ভেঙ্কটপতি রাজু
সাগি লক্ষ্মী ভেঙ্কটপতি রাজু (তেলুগু: వెంకటపతి రాజు; জন্ম: ৯ জুলাই, ১৯৬৯) অন্ধ্রপ্রদেশের আলামুরু এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৯০ থেকে ২০০১ সময়কালে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | সাগি লক্ষ্মী ভেঙ্কটপতি রাজু | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | আলামুরু, অন্ধ্রপ্রদেশ, ভারত | ৯ জুলাই ১৯৬৯|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | মাসেলস | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | বোলার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১৮৯) | ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৯০ বনাম নিউজিল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ১১ মার্চ ২০০১ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ৭৫) | ১ মার্চ ১৯৯০ বনাম নিউজিল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ ওডিআই | ২৬ মে ১৯৯৬ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৩ আগস্ট ২০১৯ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে হায়দ্রাবাদ দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে কার্যকরী ব্যাটিংশৈলী উপস্থাপন করেছেন ‘মাসেলস’ ডাকনামে পরিচিত ভেঙ্কটপতি রাজু।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট
সম্পাদনাঅন্ধ্রপ্রদেশের হায়দ্রাবাদে ভেঙ্কটপতি রাজু জন্মগ্রহণ করেন। হায়দ্রাবাদের রামন্তপুর এলাকার হায়দ্রাবাদ পাবলিক স্কুলে পড়াশোনা করেন। ১৯৮৫-৮৬ মৌসুম থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ভেঙ্কটপতি রাজুর প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। অনেক বছর ধরে হায়দ্রাবাদের পক্ষে খেলা চালিয়ে যান। ঘরোয়া ক্রিকেটে হায়দ্রাবাদের প্রধান বোলিং মেরুদণ্ডের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ১৯৯৯-২০০০ মৌসুমের রঞ্জি ট্রফিতে সর্বশেষ খেলেন ও দলকে চূড়ান্ত খেলায় নিয়ে যান। এ পর্যায়ে ৫২ উইকেট পেয়েছিলেন।
উত্তর প্রদেশের বিপক্ষে ঘরোয়া খেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে ডিসেম্বর, ২০০৪ সালে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
সম্পাদনাসমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ২৮ টেস্ট ও ৫৩টি ওডিআইয়ে অংশগ্রহণ করেছেন ভেঙ্কটপতি রাজু। ২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯০ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১১ মার্চ, ২০০১ তারিখে কলকাতায় সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।
১৯৮৯-৯০ মৌসুমে ঘরোয়া ক্রিকেট মৌসুমে ৩২ উইকেট দখল করে সকলের নজরের কাড়েন ও ভারতীয় দলে অন্তর্ভুক্ত হন। নিউজিল্যান্ড সফরে টেস্ট ও একদিনের আন্তর্জাতিকে অভিষেক ঘটে তার। প্রথম টেস্ট ইনিংসে নাইট ওয়াচম্যান হিসেবে মাঠে নামেন। ২ ঘণ্টারও অধিক সময় ব্যাটিং করে ৩১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। দলে তখন ৬ উইকেটের পতন ঘটেছিল। ১৯৯০ সালে ইংল্যান্ড গমনে ভারতীয় দলে অন্যতম সদস্য ছিলেন। তবে, গ্লুচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে খেলাকালীন কোর্টনি ওয়ালসের বলে তার বাম হাত ভেঙে গেলে এ সফর শেষ হয়ে যায় তার।
ভারতে ফিরে সফরকারী শ্রীলঙ্কা দলের বিপক্ষে মুখোমুখি হন। চন্ডিগড়ের সেক্টর সিক্সটিন স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত একমাত্র টেস্ট খেলায় অংশ নেন তিনি। ঐ খেলায় ভারত দল জয়লাভ করেছিল। দলে শেষ মুহূর্তে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। দ্বিতীয় দিনে শ্রীলঙ্কার মাঝারিসারিতে এক পর্যায়ে ৩৯ বলে মাত্র ২ রান দিয়ে ৫ উইকেট দখল করেন। পরদিন তিনি আরো একটি উইকেট পান। ১৭.৫ ওভার বোলিং করে ৬/১২ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। চারজন ব্যাটসম্যান কোন রান সংগ্রহ করতে পারেননি। খেলায় তিনি ৫৩ ওভার বোলিং করে ৮/৩৭ লাভ করেন। এটি তার পুরো আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ী জীবনে একমাত্র ম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কার লাভের ঘটনা ছিল।[১]
১৯৯২ ও ১৯৯৬ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় ভারত দলের পক্ষে অংশ নেন। ১৯৯৪-৯৫ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন টেস্টের সিরিজে সেরা খেলা উপহার দিয়েছিলেন। ২০ উইকেট পান। এরপর থেকে আলোর ঝলকানী দিয়ে দলে আসা-যাওয়ার পালায় থাকেন। ১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলার পর আর তাকে টেস্ট আঙ্গিনায় দেখা যায়নি। কলকাতায় সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট খেলায় অংশ নেন। মার্ক ওয়াহ’র উইকেট পেয়েছিলেন তিনি।
অবসর
সম্পাদনাক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর হায়দ্রাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[২] এরপূর্বে ২০০৭-০৮ মৌসুমে দক্ষিণ অঞ্চলে ভারতীয় ক্রিকেট দল নির্বাচকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। এ পর্যায়ে মহেন্দ্র সিং ধোনি’র অধিনায়কত্বে ভারতীয় দল আইসিসি বিশ্ব টি২০ প্রতিযোগিতার শিরোপা জয় করেছিল। বর্তমানে তিনি ২০১৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় হটস্টার তেলুগু প্রিমিয়াম চ্যানেলে ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করেছেন।[৩]
বামহাতি অর্থোডক্স স্পিনার প্রজ্ঞান ওঝা এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেন যে, রাজু তাকে ভারতীয় দলে খেলার জন্য উদ্দীপনা যুগিয়েছিলেন।[৩] ভিজাগ ভিক্টর্সের জন্য স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে তিনি নিযুক্ত হয়েছেন।
খেলার ধরন
সম্পাদনামাসেলস ডাকনামে আখ্যায়িত হন তিনি ও সিংহ হৃদয়ের অধিকারী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। সর্বদাই নিজেকে লড়াইয়ে যুক্ত রাখতে পছন্দ করতেন। বলকে আলতোভাবে ফেলে কখনো ভয় পেতেন না। সেরা ব্যাটসম্যানকে ভুল পথে পরিচালনায় মনোনিবেশ ঘটাতেন। কিন্তু, আক্রমণাত্মক বোলিংকর্মে অগ্রসর হলে অনেক সময়ই প্রচুর রান খরচ করে ফেলতেন যা রক্ষণশৈলীর অধিকারী ভারতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলীর কাছে ভালো ঠেকতো না। গড় উচ্চতা ও কিঞ্চিৎ শক্তিমত্তার অধিকারী রাজু তার খেলোয়াড়ী জীবনে ভারত দলে সর্বদাই আসা-যাওয়ার ব্যতিব্যস্ত পালায় ছিলেন।
১৯৮০-এর দশকের শেষদিকে মনিন্দর সিংয়ের যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে ভেঙ্কটপতি রাজুর আবির্ভাব ঘটে। ১৯৯০-৯১ মৌসুমে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে সুন্দর ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করে দলে স্থায়ী আসন লাভ করেন। রাজেশ চৌহান ও অনিল কুম্বলেকে নিয়ে নব্বুইয়ের দশকের শুরুতে নতুন স্পিনত্রয়রূপে আখ্যায়িত হয়েছিলেন। তবে, নব্বুইয়ের দশকের মাঝামাঝি ও শেষদিকে খেঁই হারিয়ে ফেলেন। তাসত্ত্বেও, সর্বদাই ঘরোয়া ক্রিকেটে ঠিকই আধিপত্য বিস্তার করেছিলেন। উপযুক্ত পিচে তিনি প্রভূতঃ সফলতা পেয়েছিলেন। ভারতের মাটিতে ১৫ টেস্টে অংশ নিয়ে ৭০ উইকেট পেলেও বিদেশের মাটিতে বিপরীত চিত্র বহন করে। ১২ টেস্টে মাত্র ২২ উইকেট পেয়েছিলেন।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Wisden reports of Sri Lanka's tour of India, 1990–91
- ↑ "Venkatapathy Raju: The man who changed his fortunes by switching over from a right-arm off-spinner to a left-arm spinner!"। সংগ্রহের তারিখ ২৩ এপ্রিল ২০১৪।
- ↑ ক খ "Raju inspires Pragyan Ojha"। ১০ আগস্ট ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ আগস্ট ২০১৯।
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে ভেঙ্কটপতি রাজু (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে ভেঙ্কটপতি রাজু (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
- Interview of Venkatapathy Raju in CricketFundas.com
- Muscles of Might