ব্যাকটেরিয়াবিজ্ঞান
ব্যাকটেরিওলজি হল জীববিজ্ঞানের একটি শাখা এবং বিশেষত্ব যেখানে অঙ্গসংস্থানবিদ্যা, বাস্তুসংস্থান, ব্যাকটেরিয়ার জেনেটিক্স ও প্রাণরসায়ন সহ এসবের সাথে সম্পর্কিত আরও অন্যান্য বিষয় নিয়ে অধ্যয়ন করা হয়। মাইক্রোবায়োলজির এই ভাগে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ব্যাকটেরিয়া প্রজাতির শনাক্তকরণ, শ্রেণিবিন্যাস এবং বৈশিষ্ট্য। [১] ব্যাকটেরিয়া ছাড়াও প্রোটোজোয়া, ছত্রাক ও ভাইরাস জাতীয় অণুজীবের সাথে চিন্তাভাবনা এবং কাজের মিল থাকার কারণে, ব্যাকটেরিওলজির ক্ষেত্র মাইক্রোবায়োলজি হিসেবে প্রসারিত হওয়ার প্রবণতা দেখা দিয়েছে। [২] আগে নাম দুটো প্রায়শই অদলবদল করে ব্যবহৃত হত। [৩] তবে যাইহোক, ব্যাকটেরিওলজিকে একটি পৃথক বিজ্ঞান হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা যেতে পারে।
ভূমিকা
সম্পাদনাব্যাকটেরিওলজি হল ব্যাকটেরিয়া এবং চিকিৎসাবিদ্যার সাথে তাদের সম্পর্ক নিয়ে অধ্যয়ন। উনিশ শতকে ওয়াইন এবং খাদ্যের পচন সম্পর্কিত যে উদ্বেগ জন্ম নেয়, তা পরীক্ষা করার জন্য জীবাণু তত্ত্ব (Germ Theory) প্রয়োগ করতে গিয়ে চিকিৎসকদের মাধ্যমে ব্যাকটেরিওলজির প্রবর্তন ঘটে। রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার শনাক্তকরণ ও বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গিয়ে প্যাথোজেনিক ব্যাকটেরিওলজির অগ্রগতি ঘটেছে। কখের স্বতঃসিদ্ধসমূহ (Koch's postulate) ব্যাকটেরিয়া এবং নির্দিষ্ট রোগের মধ্যে সম্পর্ক চিহ্নিত করতে ভূমিকা রেখেছিল। সেই থেকে, ব্যাকটেরিওলজিতে কার্যকর ভ্যাকসিনের মতো অনেক সফল অগ্রগতি হয়েছে, উদাহরণস্বরূপ, ডিপথেরিয়া টক্সয়েড এবং টিটেনাস টক্সয়েড । তবে কিছু ভ্যাকসিনও রয়েছে যেগুলো অতটা কার্যকর নয় এবং এসবের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে, উদাহরণস্বরূপ, টাইফয়েড ভ্যাকসিন । ব্যাকটেরিওলজি অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারেও সহায়তা করেছে।
ইতিহাস
সম্পাদনারোগের সাথে অণুজীবের সংযোগ আবিষ্কৃত হয় উনিশ শতকের দিকে, যখন জার্মান চিকিত্সক রবার্ট কখ চিকিৎসা ক্ষেত্রে অণুজীবের বিজ্ঞান চালু করেছিলেন। সংক্রামক রোগের এবং কোন রোগে গাঁজন প্রক্রিয়ার কারণ হিসেবে তিনি ব্যাকটেরিয়াকে চিহ্নিত করেছিলেন। ফরাসী বিজ্ঞানী লুই পাস্তুর ভ্যাকসিন তৈরির কৌশলের উন্নয়ন করেছিলেন। কখ এবং পাস্তর উভয়ই চিকিত্সা ব্যবস্থায় এন্টিসেপসিস (Antisepsis) উন্নত করতে ভূমিকা রেখেছিলেন। এটি জনস্বাস্থ্যের উপর এক বিরাট ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল এবং দেহ ও রোগ সম্বন্ধে আরও ভাল ধারণা দিয়েছিল। ১৮৭০-১৮৮৫ সালের দিকে, স্টেইন ব্যবহার করে এবং পুষ্টি-মাধ্যম প্লেটে (plates of nutrient medium) জীবের মিশ্রণ পৃথক করার পদ্ধতি দিয়ে ব্যাকটেরিওলজির আধুনিক কলা-কৌশলগুলো প্রবর্তিত হয়েছিল। ১৮৮০ এবং ১৮৮১ সালের মধ্যে লুই পাস্তুর প্রাণীতে ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগের বিরুদ্ধে দুটি সফল টিকা তৈরি করেছিলেন এবং শেষপর্যন্ত সার্থক হয়েছিলেন। ধীরে ধীরে ব্যাকটেরিয়ার গুরুত্ব স্বীকৃতি পেয়েছিল কারণ এটি ভ্যাকসিনের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ এবং রোগের চিকিত্সা বিষয়ক গবেষণার পথপ্রদর্শন করেছিল। কৃষি, সামুদ্রিক জীববিজ্ঞান, পানি দূষণ, ব্যাকটেরিয়ার জেনেটিক্স এবং জৈবপ্রযুক্তিতে ব্যাকটেরিওলজি বিকাশ করেছে এবং অধ্যয়ন করা যেতে পারে। [৪][৫][৬]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Wassenaar, T. M.। "Bacteriology: the study of bacteria"। www.mmgc.eu। ২৪ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০১১।
- ↑ Ward J. MacNeal; Herbert Upham Williams (১৯১৪)। Pathogenic micro-organisms; a text-book of microbiology for physicians and students of medicine। P. Blakiston's sons & co.। পৃষ্ঠা 1–। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০১১।
- ↑ Jeanne Stove Poindexter (৩০ নভেম্বর ১৯৮৬)। Methods and special applications in bacterial ecology। Springer। পৃষ্ঠা 87। আইএসবিএন 978-0-306-42346-8। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০১১।
- ↑ Kreuder‐Sonnen, Katharina(Aug 2016) History of Bacteriology. In: eLS. John Wiley & Sons Ltd, Chichester. http://www.els.net ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৩ মে ২০১১ তারিখে [doi: 10.1002/9780470015902.a0003073.pub2]
- ↑ Baron, Samuel. “Introduction to Bacteriology.” Medical Microbiology. 4th Edition., U.S. National Library of Medicine, 1 Jan. 1996, www.ncbi.nlm.nih.gov/books/NBK8120/. Retrieved 22 November 2017
- ↑ The Editors of Encyclopædia Britannica. “Bacteriology.” Encyclopædia Britannica, Encyclopædia Britannica, Inc., 7 Sept. 2010, www.britannica.com/science/bacteriology. Retrieved 22 November 2017
আরও পড়ুন
সম্পাদনা- McGrew, Roderick. Encyclopedia of Medical History (1985), brief history pp 25–30