ব্যবহারকারী:TRAYEE MAJUMDER/মধ্য-মহাসাগর শৈলশিরা
নীল সমুদ্রের জলরাশি সৌন্দর্যের এক উদ্ভাসিত নমুনা। পৃথিবীর এই জলরাশির মাঝে লুকিয়ে রয়েছে অনেক শৈলশিরা। তাদের মধ্যে অন্যতম মধ্য মহাসাগর শৈলশিরা। ভূপৃষ্ঠের প্রায় 23.1% ভূমি অধিকার করে আছে সামুদ্রিক শৈলশিরা। এই শৈলশিরা গুলি মহাসাগর এর মাঝখান দিয়ে বিস্তৃত।মধ্য আটলান্টিক শৈলশিরা সামুদ্রিক শৈলশিরা গুলির মধ্যে বৃহত্তম।এই শৈলশিরার কয়েকটি শৃঙ্গ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে একেবারে উপরে অবস্থান করছে। এদের মধ্যে আজোরে উল্লেখযোগ্য। অন্যান্য গিরিশৃঙ্গ গুলির মধ্যে ভারত মহাসাগরের কার্লসবার্গ , প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় শৈলশিরা, সুমেরু মহাসাগরের লোমোনোসভ শৈলশিরা, আন্টার্টিকা, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যবর্তী প্রশান্ত -আন্টার্টিকা শৈলশিরা সুবিস্তৃত। গভীর সমুদ্রের সমভূমির মাঝে সমুদ্রের মাঝ বরাবর নিরবচ্ছিন্নভাবে বিস্তৃত জলমগ্ন পাহাড় , আগ্নেয়গিরি ও শৈলশিরা কে মধ্য সামুদ্রিক শৈলশিরা বা মধ্য মহাসাগর শৈলশিরা বলে। বৈশিষ্ট্য:- ১) মধ্য-মহাসাগর শৈলশিরা গভীর সমুদ্র পর্যনকের ওপর পৃথিবীর দীর্ঘতম পর্বত শৃংখল সৃষ্টি করে ,যার দৈর্ঘ্য প্রায় 60 থেকে 65 কিমি। ২) এই সুবিশাল শৈলশিরা মহাসাগরের তলদেশে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জুড়ে অবস্থান করে। ৩) যদিও মধ্য সামুদ্রিক শৈলশিরা বলা হয়, সবসময় এরা কিন্তু সমুদ্রের মধ্যভাগ অধিকার করে না। ৪) প্রত্যেক মহাসাগরীয় শৈলশিরার শীর্ষদেশ উত্তল কিংবা গ্রস্ত উপত্যকার দ্বারা অধিকৃত। ৫) এটি এমন ভূতাত্ত্বিক শক্তি দ্বারা গঠিত যা কঠিন শিলাস্তরকে বিপরীত দিকে টেনেছে এবং ভেঙেছে। এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় চুতীকরন।
মধ্য সামুদ্রিক শৈলশিরা সৃষ্টির প্রধান কারণ:-
সামুদ্রিক পাত এর বিপরীত দিকে চলন যার ফলস্বরূপ সমুদ্র বক্ষের বিস্তৃতি। যখন দুটি মহা সামুদ্রিক পাত একে অপরের থেকে দূরে সরে যায়, তখন চ্যুতির সৃষ্টি হয়, উপরিস্থিত বোঝা কমে যায় এবং ঊর্ধ্ব গুরুমন্ডলের শিলা যায়। গলিত পদার্থ ম্যাগমার আকারে বিস্ফোরক গ্যাসের প্রভাবে উপরের দিকে উঠে আসে। সমুদ্রতলের আসার পরে জলের সংস্পর্শে শীতলীকরণ এবং কঠিনীভবন হয়। গঠনাত্মক পাত সীমানা বরাবর নতুন ব্যাসল্ট ভূত্বক তৈরি হয়। এই প্রক্রিয়ার পুনরায় সংগঠন বৃহৎ আকারের মধ্য সামুদ্রিক শৈলশিরা সৃষ্টি করে। মধ্য সামুদ্রিক শৈলশিরা অঞ্চলটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি এবং ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলকে নির্দেশ করে।
আটলান্টিক মহাসাগর এর মত ভারত মহাসাগরের মধ্যভাগ দিয়ে একটি শৈলশিরা উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত, 400 মিটার এর কম গভীর। এই শৈলশিরা মহাসাগরকে দুটি পর্যন কে ভাগ করেছে।
ভারতের মহীসোপানের বিস্তৃতি রূপে এই শৈলশিরা উত্তর দিক থেকে শুরু হয়েছে।এর উপর লাক্ষাদ্বীপ এবং মালদ্বীপ অবস্থিত। 320 কিলোমিটার চওড়া ও 2000 মিটার এর কম গভীর এই শৈলশিরা টি লক্ষদ্বীপ চ্যগোস শৈলশিরা নামে পরিচিত। পৃথিবী বিখ্যাত মধ্য আটলান্টিক শৈলশিরা আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে অবস্থিত যা
আটলান্টিক মহাসাগরের মধ্যে ভাগ দিয়ে
উত্তরা আইসল্যান্ড থেকে নিরক্ষরেখা হয়ে দক্ষিণের বুভেট দ্বীপ পর্যন্ত ইংরেজি এস (S) আকৃতির মত মধ্য আটলান্টিক শৈলশিরা উপকূল এর সমান্তরালে বিস্তৃত রয়েছে। শৈলশিরা অধিকাংশ অংশ সমুদ্র গভীর এ নিমজ্জিত হলেও কিছু অংশ সমুদ্রের তলের উপরে উঠে থাকে। উত্তর আটলান্টিক শৈলশিরা ডলফিন উচ্চভূমি নামে পরিচিত। অপরদিকে দক্ষিণ অংশটি চ্যালেঞ্জার উচ্চভূমি নামে পরিচিত।