বেগম মাহমুদা সেলিম খান
বেগম মাহমুদা সেলিম খান (মে ১৯১৩- জুন ২০০৭) একজন পাকিস্তানি রাজনীতিবিদ ও সমাজ সেবি। তিনি আইয়ুব খানের শাসনামলে পশ্চিম পাকিস্তানের শিক্ষা মন্ত্রী ছিলেন।[১]
প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনাবেগম সেলিম খান ১৯১৩ সালে ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাবের অমৃতসরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ছিলেন ইউনিয়নবাদী দলের প্রখ্যাত নেতা, ওয়াহের স্যার সিকান্দার হায়াত খানের বড় মেয়ে। তার মা বেগম জুবায়দা খানম ছিলেন হায়াত খানের প্রথম স্ত্রী। ১৯১৯ সালে তার মায়ের মৃত্যুর পরে, তিনি তার চাচীর নিকট বড় হন এবং লাহোরের আলিগড় স্কুল ফর মুসলিম উইমেন এবং কুইন মেরি কলেজে পড়াশোনা করেন।[২]
১৯৩৪ সালে তিনি তালোকর হরিপুরের সরকারি কর্মচারী আব্দুস সেলিম খানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, যিনি অভিজাত আব্দুল মজিদ খান তারনের জ্যেষ্ঠ পুত্র ছিলেন। তার স্বামী ব্রিটিশ ভারত সরকারের দায়িত্ব পালন করেন এবং পরবর্তীতে ১৯৪৭ সালের পর থেকে নবগঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রের কূটনৈতিক দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি তার বিবাহিত জীবনের প্রাথমিক বছরগুলোতে পরিবারের দেখাশোনা এবং সন্তানদের লালন-পালনের উপর মনোযোগ প্রদান করেন। পরে তিনি ধীরে ধীরে, কল্যাণ কার্যক্রমের মাধ্যমে জনগণকে সাহায্য করার জন্য নিজেকে জড়িত করেন, এবং সামাজিকভাবে আরো সক্রিয় হন।
পরবর্তী জীবন
সম্পাদনা১৯৫৭ সালে স্বামীর মৃত্যুর পর, বেগম সেলিম খান পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদ শহরে চলে আসেন। এখানে তিনি বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন সামাজিক ও দাতব্য কাজে নিজেকে জড়িয়ে রাখেন। লেডি ভিকার উন নিসা নুন, বেগম জারি সরফরাজ, বেগম কুলসুম সাইফুল্লাহ খান ড. আতিয়া ইনাতুল্লাহ এবং বেগম শায়েস্তা সুহরাওয়ার্দি ইকরামুল্লাহ প্রভৃতি বিখ্যাত নারী সমাজকর্মীদের সাথে তিনি ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেন। এছাড়াও তিনি পাকিস্তানের পরিবার পরিকল্পনা সমিতি, পাকিস্তান রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, লোক বীরসা জাদুঘর, পাকিস্তানের ন্যাশনাল ক্রাফটস কাউন্সিল, এন্টি টিবি অ্যাসোসিয়েশন অফ পাকিস্তান, এসওএস চিলড্রেনভিলেজ প্রভৃতি সংগঠনের প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৬০-এর দশকে, তিনি জেনারেল আইয়ুব খান সরকারের সময় পশ্চিম পাকিস্তানের মন্ত্রিসভায় প্রথমবারের মতো প্রাদেশিক মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। তবে রাজনীতিতে তাঁর অবস্থান সংক্ষিপ্ত ছিল এবং তিনি তার কল্যাণমূলক কার্যক্রম পুনরায় শুরু করেন যা তিনি তাঁর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অব্যাহত রেখেছিলেন।
তিনি পাকিস্তানের জাতীয় যুব পরিষদের পৃষ্ঠপোষক-সভাপতি ছিলেন এবং পাকিস্তানি তরুণদের মধ্যে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড প্রচারের জন্য তিনি ১৯৮০ সালে ইতালির অ্যাডিলেড রিস্তোরি পুরস্কার লাভ করেন। তিনি সমাজকল্যাণ মূলক কর্মকাণ্ডের জন্য আরও কয়েকটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেন।
বাগান করার প্রতি তার আগ্রহ ছিল এবং তিন ফুল খুব ভালবাসতেন। ২০০৭ সালে ৯৪ বছর বয়সে তিনি পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে তার বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন।[৩]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ https://www.thenews.com.pk/print/26208-multan-recover-after-losing-four-early-wickets
- ↑ Shaukat Hayat Khan, "The Nation that Lost its Soul: Memoirs" Lahore: Jang Publishers, 1995, pp. 10-11
- ↑ News obituary, নাওয়াই ওয়াক্ত, ইসলামাবাদ, ১৮ জুন ২০০৭