricinfo