বৈদ্যুতিক বাস
একটি বৈদ্যুতিক বাস এমন একটি বাস যা অভ্যন্তরীণ জ্বালানী ইঞ্জিন এর পরিবর্তে বৈদ্যুতিক মোটর ব্যবহার করে চলে। বৈদ্যুতিক বাস প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সঞ্চয় করতে পারে অথবা বহিরাগত উৎস থেকে ক্রমাগত গ্রহণ করতে পারে(ট্রলি)। বিদ্যুৎ সংরক্ষণের বেশিরভাগ বাস হলো ব্যাটারি বৈদ্যুতিক বাস, যেখানে বৈদ্যুতিক মোটর একটি ব্যাটারি প্যাক থেকে শক্তি পায়, যদিও অন্যান্য স্টোরেজ মোড যেমন ফ্লাইহুলের শক্তি কাজে লাগিয়ে চালিত গাইরোবাস বিদ্যমান।
যখন বিদ্যুৎ বোর্ডে সংরক্ষণ করা হয় না, তখন এটি বাইরের শক্তির উৎসের সাথে সংযোগের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়৷ উদাহরণস্বরূপ, ওভারহেড তারের মাধ্যমে যেমন ট্রলিবাস, বা ভূ-স্তরের পাওয়ার সাপ্লাই, বা মাধ্যমে ইন্ডাকটিভ চার্জিং।
২০১৯ পর্যন্ত বিশ্বের ৯৯.৯% বৈদ্যুতিক বাস চীনে ছাড়া হয়েছে, যার সংখ্যা ৪,২১,০০০, যা চীনের মোট বাস সংখ্যার ১৭%।[১] ২০২১ এ চীনে বিশ্বের ৯৮% বৈদ্যুতিক বাস ছিল এবং ইউরোপে এর সংখ্যা ৮,৫০০ হয়েছে।[২]
মূলনীতি
সম্পাদনাব্যাটারি
সম্পাদনাবর্তমানে বৈদ্যুতিক বাসের মধ্যে ব্যাটারি চালিত বৈদ্যুতিক বাস সবচেয়ে জনপ্রিয়। এই বাসগুলো বাসে বিদ্যমান ব্যাটারিতে সঞ্চিত বিদ্যুৎ দিয়ে চালিত হয়। ২০১৮-এর হিসাব অনুযায়ী[হালনাগাদ], বৈদ্যুতিক বাসগুলো এক চার্জে ২৮০ কিমি পর্যন্ত যেতে পারে, তবে প্রতিকূল তাপমাত্রা এবং পাহাড় এই দূরত্বে প্রভাব ফেলতে পারে।[৩] এই বাসগুলো কম দূরত্বে যেতে পারে বলে সাধারণত তা শহরের অভ্যন্তরে ব্যবহার করা হয়।
শহরে প্রচুর পরিমাণ ত্বরণ ও ব্রেক করা হয়। যে কারণে বৈদ্যুতিক বাস, ডিজেল বাসের চেয়ে ভালো; কেননা, বৈদ্যুতিক বাস ব্রেকের গতিশক্তি ব্যাটারিতে শোষণ করতে পারে যাতে ব্রেক ভালো থাকে। বৈদ্যুতিক বাসের ব্যবহার শহর এলাকায় বায়ুদূষণ ও শব্দদূষণ কমায়(ডিজেল বাসের তুলনায়)।[৪]
শহর এলাকায় পরিচালনা করতে বাসের খালি এবং পূর্ণ অবস্থায় ভার কমাতে হয়। এজন্য এই বাসগুলো অ্যালুমিনিয়াম দ্বারা তৈরি করা হয়। মিশ্র এবং অন্যান্য পদার্থ দ্বারা প্যানেল ও অন্য জিনিস বানানো যায়। বৈদ্যুতিক বাসগুলো হালকা হওয়ায় রাস্তার উপর চাপ কম পরে, জ্বালানি খরচ কমে এবং অধিক দূরত্ব চলতে পারে।[৫]
বাংলাদেশে বৈদ্যুতিক বাস
সম্পাদনাবাংলাদেশে বিআরটি প্রকল্পে প্রথম ২০.২ কিমি এর বৃহত্তর পরিসরে বৈদ্যুতিক বাস চালুর কথা থাকলেও প্রকল্প পরিচালকরা তা থেকে সরে আসে নভেম্বর ২০২২ এ এবং ডিজেল চালিত বাস কিনার কথা বলে।[৬] প্রকল্পের সাথে সংযুক্ত ব্যক্তি ও পরিবেশবাদীরা এর সমালোচনা করে এবং বলে এটা খরচ বৃদ্ধি করবে, এবং কার্বন নিঃসরণ বাড়াবে, ঝামেলাও বাড়াবে। ডিজেল বাসের দরজা বাম দিকে থাকে এবং বৈদ্যুতিক বাস বেশিরভাগ দরজা ডানে থাকে আর প্রকল্পটিতে শুধু ডান পাশে নামার রাস্তা থাকায় ডিজেল বাস কেনাটা অযৌক্তিক মনে করা হচ্ছে।
২০২৩ সালের মে মাসে, ঢাকা নগর পরিবহনে ১০০টি বৈদ্যুতিক বাস যুক্ত হবে বলে জানায় ঢাকা দক্ষিণের তৎকালীন নগরপ্রধান।[৭]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Electric Buses Are Hurting the Oil Industry"। Bloomberg.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৪-২৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২৭।
- ↑ "Electric bus, main fleets and projects around the world"। Sustainable Bus (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-০৭-১২। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২৭।
- ↑ "The Verdict's Still Out on Battery-Electric Buses"। Bloomberg.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০১-১৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-৩১।
- ↑ Keegan, Matthew (২০১৮-১২-১২)। "Shenzhen's silent revolution: world's first fully electric bus fleet quietens Chinese megacity"। The Guardian (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0261-3077। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-৩১।
- ↑ Wang, Puyi; Bai, Yingchun; Fu, Chuanliang; Lin, Cheng (২০২৩-০৩-০৬)। "Lightweight design of an electric bus body structure with analytical target cascading"। Frontiers of Mechanical Engineering (ইংরেজি ভাষায়)। 18 (1): 2। আইএসএসএন 2095-0241। ডিওআই:10.1007/s11465-022-0718-y।
- ↑ "BRT's move to ditch e-buses for diesel raises eyebrows"। unb.com.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২৭।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব (২০২৩-০৫-০৯)। "ঢাকা নগর পরিবহনে যুক্ত হচ্ছে ১০০টি বৈদ্যুতিক বাস"। Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-৩১।