মহাকর্ষ

ভরসম্পন্ন বস্তুর মধ্যকার আকর্ষণ বল

মহাকর্ষ একটি প্রাকৃতিক ঘটনা যা দ্বারা সকল বস্তু একে অপরকে আকর্ষণ করে। এটির সংজ্ঞা হিসেবে বলা যায় যে, যেকোনো ভরের বস্তুদ্বয় একে অপরকে যে বলে আকর্ষণ করে তা হলো মহাকর্ষ। যদি এই আকর্ষণ পৃথিবী এবং অন্য কোন বস্তুর মাঝে হয় তাহলে তাকে বলা হয় অভিকর্ষ। প্রকৃতির চারটি মৌলিক বলের একটি হলো মহাকর্ষ।[] মহাকর্ষের কারণেই পৃথিবীসহ অন্যান্য গ্রহগুলি সূর্যের চারিদিকে ঘূর্ণায়মান থাকে। স্যার আইজাক নিউটন ১৬৮৭ খ্রিষ্টাব্দে তার ফিলোসফিয়া ন্যাচারালিস প্রিন্সিপিয়া ম্যাথামেটিকা গ্রন্থে এ বিষয়ে ধারণা প্রদান করেন৷

সৌরমণ্ডলের গ্রহগুলি মাধ্যাকর্ষণ বলের কারণে সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘোরে (ছবি স্কেল অনুসারে দেওয়া হয়নি)

মহাকর্ষের বিশেষ উদাহরণ হলো মাধ্যাকর্ষণ বা অভিকর্ষ যার কারণে ভূপৃষ্ঠের উপরস্থ সকল বস্তু ভূকেন্দ্রের দিকে আকৃষ্ট হয়। মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবেই উপরিস্থিত বা ঝুলন্ত বস্তু মুক্ত হলে ভূপৃষ্ঠে পতিত হয়। মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবে ভরসম্পন্ন বস্তুসমূহে ওজন অনুভূত হয়। একটি বস্তুর ভর যত বেশি হয়, মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবে তার ওজনও তত বেশি হয়।

বিজ্ঞানী নিউটন সর্বপ্রথম মহাকর্ষ বলের গাণিতিক ব্যাখ্যা প্রদান করেন। এটি নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র নামে পরিচিত। আধুনিক পদার্থবিদ্যায় মহাকর্ষ সবচেয়ে সঠিকভাবে বর্ণনা করা হয় আইনস্টাইন প্রস্তাবিত আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব দ্বারা। আইনস্টাইনের মতে স্থান-কালের বক্রতার কারণেই মহাকর্ষ বল সৃষ্টি হয়।

ইতিহাস

সম্পাদনা

[[[অতি প্রাচীনকাল থেকেই আকাশের গ্রহ-নক্ষত্র সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের কৌতূহল ছিল। ডেনমার্কের বিশিষ্ট বিজ্ঞানী টাইকো ব্রাহে বহু বছর ধরে বিভিন্ন গ্রহের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করেন এবং তাদের গতি সংক্রান্ত নানা তথ্য সংগ্রহ করেন। পরবর্তীকালে ১৬০০ খ্রিষ্টাব্দে ওই তথ্যগুলির সহায়তায় এবং আরো অনেক পর্যবেক্ষণের পর ডেনমার্কের আরো একজন জ্যোতির্বিদ জোহানেস কেপলার এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, গ্রহগুলি কোনো এক বলের প্রভাবে সূর্যকে কেন্দ্র করে অবিরত ঘুরছে।]]]

নিউটনের তত্ত্ব

সম্পাদনা

স্যার আইজাক নিউটন ১৬৮৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত তার Philosophia Naturalis Principia Mathmatica বইটিতে মহাকর্ষ বিষয়ে ধারণা দেন ৷ তার সূত্রটি ছিল:

এই বিশ্বে যে-কোনো দুটি বস্তুকণা তাদের সংযোজক সরলরেখা বরাবর পরস্পরকে আকর্ষণ করে। এই আকর্ষণ বল কণাদুটির ভরের গুণফলের সমানুপাতিক এবং তাদের দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক।

এ সূত্রানুসারে যদি দুটি বস্তুর ভর যথাক্রমে    এবং মধ্যবর্তী দূরত্ব   হয় তবে

মহাকর্ষীয় বল,   এবং  

 

 

সমানুপাতিক ধ্রুবক   কে সার্বজনীন মহাকর্ষীয় ধ্রুবক বলে।

এই মহাকর্ষীয় ধ্রুবক, G এর মান = 6.673×10^-11 N m^2 kg^-2

মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র

সম্পাদনা

কোন বস্তুর আশে পাশে যে অঞ্চলব্যাপী এর মহাকর্ষীয় প্রভাব বজায় থাকে, অর্থাৎ কোনো​ বস্তু রাখা হলে সেটি আকর্ষণ বল লাভ করে, তাকে মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র বলে।

তাত্ত্বিকভাবে একটি বস্তুর মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র অসীম পর্যন্ত বিস্তৃত।

মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র প্রাবল্য বা মহাকর্ষীয় তীব্রতা

সম্পাদনা

মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রের কোনো বিন্দুতে একক ভরের কোনো বস্তু স্থাপন করলে এর উপর যে বল প্রযুক্ত হয় তাকে ঐ ক্ষেত্রের দরুন ঐ বিন্দুর আকর্ষণ বল বা মহাকর্ষীয় প্রাবল্য বলে।মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রের কোনো বিন্দুতে m ভরের বস্তুর উপর F বল ক্রিয়া করলে ঐ বিন্দুতে মহাকর্ষীয় প্রাবল্য হবে,

 

এই সমীকরণ থেকে দেখা যায়, m এর মান বৃদ্ধি পেলে E হ্রাস পায় ৷ মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রের বিভিন্ন বিন্দুতে প্রাবল্য বিভিন্ন হবে। বস্তুর ভর বেশি হলে প্রাবল্য বাড়বে, দূরত্ব বেশি হলে প্রাবল্য কমবে। এটি একটি ভেক্টর রাশি। এর মান ও দিক আছে ৷ কোনো বিন্দুতে একাধিক প্রাবল্য ক্রিয়াশীল হলে ভেক্টর যোগের পদ্ধতি অনুযায়ী ঐ বিন্দুতে লব্ধি-প্রাবল্য গণনা করা যায় ৷ প্রাবল্যের অভিমুখই মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রের অভিমুখ নির্দেশ করে ৷ অনেক ক্ষেত্রে প্রাবল্য বোঝাতে শুধু মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র লেখা হয় ৷[] এসআই পদ্ধতিতে প্রাবল্যের একক নিউটন প্রতি কিলোগ

মহাকর্ষীয় বিভব

সম্পাদনা

অসীম দূরত্ব থেকে একক ভরের কোনো বস্তুকে মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রের কোনো বিন্দুতে আনতে মহাকর্ষীয় বল দ্বারা সম্পন্ন কাজের পরিমাণকে ঐ বিন্দুর মহাকর্ষীয় বিভব বলে।

অসীম দূরত্ব থেকে m ভরের কোনো​ বস্তুকে মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রের কোনো​ বিন্দুতে আনতে যদি W পরিমাণ কাজ সম্পন্ন হয়,তবে ঐ বিন্দুর মহাকর্ষীয় বিভব V হবে  

মহাকর্ষীয় বিভবের একক

সম্পাদনা

মহাকর্ষীয় বিভব একটি স্কেলার রাশি, এর কোন দিক নেই। এর একক হলো   ।GM/r=GM/infinite W=GM/r সুতরাং A বিন্দুর মহাকর্ষ বিভব [V= GM/r]

আপেক্ষিকতা এবং মহাকর্ষ

আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতা সূত্রে মহাকর্ষ কে সময়-শুন্যের বক্রতা হিসেবে গন্য করা হয়েছে।

সাধারণ আপেক্ষিকতা সূত্র অনুসারে ত্রিমাত্রিক শুন্যতা এবং সময় একসাথে একটি চতুর্মাত্রিক মহাবিশ্বষসৃষ্টি ্টি করেছে।

কোনো ভরযুক্ত বস্তু র উপস্থিতিতে এই সময় শুন্য মাত্রায় বক্রতার সৃষ্টি হয়। একে জিওডেসিক বলা হয়। জিওডেসিক হলো বক্র মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রে কোনো বস্তুর স্বাভাবিক পথ।

যে কোনো বস্তূ বা তড়িৎচৌম্বকীয় তরঙ্গ এই জিওডেসিক পথকে গ্রহণ করে।

আধুনিক গবেষণা

সম্পাদনা

আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানে, সাধারণ আপেক্ষিকতা মাধ্যাকর্ষণ বোঝার কাঠামো হিসাবে ব্যাবহৃত হয়। [] পদার্থবিজ্ঞানীরা আইনস্টাইনের ক্ষেত্র সমীকরণের সমাধান খুঁজে বের করার জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন যা সাধারণ আপেক্ষিকতার ভিত্তি তৈরি করে। তারা এই তত্ত্বের পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং প্রায়ই বিভিন্ন চমৎকার তথ্য খুজে পাচ্ছেন। [][][]

আইনস্টাইন ক্ষেত্রের সমীকরণ

সম্পাদনা

আইনস্টাইন ক্ষেত্র সমীকরণ হল ১০ টি আংশিক ডিফারেনশিয়াল সমীকরণের একটি সিস্টেম যা বর্ণনা করে যে কীভাবে পদার্থ স্থানকালের বক্রতাকে প্রভাবিত করে। সিস্টেমটি প্রায়শই এই আকারে প্রকাশ করা হয়  যেখানে Gμν হল আইনস্টাইন টেনসর, gμν হল মেট্রিক টেনসর, Tμν হল স্ট্রেস-এনার্জি টেনসর, Λ হল মহাজাগতিক ধ্রুবক,   মহাকর্ষের নিউটনিয়ান ধ্রুবক এবং   আলোর গতি[] ধ্রুবক   আইনস্টাইন মহাকর্ষীয় ধ্রুবক হিসাবে উল্লেখ করা হয়। []

 
শোয়ার্জশিল্ড মেট্রিকের একটি চিত্র, যা একটি গোলাকার, চার্জবিহীন, এবং ভর বিশিষ্ট আবর্তনহীন বস্তুর চারপাশের স্থানকালকে বর্ণনা করে

গবেষণার একটি প্রধান ক্ষেত্র হল আইনস্টাইন ক্ষেত্র সমীকরণের সঠিক সমাধান আবিষ্কার করা। এই সমীকরণগুলি সমাধান করার জন্য প্রয়োজন পদার্থবিজ্ঞানের নির্দিষ্ট শর্তের অধীনে মেট্রিক টেনসরের (যা স্থানকালের বক্রতা এবং জ্যামিতিকে সংজ্ঞায়িত করে) জন্য একটি সুনির্দিষ্ট মান গণনা করা। এই জাতীয় সমাধানগুলি কী দ্বারা গঠিত হবে তার কোনও আনুষ্ঠানিক সংজ্ঞা নেই, তবে বেশিরভাগ বিজ্ঞানী সম্মত হন যে প্রাথমিক ফাংশন বা রৈখিক ডিফারেনশিয়াল সমীকরণ ব্যবহার করে এগুলি প্রকাশযোগ্য হওয়া উচিত। [] সমীকরণের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সমাধানগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • শোয়ার্জশিল্ড সমাধান, যা একটি গোলাকার প্রতিসম ঘূর্ণনবিহীন চার্জবিহীন বিশাল বস্তুকে ঘিরে থাকা স্থানকালকে বর্ণনা করে। যথেষ্ট ঘন বস্তুর জন্য, এই সমাধানটি কেন্দ্রীয় সিংগুলারিটি সহ একটি ব্ল্যাক হোল তৈরি করে। [১০] কেন্দ্রীয় ভর থেকে অনেক দূরের বিন্দুতে, শোয়ার্জশিল্ড সমাধান দ্বারা বের করা ত্বরণগুলি কার্যত নিউটনের মাধ্যাকর্ষণ তত্ত্ব দ্বারা বের করা ত্বরণ থেকে অভিন্ন। [১১]
  • Reissner–Nordström সমাধান, যা চার্জ সহ একটি অ-ঘূর্ণায়মান গোলকীয় প্রতিসম বস্তুকে বিশ্লেষণ করে এবং ১৯১৬ থেকে ১৯২১ সালের মধ্যে বিভিন্ন গবেষকরা স্বাধীনভাবে এই সমাধানটি আবিষ্কার করেছিলেন। [১২] কিছু ক্ষেত্রে, এই সমাধানটি দ্বিগুণ ঘটনা দিগন্তের সাথে ব্ল্যাক হোলের অস্তিত্বের পূর্বাভাস দিতে পারে। [১৩]
  • কের সমাধান, যা বিশাল ঘূর্ণায়মান বস্তুর জন্য শোয়ার্জশিল্ড সমাধানকে বিস্তৃত করে। আইনস্টাইন ক্ষেত্রের সমীকরণে ঘূর্ণনের প্রভাবের হিসাবে জটিলতার কারণে, এই সমাধানটি ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি। [১৪]
  • কের-নিউম্যান সমাধান, চার্জযুক্ত ঘূর্ণায়মান বিশাল বস্তুর জন্য। এই সমাধানটি ১৯৬৪ সালে আবিষ্কৃত হয়েছিল, জটিল স্থানাঙ্ক রূপান্তরের একই কৌশল ব্যবহার করে যা কের সমাধানের জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল। [১৫]
  • মহাজাগতিক ফ্রিডম্যান-লেমাইত্রে-রবার্টসন-ওয়াকার সমাধান, ১৯২২ সালে আলেকজান্ডার ফ্রিডম্যান আবিষ্কার করেছিলেন এবং তারপর ১৯২৫ সালে জর্জ লেমাইত্রে নিশ্চিত করেছিলেন। এই সমাধানটি ছিল বৈপ্লবিক কারণ এটি মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের পূর্বাভাস দেয় , যা সাত বছর পর এডউইন হাবলের ধারাবাহিক পরিমাপের পর নিশ্চিত করা হয়েছিল। [১৬] এমনকি এটি দেখায় যে সাধারণ আপেক্ষিকতা একটি স্থির মহাবিশ্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, এবং আইনস্টাইন পরে স্বীকার করেছিলেন যে তিনি তার ক্ষেত্র সমীকরণগুলিকে প্রসারিত হচ্ছে না এমন একটি মহাবিশ্বের জন্য হিসেব করে ভুল করেছিলেন। [১৭]

আজ, অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবস্থা রয়েছে যেখানে আইনস্টাইন ক্ষেত্রের সমীকরণগুলি সমাধান করা হয়নি। এর মধ্যে প্রধান হল দুই-বস্তুর সমস্যা, যা দুটি পারস্পরিক ক্রিয়াশীল বিশাল বস্তুর চারপাশের স্থানকালের জ্যামিতি নিয়ে আলোচনা করে, যেমন সূর্য এবং পৃথিবী, বা বাইনারি নক্ষত্র সিস্টেমের দুটি নক্ষত্রের সাথে সম্পর্কিত। তিন বা ততোধিক বিশাল বস্তুর মধ্যে মিথস্ক্রিয়া বিবেচনা করলে হিসাব আরও জটিল হয়ে যায় ( "n -সংখ্যক বস্তুর সমস্যা"), এবং কিছু বিজ্ঞানী সন্দেহ করেন যে আইনস্টাইন ক্ষেত্রের সমীকরণ এই প্রসঙ্গে কখনই সমাধান হবে না। [১৮] যাইহোক, পোস্ট-নিউটনিয়ান সম্প্রসারণের কৌশল ব্যবহার করে n -সংখ্যক বস্তুর সমস্যার ক্ষেত্রে ক্ষেত্র সমীকরণের একটি আনুমানিক সমাধান তৈরি করা এখনও সম্ভব। [১৯] সাধারণভাবে, আইনস্টাইন ক্ষেত্র সমীকরণের চরম অরৈখিকতা(nonlinearity)-র কারণে নির্দিষ্ট কিছু অবস্থা ছাড়া সব ক্ষেত্রেই সমাধান করা কঠিন। [২০]

মাধ্যাকর্ষণ এবং কোয়ান্টাম বলবিদ্যা

সম্পাদনা

বৃহৎ স্কেলে মাধ্যাকর্ষণ প্রভাবের ভবিষ্যদ্বাণীতে সফল হওয়া সত্ত্বেও, সাধারণ আপেক্ষিকতা শেষ পর্যন্ত কোয়ান্টাম বলবিদ্যার সাথে অসংগতিপূর্ণ। এর কারণ হল সাধারণ আপেক্ষিকতা মহাকর্ষকে স্থানকালের একটি মসৃণ, অবিচ্ছিন্ন বিকৃতি হিসাবে বর্ণনা করে, যখন কোয়ান্টাম মেকানিক্স মনে করে যে সমস্ত শক্তি কোয়ান্টা নামে পরিচিত বিচ্ছিন্ন কণার বিনিময় থেকে উদ্ভূত হয়। এই দ্বন্দ্ব পদার্থবিজ্ঞানীদের কাছে বিশেষভাবে বিরক্তিকর কারণ অন্য তিনটি মৌলিক বল (শক্তিশালী বল, দুর্বল বল এবং তড়িৎচুম্বকত্ব) কয়েক দশক আগে কোয়ান্টাম কাঠামোর সাথে মিলিত হয়েছিল। [২১] ফলস্বরূপ, আধুনিক গবেষকরা এমন একটি তত্ত্ব অনুসন্ধান করতে শুরু করেছেন যা আরও সাধারণ কাঠামোর অধীনে মহাকর্ষ এবং কোয়ান্টাম বলবিদ্যা উভয়কেই একত্রিত করতে পারে। [২২]

একটি পথ হল কোয়ান্টাম ক্ষেত্র তত্ত্বের কাঠামোতে মাধ্যাকর্ষণকে বর্ণনা করা, যা অন্যান্য মৌলিক বলকে সঠিকভাবে বর্ণনা করতে সফল হয়েছে। কোয়ান্টাম ক্ষেত্র তত্ত্বের বর্ণনা হল ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বল উদ্ভূত হয় ভার্চুয়াল ফোটনের বিনিময় থেকে, কিন্তু মাধ্যাকর্ষণের উৎপত্তি হয় ভার্চুয়াল গ্র্যাভিটনের বিনিময়ে। [২৩][২৪] এই বর্ণনাটি ক্লাসিক্যাল সীমাতে সাধারণ আপেক্ষিকতা পূনর্জীবিত করে। যাইহোক, এই পদ্ধতিটি প্ল্যাঙ্ক দৈর্ঘ্যের ক্রমানুসারে স্বল্প দূরত্বে ব্যর্থ হয়,[২৫] যেখানে কোয়ান্টাম মাধ্যাকর্ষণের (বা কোয়ান্টাম বলবিদ্যার জন্য একটি নতুন পদ্ধতি) আরও সম্পূর্ণ তত্ত্ব প্রয়োজন।

সাধারণ আপেক্ষিকতার পরীক্ষা

সম্পাদনা
 
১৯১৯ সালের পূর্ণ সূর্যগ্রহণ সাধারণ আপেক্ষিকতার ভবিষ্যদ্বাণী পরীক্ষা করার প্রথম সুযোগগুলির মধ্যে একটি ছিল।

সাধারণ আপেক্ষিকতার ভবিষ্যদ্বাণীগুলি পরীক্ষা করা ঐতিহাসিকভাবে কঠিন ছিল, কারণ এগুলি ছোট শক্তি এবং ভরের জন্য নিউটনীয় মহাকর্ষের ভবিষ্যদ্বাণীগুলির প্রায় অভিন্ন। [২৬] এখনও, এর বিকাশের পর থেকে, পরীক্ষামূলক ফলাফলের একটি চলমান সিরিজ এই তত্ত্বের জন্য সমর্থন প্রদান করেছে:[২৬] ১৯১৯ সালে, ব্রিটিশ জ্যোতির্পদার্থবিদ আর্থার এডিংটন সেই বছরের সূর্যগ্রহণের সময় আলোর ভবিষ্যদ্বাণীকৃত মহাকর্ষীয় লেন্সিং নিশ্চিত করতে সক্ষম হন। [২৭][২৮] Eddington measured starlight deflections twice those predicted by Newtonian corpuscular theory, in accordance with the predictions of general relativity. যদিও এডিংটনের বিশ্লেষণ পরে বিতর্কিত হয়েছিল, এই পরীক্ষাটি প্রায় রাতারাতি আইনস্টাইনকে বিখ্যাত করে তোলে এবং সাধারণ আপেক্ষিকতাকে বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য করে তোলে। [২৯]

In 1959, American physicists Robert Pound and Glen Rebka performed an experiment in which they used gamma rays to confirm the prediction of gravitational time dilation. By sending the rays down a 74-foot tower and measuring their frequency at the bottom, the scientists confirmed that light is redshifted as it moves towards a source of gravity. The observed redshift also supported the idea that time runs more slowly in the presence of a gravitational field.[৩০] The time delay of light passing close to a massive object was first identified by Irwin I. Shapiro in 1964 in interplanetary spacecraft signals.[৩১]

In 1971, scientists discovered the first-ever black hole in the galaxy Cygnus. The black hole was detected because it was emitting bursts of x-rays as it consumed a smaller star, and it came to be known as Cygnus X-1.[৩২] This discovery confirmed yet another prediction of general relativity, because Einstein's equations implied that light could not escape from a sufficiently large and compact object.[৩৩]

General relativity states that gravity acts on light and matter equally, meaning that a sufficiently massive object could warp light around it and create a gravitational lens. This phenomenon was first confirmed by observation in 1979 using the 2.1 meter telescope at Kitt Peak National Observatory in Arizona, which saw two mirror images of the same quasar whose light had been bent around the galaxy YGKOW G1.[৩৪][৩৫]

Frame dragging, the idea that a rotating massive object should twist spacetime around it, was confirmed by Gravity Probe B results in 2011.[৩৬][৩৭] In 2015, the LIGO observatory detected faint gravitational waves, the existence of which had been predicted by general relativity. Scientists believe that the waves emanated from a black hole merger that occurred 1.5 billion light-years away.[৩৮]

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Does Gravity Travel at the Speed of Light?, UCR Mathematics. 1998. Retrieved 3 July 2008
  2. পদার্থবিজ্ঞান প্রথম পত্র, ড. আমির হোসেন খান, প্রফেসর মোহাম্মদ ইসহাক, ড. মো. নজরুল ইসলাম
  3. Stephani, Hans (২০০৩)। Exact Solutions to Einstein's Field Equations (ইংরেজি ভাষায়)। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 1। আইএসবিএন 978-0-521-46136-8 
  4. "Einstein's general relativity theory is questioned but still stands for now"Science News। Science Daily। ২৫ জুলাই ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০২৪ 
  5. Lea, Robert (১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২)। "Einstein's greatest theory just passed its most rigorous test yet"Scientific American। Springer Nature America, Inc.। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০২৪ 
  6. Will, Clifford M. (২০১৮)। Theory and Experiment in Gravitational Physics। Cambridge Univ. Press। আইএসবিএন 9781107117440 
  7. "Einstein Field Equations (General Relativity)"University of Warwick (ইংরেজি ভাষায়)। ২৫ মে ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০২২ 
  8. "How to understand Einstein's equation for general relativity"Big Think (ইংরেজি ভাষায়)। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১। ২৬ মে ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০২২ 
  9. Ishak, Mustafa। "Exact Solutions to Einstein's Equations in Astrophysics" (পিডিএফ)University of Texas at Dallas। ৯ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মে ২০২২ 
  10. "The Schwarzchild Metric and Applications" (পিডিএফ)। পৃষ্ঠা 36। ৯ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০২২ 
  11. Ehlers, Jurgen (১৯৯৭)। "Examples of Newtonian limits of relativistic spacetimes": 122–123। ডিওআই:10.1088/0264-9381/14/1A/010। ৬ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০২২  |hdl-সংগ্রহ= এর |hdl= প্রয়োজন (সাহায্য)
  12. "Surprise: the Big Bang isn't the beginning of the universe anymore"Big Think (ইংরেজি ভাষায়)। ১৩ অক্টোবর ২০২১। ২৬ মে ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০২২ 
  13. Norebo, Jonatan (১৬ মার্চ ২০১৬)। "The Reissner-Nordström metric" (পিডিএফ) (ইংরেজি ভাষায়)। ৯ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  14. Teukolsky, Saul (১ জুন ২০১৫)। "The Kerr metric" (পিডিএফ) (ইংরেজি ভাষায়): 124006। arXiv:1410.2130 ডিওআই:10.1088/0264-9381/32/12/124006। ৯ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  15. Newman, E. T.; Couch, E. (জুন ১৯৬৫)। "Metric of a Rotating, Charged Mass": 918–919। আইএসএসএন 0022-2488ডিওআই:10.1063/1.1704351 
  16. Pettini, M.। "RELATIVISTIC COSMOLOGY" (পিডিএফ) (ইংরেজি ভাষায়)। ৯ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০২২ 
  17. O’Raifeartaigh, Cormac; O’Keeffe, Michael (২০১৭)। "Einstein's 1917 Static Model of the Universe: A Centennial Review" (ইংরেজি ভাষায়): 41। arXiv:1701.07261 ডিওআই:10.1140/epjh/e2017-80002-5। ২৯ মে ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০২২ 
  18. Siegel, Ethan। "This Is Why Scientists Will Never Exactly Solve General Relativity"Forbes (ইংরেজি ভাষায়)। ২৭ মে ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০২২ 
  19. Spyrou, N. (১ মে ১৯৭৫)। "The N-body problem in general relativity.": 725–743। আইএসএসএন 0004-637Xডিওআই:10.1086/153562  
  20. Sleator, Daniel (৬ জুন ১৯৯৬)। "Hermeneutics of Classical General Relativity"। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০২২ 
  21. "Gravity Probe B – Special & General Relativity Questions and Answers"einstein.stanford.edu। ৬ জুন ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ আগস্ট ২০২২ 
  22. Huggett, Nick; Matsubara, Keizo (২০২০)। Beyond Spacetime: The Foundations of Quantum Gravity (ইংরেজি ভাষায়)। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 6। আইএসবিএন 9781108655705 
  23. Feynman, R.P.; Morinigo, F.B. (১৯৯৫)। Feynman lectures on gravitation। Addison-Wesley। আইএসবিএন 978-0-201-62734-3 
  24. Zee, A. (২০০৩)। Quantum Field Theory in a Nutshell। Princeton University Press। আইএসবিএন 978-0-691-01019-9 
  25. Randall, Lisa (২০০৫)। Warped Passages: Unraveling the Universe's Hidden Dimensions। Ecco। আইএসবিএন 978-0-06-053108-9 
  26. "Testing General Relativity"NASA Blueshift (ইংরেজি ভাষায়)। ১৬ মে ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০২২ 
  27. Dyson, F.W.; Eddington, A.S. (১৯২০)। "A Determination of the Deflection of Light by the Sun's Gravitational Field, from Observations Made at the Total Eclipse of May 29, 1919": 291–333। ডিওআই:10.1098/rsta.1920.0009 । ১৫ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জুলাই ২০১৯ . Quote, p. 332: "Thus the results of the expeditions to Sobral and Principe can leave little doubt that a deflection of light takes place in the neighbourhood of the sun and that it is of the amount demanded by Einstein's generalised theory of relativity, as attributable to the sun's gravitational field."
  28. Weinberg, Steven (১৯৭২)। Gravitation and cosmology। John Wiley & Sons। আইএসবিএন 9780471925675 . Quote, p. 192: "About a dozen stars in all were studied, and yielded values 1.98 ± 0.11" and 1.61 ± 0.31", in substantial agreement with Einstein's prediction θ = 1.75"."
  29. Gilmore, Gerard; Tausch-Pebody, Gudrun (২০ মার্চ ২০২২)। "The 1919 eclipse results that verified general relativity and their later detractors: a story re-told": 155–180। arXiv:2010.13744 ডিওআই:10.1098/rsnr.2020.0040  
  30. "General Astronomy Addendum 10: Graviational Redshift and time dilation"homepage.physics.uiowa.edu। ১৪ মে ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০২২ 
  31. Asada, Hideki (২০ মার্চ ২০০৮)। "Gravitational time delay of light for various models of modified gravity"Physics Letters B (ইংরেজি ভাষায়)। 661 (2–3): 78–81। arXiv:0710.0477 এসটুসিআইডি 118365884ডিওআই:10.1016/j.physletb.2008.02.006বিবকোড:2008PhLB..661...78A। ২৯ মে ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০২২ 
  32. "The Fate of the First Black Hole"www.science.org (ইংরেজি ভাষায়)। ৩১ মে ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মে ২০২২ 
  33. "Black Holes Science Mission Directorate"webarchive.library.unt.edu। ৮ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মে ২০২২ 
  34. Subal Kar (২০২২)। Physics and Astrophysics: Glimpses of the Progress (illustrated সংস্করণ)। CRC Press। পৃষ্ঠা 106। আইএসবিএন 978-1-000-55926-2  Extract of page 106
  35. "Hubble, Hubble, Seeing Double!"NASA। ২৪ জানুয়ারি ২০১৪। ২৫ মে ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০২২ 
  36. "NASA's Gravity Probe B Confirms Two Einstein Space-Time Theories"। Nasa.gov। ২২ মে ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০১৩ 
  37. ""Frame-Dragging" in Local Spacetime" (পিডিএফ)Stanford University। ৯ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  38. "Gravitational Waves Detected 100 Years After Einstein's Prediction"Ligo Lab | Caltech। ২৭ মে ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মে ২০২২