ভূপতি মজুমদার
ভূপতি মজুমদার (১ জানুয়ারি, ১৮৯০―২৩ মার্চ, ১৯৭৩) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে বাঘা যতীনের অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষিত অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং পরবর্তীতে স্বাধীনতোত্তর কালের এক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।[১]
ভূপতি মজুমদার | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ২৭ মার্চ ১৯৭৩ | (বয়স ৮৩)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
পরিচিতির কারণ | ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ও শিক্ষাবিদ |
জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাভূপতি মজুমদারের জন্ম ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দের ১লা জানুয়ারি ব্রিটিশ ভারতের অধুনা পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার গুপ্তিপাড়ায়। তার পিতার নাম নীলমাধব মজুমদার। তিনি বাল্যশিক্ষা লাভ করেন তার মায়ের কাছ থেকে। ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে হুগলি কলেজে ভর্তি হন এবং আইএসসি ও বিএ পাস করেন।
বিপ্লবী ক্রিয়াকলাপ
সম্পাদনাভূপতি মজুমদার (১ জানুয়ারি, ১৮৯০―২৩ মার্চ, ১৯৭৩) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনেবাঘা যতীনের অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষিত অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং পরবর্তীতে স্বাধীনতোত্তর কালের এক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।[১] অল্প বয়সেই ভূপতি মজুমদার বিপ্লবী যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের কাছে অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষা নেন এবং বিপ্লবী ক্রিয়াকলাপে যুক্ত হন। কলেজে ভর্তির সময়ে বঙ্গভঙ্গের বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার কারণে গ্রেফতার ও কারারুদ্ধ হন। ঐ বৎসরেই তিনি কলকাতায় অনুষ্ঠিত "শিবাজী উৎসবে" হন। তিনি ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার যাদবপুরে জাতীয় শিক্ষা পরিষদে যোগ দেন। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস, যুগান্তর দল ও স্বরাজ্য পার্টির নেতাদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। ভারতের বাইরে বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী বিপ্লবীদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের উদ্দেশ্যে তিনি ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে প্রথমে আমেরিকায় যান, কিন্তু অর্থের অভাবে ইউরোপ হতে ফিরে আসেন। পরে অবশ্য সিঙ্গাপুর হয়ে আমেরিকা যান এবং ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে ফেরার সময় ইন্দোনেশিয়ায় গ্রেফতার হন। ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের স্বরাজ্য দলে যোগ দেন। এর কিছুদিন পর তিনি জাতীয় কংগ্রেসের বাংলা শাখার সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ১৮ই এপ্রিল চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনের অভিযোগে দীর্ঘদিন কারারুদ্ধ থাকেন। ভারত ছাড়ো আন্দোলনেও তাকে কারাবরণ করতে হয়। তিনি ধর্মের ভিত্তিতে দেশবিভাগের পক্ষপাতী ছিলেন না। দেশ স্বাধীনতার পর তিনি পূর্ববঙ্গে (বর্তমানে বাংলাদেশে) নেলী সেনগুপ্তের সঙ্গে একযোগে কাজ করেছেন।[১][২]
রাজনীতি
সম্পাদনাপশ্চিমবঙ্গে ফিরে তিনি প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষের মন্ত্রী সভায় ও পরে বিধানচন্দ্র রায়ের মন্ত্রীসভায় যোগ দেন। আমৃত্যু তিনি সংসদীয় রাজনীতিতে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন অন্ততঃপক্ষে বিধানসভার নির্বাচিত সদস্য হিসাবে। দুবার নির্বাচনে পরাজিত হয়েছিলেন। একবার শম্ভু ঘোষের কাছে। কিন্ত ১৯৭১ ও ১৯৭২ এর নির্বাচনে তিনি জয়যুক্ত হন চুঁচুড়া বিধানসভা কেন্দ্র থেকে। তিনি একাধারে সি এ বি ও আই এফ এর সভাপতির দায়িত্ব ভার সামলে ছিলেন। তিনি Nutrition Board এর সভাপতি হিসেবেও দীর্ঘ সময়ে কর্মরত ছিলেন। তিনি ছিলেন সৌমেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঘনিষ্ট সুহৃদ।
মৃত্যু
সম্পাদনাভূপতি মজুমদার ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দের ২৭শে মার্চ ৮৩ বৎসর বয়সে কলকাতায় প্রয়াত হন।
। ভূপতি মজুমদার (১ জানুয়ারি, ১৮৯০―২৩ মার্চ, ১৯৭৩) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনেবাঘা যতীনের অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষিত অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং পরবর্তীতে স্বাধীনতোত্তর কালের এক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।[১]
সম্পাদনাভূপতি মজুমদার
সম্পাদনাভূপতি মজুমদার.jpg
সম্পাদনাজন্ম
সম্পাদনা১ জানুয়ারি ১৮৯০
সম্পাদনাগুপ্তিপাড়া হুগলি বৃটিশ ভারত (বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ)
সম্পাদনামৃত্যু
সম্পাদনা২৭ মার্চ ১৯৭৩ (বয়স ৮৩)
সম্পাদনাকলকাতা পশ্চিমবঙ্গ ভারত
সম্পাদনাজাতীয়তা
সম্পাদনাভারতীয়
সম্পাদনাপরিচিতির কারণ
সম্পাদনাভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ও শিক্ষাবিদ
সম্পাদনাজন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাসম্পাদনা
সম্পাদনাভূপতি মজুমদারের জন্ম ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দের ১লা জানুয়ারি ব্রিটিশ ভারতের অধুনা পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার গুপ্তিপাড়ায়। তার পিতার নাম নীলমাধব মজুমদার। তিনি বাল্যশিক্ষা লাভ করেন তার মায়ের কাছ থেকে। ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে হুগলি কলেজে ভর্তি হন এবং আইএসসি ও বিএ পাস করেন।
সম্পাদনাবিপ্লবী ক্রিয়াকলাপ
সম্পাদনাসম্পাদনা
সম্পাদনাঅতি অল্প বয়সেই ভূপতি মজুমদার বিপ্লবী যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের কাছে অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষা নেন এবং বিপ্লবী ক্রিয়াকলাপে যুক্ত হন। কলেজে ভর্তির সময়ে বঙ্গভঙ্গের বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার কারণে গ্রেফতার ও কারারুদ্ধ হন। ঐ বৎসরেই তিনি কলকাতায় অনুষ্ঠিত "শিবাজী উৎসবে" হন। তিনি ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার যাদবপুরে জাতীয় শিক্ষা পরিষদে যোগ দেন। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস, যুগান্তর দল ও স্বরাজ্য পার্টির নেতাদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। ভারতের বাইরে বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী বিপ্লবীদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের উদ্দেশ্যে তিনি ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে প্রথমে আমেরিকায় যান, কিন্তু অর্থের অভাবে ইউরোপ হতে ফিরে আসেন। পরে অবশ্য সিঙ্গাপুর হয়ে আমেরিকা যান এবং ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে ফেরার সময় ইন্দোনেশিয়ায় গ্রেফতার হন। ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের স্বরাজ্য দলে যোগ দেন। এর কিছুদিন পর তিনি জাতীয় কংগ্রেসের বাংলা শাখার সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ১৮ই এপ্রিল চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনের অভিযোগে দীর্ঘদিন কারারুদ্ধ থাকেন। ভারত ছাড়ো আন্দোলনেও তাকে কারাবরণ করতে হয়। তিনি ধর্মের ভিত্তিতে দেশবিভাগের পক্ষপাতী ছিলেন না। দেশ স্বাধীনতার পর তিনি পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমানে বাংলাদেশে) নেলী সেনগুপ্তের সঙ্গে একযোগে কাজ করেছেন।[১][২]
সম্পাদনারাজনীতি
সম্পাদনাসম্পাদনা
সম্পাদনাপশ্চিমবঙ্গে ফিরে তিনি প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষের মন্ত্রী সভায় ও পরে বিধানচন্দ্র রায়ের মন্ত্রীসভায় যোগ দেন। পরবর্তীতে দু'বার নির্বাচনে পরাজয় বরণ করেন তবে পুনরায় জয়লাভ করে বিধানসভার সদস্য হন।এবং আমৃত্যু বিধানসভার সদস্য ছিলেন। ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দ হতে দীর্ঘ দশ বৎসর তিনি জাতীয় শিক্ষা পরিষদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং শেষের দিকে সভাপতি ছিলেন। সুবক্তা এবং সংগীত রচয়িতা হিসেবে তার পরিচিতি ছিল। অকৃতদার এই বিপ্লবী কর্মীর প্রায়শই বেদান্ত মঠে যাতায়াত ছিল। সৌমেন্দ্র নাথ ঠাকুরের সাথে গভীর হৃদ্যতা ছিল ওঁর।
সম্পাদনামৃত্যু
সম্পাদনাসম্পাদনা
সম্পাদনাভূপতি মজুমদার ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দের ২৭শে মার্চ ৮৩ বৎসর বয়সে কলকাতায় প্রয়াত হন।
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬ পৃষ্ঠা ৫২২, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
- ↑ Marxist Indiana, An Encyclopedia of Freedom Fighters of India, Item no. 503।