বৈজ্ঞানিক ন্যায়পরায়ণতা
বৈজ্ঞানিক ন্যায়পরায়ণতা (Scientific integrity) বলতে বৈজ্ঞানিক গবেষকদের পেশাদারি কর্ম সংক্রান্ত "শ্রেষ্ঠ চর্চা" নির্দেশক কিছু মূল্যবোধ ও নিয়মের সমষ্টিকে বোঝায়, যেটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় কঠোর নিয়মানুবর্তিতা ও সততার প্রতিশ্রুতি দেয়। এই ধারণাটি ২০০৭ সালে ওইসিডি-র (অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা) একটি প্রতিবেদনে প্রথম উল্লেখ করা হয়।[১] বৈজ্ঞানিক গবেষণায় পুনরাবৃত্তি সংকট ও বৈজ্ঞানিক অসদাচরণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রেক্ষাপটে এই ধারণাটির উদ্ভব হয়। একে বৈজ্ঞানিক সততা, বৈজ্ঞানিক সাধুতা, বৈজ্ঞানিক ন্যায়নিষ্ঠা, ইত্যাদি নামেও ডাকা হতে পারে।
মার্কিন কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত একটি সংজ্ঞা অনুযায়ী বৈজ্ঞানিক ন্যায়পরায়ণতা হল "এমন একটি পরিস্থিতি যা বৈজ্ঞানিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা, সেগুলির প্রতিবেদন ও সেগুলির ফলাফল প্রয়োগ করার ব্যাপারে পেশাদারি মূল্যবোধ ও চর্চার প্রতি নিষ্ঠার ফলাফল, এবং যার ফলে গবেষণার বস্তুনিষ্ঠতা, স্পষ্টতা ও পুনরুৎপাদনযোগ্যতা নিশ্চিত হয় এবং পক্ষপাত, মিথ্যা, জালিয়াতি, কুম্ভীলকবৃত্তি, অনুপযুক্ত প্রভাববিস্তার, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, বিবাচন ও পদ্ধতিগত ও তথ্যগত নিরাপত্তার অপর্যাপ্ততা থেকে মুক্ত থাকা যায়।"[২]
উদ্যোগসমূহ
সম্পাদনা২০০৭ সালে ওইসিডি প্রকাশিত প্রতিবেদনে বৈজ্ঞানিক অসদাচরণ প্রতিরোধ ও বৈজ্ঞানিক ন্যায়পরায়ণতাকে উৎসাহ প্রদানের জন্য সেরা চর্চাগুলি সম্পর্কে লেখা হয়। এই ক্ষেত্রটির মূল পাঠ্যগুলি হল:
- গবেষকদের জন্য ইউরোপীয় সনদ (European Charter for Researchers) (২০০৫)
- গবেষণায় ন্যায়পরায়ণতা বিষয়ে সিঙ্গাপুর বিবৃতি (২০১০)[৩]
- সর্ব ইউরোপীয় অ্যাকাডেমিসমূহ (All European Academies, ALLEA) এবং ইউরোপীয় বিজ্ঞান ফাউন্ডেশনের (European Science Foundation, ESF) গবেষণায় ন্যায়পরায়ণতার জন্য ইউরোপীয় আচরণবিধি (২০১১, এবং ২০১৭ সালে সংশোধিত)[৪]).
ইউরোপে
সম্পাদনা২০১১ সালে প্রথম প্রকাশিত ও ২০১৭ সালে সংশোধিত গবেষণায় ন্যায়পরায়ণতার জন্য ইউরোপীয় আচরণবিধিতে (The European Code of Conduct for Research Integrity) চারটি মূলরেখা বরাবর বৈজ্ঞানিক ন্যায়পরায়ণতার ধারণাটি বিকাশসাধন করা হয়েছে :
- নির্ভরযোগ্যতা (Reliability): গবেষণার গুণমান ও পুনরুৎপাদনযোগ্যতার সাথে সংশ্লিষ্ট।
- সততা (Honesty): গবেষণার স্বচ্ছতা ও বস্তুনিষ্ঠতার সাথে সংশ্লিষ্ট।
- সম্মান (Respect): গবেষণার মানবিক, সাংস্কৃতিক ও বাস্তুবৈজ্ঞানিক পরিবেশের সাথে জড়িত।
- জবাবদিহিতা (Accountability): গবেষণা প্রকাশের ভবিষ্যৎ প্রভাবের সাথে জড়িত।
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Best Practices for Ensuring Scientific Integrity and Preventing Misconduct" (পিডিএফ)। Organisation for Economic Co-operation and Development (OECD)। ২০০৭।
- ↑ "Scientific Integrity and Research Misconduct", U.S. Department of Agriculture, সংগ্রহের তারিখ ৫ এপ্রিল ২০২৩
- ↑ "Singapore Statement on Research Integrity" (পিডিএফ)। ২০১০।
- ↑ "ALLEA publishes revised edition of The European Code of Conduct for Research Integrity"। All European Academies (ALLEA)। ২০১৭।