মঞ্জুলা রেড্ডি

ভারতীয় জিনতত্ত্ববিদ

মঞ্জুলা রেড্ডি (জন্ম ১৯৬৫)[] একজন ভারতীয় ব্যাকটেরিয়া জিনতত্ত্ববিদ। তিনি ভারতের হায়দ্রাবাদের সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজির প্রধান বিজ্ঞানী। ব্যাকটেরিয়া কোষ প্রাচীর গঠন এবং সংশ্লেষণের উপর তার গবেষণার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০১৯ সালে জীবন বিজ্ঞানে ইনফোসিস পুরস্কার লাভ করেন। তিনি তেলেঙ্গানা একাডেমি অফ সায়েন্সেস এবং ভারতীয় বিজ্ঞান একাডেমীর ফেলো সদস্য।

মঞ্জুলা রেড্ডি
জাতীয়তাভারতীয়
মাতৃশিক্ষায়তনসেন্ট ফ্রান্সিস কলেজ ফর উইমেন (বিজ্ঞান স্নাতক)

হায়দ্রাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় (স্নাতকোত্তর)

দ্য সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি (পিএইচডি)
পরিচিতির কারণব্যাকটেরিয়া কোষ প্রাচীর বৃদ্ধির সাথে জড়িত একটি হাইড্রোলাইটিক উৎসেচকের আবিষ্কার
পুরস্কার২০১৯ সালে জীববিজ্ঞানে ইনফোসিস পুরস্কার
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রঅণুজীববিজ্ঞান, জীবাণুঘটিত বংশাণুবিজ্ঞান
ডক্টরাল উপদেষ্টাজয়রামন গৌরীশঙ্কর

শিক্ষা এবং কর্মজীবন

সম্পাদনা

মঞ্জুলা রেড্ডি ২০০২ সালে সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি থেকে তার পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ২০০৭ সালে এই প্রতিষ্ঠানে তার নিজস্ব পরীক্ষাগার চালু করেন।[]

গবেষণা

সম্পাদনা

মঞ্জুলা রেড্ডি ব্যাকটেরিয়া কোষের প্রাচীর নিয়ে ব্যাপকভাবে গবেষণা করেন।[]

তিনি এশেরিকিয়া কোলাই নামে একটি গ্রাম নেগেটিভ, রড-আকৃতির, কোলিফর্ম ব্যাক্টেরিয়ার মধ্যে একটি "স্পেসমেকার" উৎসেচক শনাক্ত করেন। তিনি লক্ষ্য করেন যে, এই উৎসেচকটি পেপ্টিডোগ্লাইক্যানের নির্দিষ্ট সংযোগগুলিকে আর্দ্রবিশ্লেষিত করে যার ফলে ব্যাকটেরিয়া কোষের প্রাচীর প্রসারিত হয়।[]

তার লক্ষ্য ছিল অভিনব অ্যান্টিমাইক্রোবিয়ালগুলির বিকাশ করা। তার প্রধান কারণ হলো অ্যান্টিমাইক্রোবিয়ালগুলি পেপ্টিডোগ্লাইকান সংশ্লেষণ পথে নানাভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারে।[] তিনি মডেল জীবাণু হিসাবে মাইকোব্যাকটেরিয়াম স্মেগমাটিস এবং এশ্চেরেচিয়া কোলাই ব্যাক্টেরিয়া ব্যবহার করেন।[]

তিনি সেইসব বিজ্ঞানীদের দলের সঙ্গে ছিলেন যারা মিউটাজেন এবং অ্যান্টি-মিউটাজেন সনাক্ত করার প্রক্রিয়াটির পেটেন্ট করেছিলেন। এই প্রক্রিয়াটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৯৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত পেটেন্ট করা হয়। দলের অন্য বিজ্ঞানীদের মধ্যে ছিলেন জয়রামন গৌরীশঙ্কর এবং শান্তি এম ভারতন।[]

পুরস্কার ও সম্মাননা

সম্পাদনা

২০১৯ সালে তিনি জীবন বিজ্ঞানে ইনফোসিস পুরস্কার পান।[] ব্যাকটেরিয়া কোষ প্রাচীরের সংশ্লেষণ এবং ক্ষয়ের সাথে জড়িত জৈবিক প্রক্রিয়াগুলির উপর তার ব্যাপক কাজের জন্য তিনি এই পুরস্কারে ভূষিত হন। তার কাজের মধ্যে রয়েছে 'স্পেসমেকার' উৎসেচকগুলির সনাক্তকরণ, বিচ্ছিন্নতা এবং বৈশিষ্ট্য অন্তর্ভুক্তকরণ যা কোষের দেয়াল ভেঙে নতুন বৃদ্ধির জন্য জায়গা তৈরি করে। তার গবেষণা অ্যান্টিবায়োটিক কার্যকারিতার সম্ভাব্য লক্ষ্যগুলি সনাক্ত করতে সহায়তা করে।[]

২০২০ সালে তিনি ভারতীয় বিজ্ঞান একাডেমীর ফেলো সদস্য নির্বাচিত হন।[] তিনি তেলেঙ্গানা একাডেমি অফ সায়েন্সেসের একজন ফেলো সদস্য[] এবং আমেরিকান সোসাইটি ফর মাইক্রোবায়োলজি থেকে প্রকাশিত জার্নাল অফ ব্যাকটিরিওলজি নামক বিজ্ঞান পত্রিকার সম্পাদকীয় বোর্ডেরও সদস্য।[১০]

ব্যক্তিগত জীবন

সম্পাদনা

একটি সাক্ষাৎকারে মঞ্জুলা বলেছেন যে, তার বাবা মোহন রেড্ডি এবং তার মা একজন বিজ্ঞানী হিসাবে তার কর্মজীবনকে সমর্থন করেছিলেন।[১১] তিনি একজন কার্ডিওলজিস্টকে বিয়ে করেছেন এবং তার দুটি ছেলে রয়েছে।[১১]

নির্বাচিত প্রকাশনা

সম্পাদনা
  • চোদিসেট্টি, পবন কুমার এবং মঞ্জুলা রেড্ডি- "পেপটিডোগ্লাইকান হাইড্রোলেজ অফ অ্যান আনইউসাল ক্রস-লিঙ্ক ক্লিয়েভেজ স্পেসিফিসিটি কনট্রিবিউটস টু ব্যাকটেরিয়া সেল ওয়াল সিন্থেসিস।" প্রসিডিংস অফ ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেস ১১৬.১৬ (২০১৯): ৭৮২৫-৭৮৩০।[]
  • সিং, সন্তোষ কুমার ও অন্যান্য। "রেগুলেটেড প্রোটিওলাইসিস অফ এ ক্রস-লিঙ্ক-স্পেসিফিক পেপটিডোগ্লাইকান হাইড্রোলেজ কনট্রিবিউটস টু ব্যাকটেরিয়াল মরফোজেনেসিস।" প্রসিডিংস অফ ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেস ১১২.৩৫ (২০১৫): ১০৯৫৬-১০৯৬১।[১২]
  • রেড্ডি, মঞ্জুলা। "রোল অফ এফটিএসইএক্স ইন সেল ডিভিসন অফ এশেরিকিয়া কোলাই: ভায়াবিলিটি অফ এফটিএসইএক্স মিউটেনটস ইজ ডিপেনডেন্ট অন ফাংশানাল এসইউএফআই অর হাই অসমেটিক স্ট্রেন্থ।" জার্নাল অফ ব্যাকটিরিওলজি ১৮৯.১ (২০০৭): ৯৮-১০৮.।[১৩]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Fellowship | Indian Academy of Sciences"www.ias.ac.in। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-০৭ 
  2. Jayaraj, Nandita; Shah, Mrinal (২০২০-০২-০৭)। "Meet the two women scientists who won the Infosys Prize this year"The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0971-751X। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৮ 
  3. Chodisetti, Pavan Kumar; Reddy, Manjula (২০১৯-০৪-১৬)। "Peptidoglycan hydrolase of an unusual cross-link cleavage specificity contributes to bacterial cell wall synthesis" (ইংরেজি ভাষায়): 7825–7830। আইএসএসএন 0027-8424ডিওআই:10.1073/pnas.1816893116 পিএমআইডি 30940749পিএমসি 6475434  
  4. "Infosys Prize - Laureates 2019 - Manjula Reddy"www.infosys-science-foundation.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-০৭ 
  5. "CCMB | Research-Group"www.ccmb.res.in। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-০৭ 
  6. "CCMB | Patents"www.ccmb.res.in। ৭ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-০৭ 
  7. "CCMB scientist Manjula Reddy wins 2019 Infosys Prize for Life Sciences"www.indiatvnews.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-১১-০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৮ 
  8. "Infosys Prize winners announced for 2019"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-১১ 
  9. "Telangana Academy of Sciences (TAS) Hyderabad"www.tasc.org.in। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-০৭ 
  10. "Editorial Board | Journal of Bacteriology"jb.asm.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-০৭ 
  11. Interview with Infosys Award 2019 Winner - Smt. Manjula Reddy - CCMB - Trishakti - Acchamga Telugu (ইংরেজি ভাষায়), সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-০৭ 
  12. Singh, Santosh Kumar; Parveen, Sadiya (২০১৫-০৯-০১)। "Regulated proteolysis of a cross-link–specific peptidoglycan hydrolase contributes to bacterial morphogenesis" (ইংরেজি ভাষায়): 10956–10961। আইএসএসএন 0027-8424ডিওআই:10.1073/pnas.1507760112 পিএমআইডি 26283368পিএমসি 4568209  
  13. Reddy, Manjula (২০০৭-০১-০১)। "Role of FtsEX in Cell Division of Escherichia coli: Viability of ftsEX Mutants Is Dependent on Functional SufI or High Osmotic Strength" (ইংরেজি ভাষায়): 98–108। আইএসএসএন 0021-9193ডিওআই:10.1128/JB.01347-06 পিএমআইডি 17071757পিএমসি 1797223