মহিউদ্দীন খান আলমগীর

বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ

ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীর (জন্মঃ ১৯৪২) বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ, লেখক, সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ও মন্ত্রী। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেছিলেন।

ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১২ – ২১ নভেম্বর ২০১৩
পূর্বসূরীসাহারা খাতুন
উত্তরসূরীশেখ হাসিনা
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
২৯ জানুয়ারি ১৯৯৭ – ৩০ ডিসেম্বর ১৯৯৭
পূর্বসূরীশেখ হাসিনা
উত্তরসূরীমোশাররফ হোসেন
চাঁদপুর ০১ আসনের সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
২০০৮ – ১০ জানুয়ারি ২০২৪
পূর্বসূরীআ ন ম এহসানুল হক মিলন
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
২৯ অক্টোবর ২০১৬
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম (1942-03-01) ১ মার্চ ১৯৪২ (বয়স ৮২)
কচুয়া, চাঁদপুর, বাংলাদেশ
জাতীয়তাবাংলাদেশী
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
সন্তানজালাল আলমগীর
পিতাশিক্ষাবিদ আশেক আলী খান
প্রাক্তন শিক্ষার্থীঢাকা কলেজ,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,
বস্টন বিশ্ববিদ্যালয়

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

সম্পাদনা

মহিউদ্দীন খান আলমগীর চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার গুলবাহার গ্রামে ১৯৪২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এবং বস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উন্নয়ন অর্থনীতিতে স্নাতক সম্পন্ন করেন এবং বস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেন।

কর্মজীবন

সম্পাদনা

১৯৬২ থেকে ১৯৬৫ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষকতা করেন মহিউদ্দীন খান আলমগীর। সেই বছরই পাকিস্তানের সরকারের সরকারি কর্মকর্তা পদে যোগদান করেন এবং প্রায় ৩২ বছর সরকারের বিভিন্ন পদে কর্মরত ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি পাকিস্তানের উপবিভাগীয় কর্মকর্তা (সিএসপি ডিসি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৬ থেকে ১৯৭৯ পর্যন্ত যশোরের জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বর্তমানে চাঁদপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য। তিনি ১৩ই সেপ্টেম্বর ২০১২ বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পেয়েছিলেন। বর্তমানে সরকারি হিসাব-সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ও ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান । এছাড়াও, তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন। তাকে, পার্বত্য শান্তি চুক্তি ও গঙ্গা পানি চুক্তির রূপকারও বলা হয়।

সমালোচনা

সম্পাদনা

২০১৩ সালে সাভারে নয়তলা ভবন ধসের পর বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বিরোধী দলের (বিএনপি) কর্মীরা হরতালের সময় ঐ ভবনের পিলার ধরে নাড়াচাড়া করে, যা ঐ ভবন ধসের একটি কারণ হতে পারে । তার এই বক্তব্য জনসাধারণের মাঝে ব্যাপক সমালোচিত হয়।[][] মুক্তিযোদ্ধা কাদের সিদ্দিকী মহিউদ্দীনকে পাকিস্তানি দোসর বলে অভিযুক্ত করেন কারণ তিনি ১৯৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে পাকিস্তান সরকারের অধীনে এসডিও পদে কর্মরত ছিলেন।[] স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বিরোধী দলের উপর অত্যচারে পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহারের অভিযোগে মহিউদ্দিনের সমালোচনা করা হয়। এছাড়া পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করে আন্দোলনে অংশ নেয়া জামাত-শিবিরের কর্মীকে হত্যার অভিযোগেও তিনি ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন। এই আন্দোলনটি ছিল যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত তাদের নেতার মুক্তির দাবীতে।[] তিনি তার নিজের প্রতিষ্ঠিত ফারমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান থাকাবস্থায় গ্রাহকের ঋণের ভাগ নিয়েছেন যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুসন্ধানে আরো উঠে আসে কীভাবে ফারমার্স ব্যাংক কার্যক্রম শুরুর পরই অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে। যার ফলে ব্যাংকটিতে নগদ অর্থের চরম সংকট দেখা দেয়। এক পর্যায়ে সংকটে পড়ে ব্যাংকটি গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে অপারগ হয়। পরিস্থিতির চরম অবনতি হওয়ায় ২০১৭ সালের নভেম্বরে পদ ছাড়তে বাধ্য হন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর।[]

২০২৪ সালের অক্টোবরে মহিউদ্দিন খান আলমগীরসহ সাত জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির জন্য মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. YouTubeyoutube.com 
  2. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৩০ মে ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মে ২০১৩ 
  3. Kader Siddiqui urges for tial of Rajakar Mohiuddin Khan AlomgirYouTube। ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৩। 
  4. "Mass killing and Genocide in Bangladesh on 28th February, 2013"CNN iReport। ৭ মে ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মে ২০১৩ 
  5. প্রতিবেদক, নিজস্ব। "ঋণের টাকা ম খা আলমগীর ও চিশতীর হিসাবে"দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-২০ 
  6. "সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম খা আলমগীরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা"বাংলা ট্রিবিউন। ২৩ অক্টোবর ২০২৪।