মন জেলা
মন জেলা ভারত-এর নাগাল্যান্ড রাজ্যের একটি জেলা৷ এই জেলার সংখ্যাগরিষ্ঠ লোক কোনিয়াক উপজাতির৷
মন জেলা | |
---|---|
জেলা | |
নাগাল্যান্ডত মন জেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৬°৪৩′ উত্তর ৯৫°০২′ পূর্ব / ২৬.৭১৭° উত্তর ৯৫.০৩৩° পূর্ব | |
রাজ্য | নাগাল্যান্ড |
দেশ | ভারত |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ২,৫০,৬৭১ |
সময় অঞ্চল | ভা.মা.স. (ইউটিসি+05:30) |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | IN-NL-MN |
ওয়েবসাইট | mon |
ভৌগোলিক অবস্থান
সম্পাদনামন জেলাটি নাগাল্যান্ডের অন্যতম উত্তর সীমান্তে অবস্থিত৷ এই জেলার উত্তরে অরুণাচল প্রদেশ, পশ্চিমে আসাম, পূর্বে মায়ানমার ও দক্ষিণে লংলেং ও টুয়েনসাং জেলা৷ জেলাটির সদরস্থান মন শহর৷
অর্থনীতি
সম্পাদনা২০০৬ সালে পঞ্চায়তী রাজ মন্ত্রালয় ভারতের মোট ৬৪০ টি জেলার মধ্যে অন্যতম অবহেলিত ২৫০ টি জেলার একটি বলে মন জেলাকে অভিহিত করে৷[১] ভারত সরকার-এর পিছিয়ে পড়া অঞ্চল অনুদান তহবিল প্রোগ্রাম (বিআরজিএফ) পুঁজির থেকে সম্পদের আবণ্টন লাভ করা নাগাল্যান্ডের তিনটি জেলার মধ্যে মন অন্যতম৷[১]
জনসংখ্যা
সম্পাদনা২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে মন জেলার মোট জনসংখ্যা ২,৫০,৬৭১ জন৷[২] জনসংখ্যার দিক থেকে ভারতের মোট ৬৪০ টি জেলার মধ্যে মন জেলার স্থান ৫৮২ তম৷[২] মন জেলার প্রতি ১০০০ জন পুরুষের বিপরীতে মহিলার সংখ্যা ৮৯৮ জন৷[২] এই জেলার সাক্ষরতার হার ৫৬.৬%।[২])
সংস্কৃতি
সম্পাদনামন জেলা কোনিয়াক নাগা উপজাতির বসতিস্থল৷ পরম্পরাগতভাবে এই উপজাতির লোকরা দেহ-মুখে টাটু পরিধান করে৷ কোনিয়াকদের মূল উৎসব হল 'আওলেয়াং মনয়ু'৷ এই উৎসব এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে উদ্যাপন করা হয়৷
কোনিয়াকদের পরম্পরাগত নেতা হল আং, যা উত্তরাধিকার সূত্রে এই উপাধি লাভ করে৷ প্রতিটি গ্রামে আং জনের বাড়ি সবচেয়ে বড় হয়৷ বাড়ির সম্মুখে সাধারণত জন্তুর হাড় সজ্জিত থাকে৷
কোনিয়াকরা তাদের মুখে এবং শরীরে ট্যাটু আঁকেন। বয়স্ক পুরুষরা শুয়োর শিং দিয়ে তৈরি বড় কানের দুল পরে এবং কেবল একটি কটিযুক্ত পোশাক পরে। কেউ কেউ দাও বা বন্দুক নামে একটি ম্যাচিট বহন করে। বয়স্ক মহিলারা কেবল তাদের কোমরে জড়িয়ে একটি ছোট্ট টুকরো কাপড় পরে থাকেন। তারা তাদের পিঠে বাঁশের ঝুড়ি বহন করে বা তাদের পিঠে বাচ্চাদের কাপড় দিয়ে বেঁধে রাখে। তারা তাদের হাতে বোনা শালগুলিতে দুর্দান্ত নকশা বুনে। উৎসব চলাকালীন, পুরুষরা পালকের সাথে সজ্জিত রঙিন শাল এবং শিরোনাম পরিধান করে এবং দাও বা বর্শা এবং বন্দুকের সাথে নাচ করে / ছন্দবদ্ধভাবে গান করে। তারা "ঝুম" নামে নিয়ন্ত্রিত জ্বালানী দ্বারা বন পরিষ্কার করে পাহাড়ের জমিতে জমিও জমি করে। তারা ধান থেকে তৈরি একটি বাড়িতে ব্রিউড মদ তৈরি করে। কনিয়াকস স্বাধীনতার আগে হেডহান্টার্স করতেন। কিছু ছোট কন্যাক তাদের ঐতিহ্যবাহী জীবনযাপন ছেড়ে আধুনিক রীতিনীতি গ্রহণ করছেন।
পর্যটন
সম্পাদনা- সাংন্যু গ্রাম
সাংন্যু গ্রাম মুখ্য আং জনের দ্বারা পরিচালিত৷ এই গ্রামে ৮ ফুট উচ্চতার ও ১২ ফুট প্রস্থের একটি ঐতিহাসিক কাঠের প্রতিমূর্তি আছে৷ মূর্তিটিতে মানুষ ও জীব-জন্তুর প্রতিচ্ছবি খোদিত করা আছে৷ ইতিহাস মতে, এই গ্রামের ও আহোম রাজত্বের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল৷
- চুই গ্রাম
এই গ্রাম সদরস্থান মনের কাছের অঞ্চলত অবস্থিত৷ গ্রামটির আং জনের বাড়িটি সর্ববৃহৎ এবং বাড়ির সম্মুখভাগ পূর্বপুরুষ ও তাঁর নিজে নিধন করা শত্রুর কঙ্কালে সজ্জিত৷ কোনিয়াকদের মধ্যে উনিশ শতকের শেষভাগ থেকে মুণ্ড শিকার প্রচলিত ছিল৷
- লংবা গ্রাম
লংবা নাগাল্যান্ডের ভারত-মায়ানমার সীমান্তে অবস্থিত গ্রামসমূহের মধ্যে সর্ববৃহৎ গ্রাম৷[৩][৪] এই গ্রামের মুখ্য আঙের বাড়ির অর্ধেক ভারতে এবং অন্যভাগ মায়ানমারে অবস্থিত৷ অবশ্য সমগ্র গ্রামটি পরিচালনা করে মুখ্য আং জন৷ তিনি কোনিয়াক উপজতির ৬০ টি গ্রামের নেতা৷ [৪]
- ভেদা শিখর
মন জেলার সর্ব্বোচ্চ এই শিখরটি মন শহর থেকে ৭০ কিমি পূর্বে অবস্থিত৷ এই শিখর থেকে ফরকাল বতরে ব্রহ্মপুত্র দেখত পাওয়া যায়৷
- নাগনিমুরা
এই শহরটির নামের উৎস হল 'নাগা রাণী মরা' (নাগা রানীর সমাধিস্থল)৷
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ Ministry of Panchayati Raj (৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯)। "A Note on the Backward Regions Grant Fund Programme" (পিডিএফ)। National Institute of Rural Development। ৫ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১১।
- ↑ ক খ গ ঘ "District Census 2011"। Census2011.co.in। ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-৩০।
- ↑ Bhattacharyya, Rajeev (২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬)। "From Mon in Nagaland to Myanmar, Schoolkids Cross the Border For a Better Future"। The Wire। সংগ্রহের তারিখ ২৫ আগস্ট ২০১৮।
- ↑ ক খ An Indian Village Where Villagers Have Dual Citizenships And Its King Has 60 Wives, Daily Moss, 22 Msay 2015.