বেটি ডেভিস

মার্কিন অভিনেত্রী

বেটি ডেভিস (ইংরেজি: Bette Davis; /ˈbɛti/) নামে সুপরিচিত রুথ এলিজাবেথ ডেভিস (ইংরেজি: Ruth Elizabeth Davis; ৫ই এপ্রিল, ১৯০৮ - ৬ই অক্টোবর, ১৯৮৯) ছিলেন একজন মার্কিন অভিনেত্রী। হলিউডের ইতিহাসের অন্যতম সেরা অভিনেত্রী হিসেবে বিবেচিত[] ডেভিস অসহানুভূতিসম্পন্ন, বিদ্রুপাত্মক চরিত্রে কাজের ইচ্ছা ও সমসাময়িক অপরাধধর্মী মেলোড্রামা থেকে শুরু করে ঐতিহাসিক, উৎকণ্ঠা সমৃদ্ধ ভীতিপ্রদ ও হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্রে কাজের জন্য প্রসিদ্ধ। কিন্তু তিনি তার প্রণয়ধর্মী নাট্য চলচ্চিত্রগুলো দিয়ে বেশি সফল হয়েছেন।[]

বেটি ডেভিস
Bette Davis
১৯৩৩ সালে ডেভিস
জন্ম
রুথ এলিজাবেথ ডেভিস

(১৯০৮-০৪-০৫)৫ এপ্রিল ১৯০৮[]
মৃত্যু৬ অক্টোবর ১৯৮৯(1989-10-06) (বয়স ৮১)
সমাধিফরেস্ট লন - হলিউড হিলস সমাধি
পেশাঅভিনেত্রী
কর্মজীবন১৯২৯–১৯৮৯
দাম্পত্য সঙ্গীহারমন নেলসন (বি. ১৯৩২; বিচ্ছেদ. ১৯৩৮)
আর্থার ফার্নসওর্থ (বি. ১৯৪০; মৃ. ১৯৪৩)
উইলিয়াম গ্র্যান্ট শেরি (বি. ১৯৪৫; বিচ্ছেদ. ১৯৫০)
গ্যারি মেরিল (বি. ১৯৫০; বিচ্ছেদ. ১৯৬০)
সন্তান৩ (বারাবারা শেরি সহ)

কয়েকটি ব্রডওয়ে মঞ্চনাটকে অভিনয় করার পর ডেভিস ১৯৩০ সালে হলিউডে আসেন। ইউনিভার্সাল স্টুডিওজের হয়ে তার প্রথম দিকের চলচ্চিত্রগুলো সফলতা লাভ করে। তিনি ১৯৩২ সালে ওয়ার্নার ব্রস. স্টুডিওতে যোগদান করেন এবং কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে সমাদৃত হন এবং প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। ১৯৩৭ সালে তিনি ওয়ার্নার ব্রসের সাথে তার চুক্তি থেকে বের হয়ে যেতে চান। তিনি এই স্টুডিওর সাথে মামলাটি হেরে যান, কিন্তু এসময় থেকেই তার কর্মজীবনের উত্থান শুরু হয়। ১৯৪০-এর দশকের শেষ দিকে তিনি মার্কিন চলচ্চিত্র শিল্পের সবচেয়ে সফল প্রধান অভিনেত্রী হয়ে ওঠেন এবং তার প্রবল ও নিবিড় কৌশলের জন্য পরিচিতি লাভ করেন। ডেভিস পরিপূর্ণতা প্রিয় হিসেবে সুখ্যাতি অর্জন করেন এবং এজন্য তিনি খুবই ঝগড়াটে ও সহজে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হতেন। তাকে প্রায়শই স্টুডিও নির্বাহী ও চলচ্চিত্র পরিচালক, এমনকি তার সহশিল্পীদের সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হতেন। তার সরল ব্যবহার, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন বাচনভঙ্গি ও সর্বক্ষন সিগারেটে আসক্তি তাকে এমন এক ব্যক্তিত্বে পরিণত করে, যা প্রায়ই অন্যরা অনুকরণ করত।[]

ডেভিস হলিউড ক্যান্টিনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও একাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের প্রথম নারী সভাপতি। তিনি দুবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জন্য একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন এবং প্রথম ব্যক্তি হিসেবে অভিনয়ের জন্য দশটি একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। তিনি প্রথম নারী হিসেবে আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউট থেকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার লাভ করেন। তিনি চারবার বিয়ে করেন, একবার বিধবা হন ও বাকি তিনটি বিয়েতে তার বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তিনি একক অভিভাবক হিসেবে তার সন্তানদের বড় করেন। শেষ জীবনে তিনি দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন, তবুও তিনি তার অভিনয় চালিয়ে যান। স্তন ক্যান্সারে মৃত্যুর কিছুদিন পূর্ব পর্যন্ত তার দীর্ঘ কর্মজীবনে ১০০ চলচ্চিত্র, টেলিভিশন ও মঞ্চনাটকে অভিনয় করেন। ১৯৯৯ সালে আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউট তাদের ধ্রুপদী হলিউড চলচ্চিত্র শিল্পের সেরা নারী তারকার তালিকায় তাকে ক্যাথরিন হেপবার্নের পর দ্বিতীয় স্থান প্রদান করে।[]

প্রারম্ভিক জীবন

সম্পাদনা

রুথ এলিজাবেথ ডেভিস ১৯০৮ সালের ৫ই এপ্রিল ম্যাসাচুসেট্‌সের লোওয়েলে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে তাকে বেটি নামে ডাকা হত, যা তিনি তার পর্দা নাম হিসেবে গ্রহণ করেন। তার পিতা হার্লো মরেল ডেভিস (১৮৮৫-১৯৩৮) ছিলেন মাইনের অগাস্টার প্যাটেন্ট অ্যাটর্নি এবং মাতা রুথ অগাস্টা (জন্ম: ফ্যাভর, ১৮৮৫-১৯৬১)। বেটির ছোট বোনের নাম বারবারা হ্যারিয়েট।

১৯১৫ সালে ডেভিসের পিতামাতা আলাদা হয়ে যান। বেটি বার্কশায়ারের লানেসবরায় ক্রেস্টালবান নামক একটি স্পার্টান বোর্ডিং স্কুলে পড়াশুনা করেন।[] ১৯২১ সালে রুথ ডেভিস তার কন্যাকে নিয়ে নিউ ইয়র্ক সিটিতে চলে যান। সেখানে তিনি আলকচিত্রী হিসেবে কাজ করেন। বেটি অনরে দ্য বালজাকের ফরাসি ভাষার উপন্যাস লা কুজিন বেত (La Cousine Bette)-এর বানান অনুসারে তার নামের বানান "Betty" থেকে "Bette"-তে পরিবর্তন করেন।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. এড সিকভ (৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৮)। Dark Victory: The Life of Bette Davis (ইংরেজি ভাষায়)। হেনরি হল্ট অ্যান্ড কোম্পানি। পৃষ্ঠা ১১। আইএসবিএন 978-0-8050-8863-2 
  2. "Bette Davis Biography" (ইংরেজি ভাষায়)। notablebiographies। 
  3. মিশেল বোরজোন, সুজান (১৯৯৮)। Encyclopedia of World Biography (ইংরেজি ভাষায়)। গেল। পৃষ্ঠা ১১৯। আইএসবিএন 0-7876-2221-4 
  4. জাং, ই. আলেক্স। "Susan Sarandon on Feud and Why Everyone Gets So Mad at Her About Politics"ভালচার (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৫ এপ্রিল ২০১৮ 
  5. "AFI's 100 Years, 100 Stars, Greatest Film Star Legends" (ইংরেজি ভাষায়)। আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউট। আগস্ট ২২, ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ এপ্রিল ২০১৮ 
  6. সিকভ (২০০৭), পৃ. ১৪–১৫।
  7. চ্যান্ডলার (২০০৬), পৃ. ৩৪।

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা
অলাভজনক সংস্থার অবস্থান
পূর্বসূরী
ওয়াল্টার ওয়েঙ্গার
একাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের সভাপতি
১৯৪১
উত্তরসূরী
ওয়াল্টার ওয়েঙ্গার